ফারুকির আগুনঝরা বোলিংয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ
সারাদিন পড়ালেখা করা হলো তিন স্পিনার রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে। কিন্তু পরীক্ষায় এলো বাঁ-হাতি পেসার ফজল হক ফারুকির নাম। সেই পরীক্ষায় ধরা বাংলাদেশের টপঅর্ডারে। এ তরুণের আগুনে বোলিংয়ে মাত্র ৮ ওভারের মধ্যেই সাজঘরে ফিরে গেছেন ৫ ব্যাটার।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে পেসারদের নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষকে ২১৫ রানেই বেঁধে ফেলেছে বাংলাদেশ। এই মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে এখন অকূল পাথারে টাইগাররা। বাঁ-হাতি পেস বোলিংয়ে ফারুকি একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।
অথচ ফারুকির করার প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক শুরুই করেছিলেন তামিম ইকবাল। নিজের পরের ওভারেই ঘুরে দাঁড়ান ২১ বছর বয়সী এ পেসার। সেই ওভারের তৃতীয় বলে কট বিহাইন্ড হন লিটন দাস (৮)। শেষ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অগ্রজ ওপেনার তামিম ইকবাল (১)।
এ দুই উইকেটের একটিতেও আম্পায়ার প্রথমে আঙুল তোলেননি। তবে দুইবারই রিভিউ নিয়ে উইকেট তুলে নেয় আফগানরা। মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করে হালকা ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগে লিটনের। আর প্রায় একই লেন্থ থেকে স্ট্যাম্পের লাইনে থাকা বল গিয়ে আঘাত হানে তামিমের প্যাডে।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটানোর মিশনে নেমে বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম (৩)। ফারুকির গুড লেন্থে পিচ করা ডেলিভারি ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। বল আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি মুশফিক, উল্টো খোয়া যায় একটি রিভিউ।
একই ওভারের শেষ বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হয়ে যান অভিষিক্ত ইয়াসির আলি রাব্বি (০)। এই মাঠেই নিজের টেস্ট অভিষেকে প্রায় একইভাবে বোল্ড হয়েছিলেন ইয়াসির। তার বিদায়ে মাত্র ১৮ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দায়িত্ব বর্তায় সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাঁধে। কিন্তু হতাশ করেন সাকিব।
মুজিব উর রহমানের করা অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ড হন সাকিব। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে প্লেইড হন ১৫ বলে ১০ রান করা সাকিব। তার বিদায়ে পাওয়ার প্লে'র মধ্যেই পতন ঘটে ৫ উইকেটের। প্রথম দশ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩৯ রান।
অবশ্য এটিই রেকর্ড নয়। পাওয়ার প্লে'তে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট হারানোর রেকর্ড রয়েছে খোদ আফগানিস্তানেরই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মাত্র ১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ওভারেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। সেদিন আফগানরা অলআউট হয় ৫৮ রানে।
তবে বাংলাদেশের জন্য এটিই রেকর্ড। এর আগে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছয় ওভারের মধ্যে মাত্র ১৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা। আজ ৮ ওভারের মধ্যে ২৮ রানে পড়লো ৫ উইকেট।
এসএএস/আইএইচএস/