এবার খালেদের সঙ্গে ‘নাসুম কাণ্ড’ মুশফিকের
অনুশীলন বা খেলার মাঠে তার আত্মনিবেদন যেমন অনেক বেশি, তেমনি মুশফিকুর রহিমের আবেগ-উত্তেজনাও কিন্তু চরম। দলের সতীর্থ খেলোয়াড় কেউ ভুল করলে, খুব বাজে ফিল্ডিং করলে কিংবা সহজ ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হলে মুশফিকুর তা সহজভাবে নিতে পারেন না। খুব চটে যান, রেগেমেগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন।
এমন নজির আছে ভুরি ভুরি। আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্সের মধ্যকার ম্যাচেও তা-ই হলো। নিজ দলের খেলোয়াড় সৈয়দ খালেদ আহমেদের ওপর প্রকাশ্যেই নিজের রাগ ঝাড়লেন খুলনার অধিনায়ক মুশফিক। যা জন্ম দিয়েছে নানান আলোচনার।
ম্যাচে টস হেরে মুশফিকের আমন্ত্রণে আগে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে রুয়েল মিয়ার বলে পুল করেছিলেন লিটন। ফাইন লেগে বেশ খানিকটা দৌড়ে বলের কাছাকাছি পৌঁছেও সেটি তালুতে রাখতে পারেননি খালেদ।
তাৎক্ষণিকভাবে তেমন কোন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি মুশফিক। সেই ওভারের ঠিক পরের বলেই ছক্কা হাঁকান লিটন। এতে যেনো রাগ আরও বেড়ে যায় মুশফিকের। কিন্তু তখনও সেটি ভেতরে-ভেতরেই রাখেন খুলনার অধিনায়ক।
থিসারা পেরেরার করা পরের ওভারে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচে লিটনের ১৭ বলে ৪১ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটান মুশফিক। তখন বাকি সবার সঙ্গে খালেদও ছুটে আসেন উদযাপন করতে। আগের ওভারে নিজের ভুলের কথা বুঝতে পেরে মুশফিককে জড়িয়েও ধরেন খালেদ।
কিন্তু তখনও যেনো রাগ কমেনি খুলনার অধিনায়কের। তাই থিসারা পেরেরা, আন্দ্রে ফ্লেচারদের সামনেই ধাক্কা দিয়ে খালেদকে সরিয়ে দেন মুশফিক। তখন খানিক বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়তে হয় ডানহাতি পেসার খালেদকে।
মাঠের মধ্যেই সতীর্থ খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন রূঢ় আচরণ এবারই প্রথম নয় মুশফিকের। সবশেষ ২০২০ সালের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বেক্সিমকো ঢাকার হয়ে খেলার সময় তার রাগের মুখে পড়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সেই ম্যাচের ১৩তম ওভারে একবার ও ১৭তম ওভারে আরেকবার নাসুমকে রীতিমতো মারতে উদ্যত হন মুশফিক। তবু দুইবার শেষ মুহূর্তে নিজেকে সংযত করেন তিনি। সেই ঘটনার পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এ অভিজ্ঞ তারকা ক্রিকেটার।
ভুল করা মানুষের স্বভাব। মাঠে ক্রিকেটাররা প্রায়ই ভুল করেন, ক্যাচও ফেলেন। রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া হয়, ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটও হয়। আবার বাজে বলে আলগা শট খেলে কেউ আউটও হন। এগুলো আসলে খেলারই অংশ।
তা নিয়ে অধিনায়ক, কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের হতাশা থাকতেই পারে, থাকাই স্বাভাবিক। এগুলো নিয়ে টিম মিটিংয়ে আলোচনা-পর্যালোচানা হয় হরহামেশা। অধিনায়ক হিসেবে মুশফিক ড্রেসিংরুমে কাউকে বকাঝকাও করতে পারেন।
কিন্তু মাঠে একজন জুনিয়র ক্রিকেটারের ওপর প্রকাশ্যে রাগ দেখানো, ধাক্কা দেওয়া কিংবা বল ছুড়ে মারতে উদ্যত হওয়া বড্ড চোখে লাগে। মুশফিকুর রহিমের মত দেশবরেণ্য ক্রিকেটার যখন কোন ক্রিকেটারকে প্রকাশে বকাঝকা করেন তা দৃষ্টিকটু বৈকি।
এছাড়া এসব খেলা টিভতেও সরাসরি দেখানো হচ্ছে। বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক টিভির পর্দায় তা দেখছেন। এসব কাজ যে একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে বিশ্ব দরবারে, মুশফিক কি তা বোঝেন?
এআরবি/এসএএস/এএসএম