দেখে নিন, সুজনের চোখে বিপিএলে মাঠ মাতাবেন যারা

সমালোচক ও নিন্দুকরা বলেছেন এবার বিপিএল জমবে না, কারণ নামী ও দামি এবং ফর্মে থাকা ভিনদেশি তারকা কম। হ্যাঁ, বিপিএলের আগের আসরগুলোর তুলনায় নামী ও দামি তারকা এবার সত্যিই কম। একদিকে চলছে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ। অন্যদিকে আর কয়েকদিন পরই পর্দা উঠবে পাকিস্তানের পিএসএলের।
প্রায় একই সময় হবে বিপিএল, বিগ ব্যাশ এবং পিএসএল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বেশিরভাগ তারকাই ওই দুই আসরে অংশ নিচ্ছেন। তারপরও ক্রিস গেইল, ফাফ ডু প্লেসি, আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন, ডোয়াইন ব্রাভো আর মুজিব-উর রহমানসহ আরও নামি-দামি ভিনদেশি তারকা আছেন এবারের বিপিএলে। তাদের সামর্থ্য ও কার্যকরিতা প্রমাণিত। ধরেই নেয়া যায়, তারা সবাই এবারো নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখবেন।
এর বাইরে আছেন বাংলাদেশের ৫ শীর্ষ তারকা- মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম। তাদের সামর্থ্যও প্রমাণিত। অতীতে বারবার বহুবার এই পঞ্চপাণ্ডব জ্বলে উঠেছেন। মাঠে আলো ছড়িয়েছেন।
শুধু জাতীয় দলের হয়েই নয় বিপিএলেও সাকিব, মাশরাফি, তামিম, রিয়াদ এবং মুশফিকের নৈপূণ্যের দ্যুতিতে আলোকিত হয়েছে মাঠ। ভক্ত ও সমর্থকরা হয়েছেন পুলকিত, রোমাঞ্চিত ও মুগ্ধ। আর নিজ নিজ দলের সাফল্যও হয়েছে ত্বরান্বিত।
সর্বাধিক তিনবারের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মাশরাফি। সর্বাধিক ২ বারের বিপিএল সেরা সাকিব। সবচেয়ে বেশি রান মুশফিক আর তামিম ইকবালের। সর্বাধিক উইকেট শিকারী সাকিব। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু বিপিএল শিরোপা বিজয়ী দলের অধিনায়ক রিয়াদ।
কাজেই এবারো ওই পাঁচ শীর্ষ তারকার দিকে চোখ সবার। তাদের নৈপূণ্যের ওপর নির্ভর করবে ঢাকা (মাশরাফি, তামিম আর রিয়াদের দল), বরিশাল (সাকিব অধিনায়ক) এবং খুলনার (ধরেই নেয়া যায় মুশফিক অধিনায়ক) ভাগ্য।
লাখ ভক্তের আশা, এবারো ব্যাট এবং বল হাতে মাঠ মাতাবেন মাশরাফি, তামিম, সাকিব, রিয়াদ ও মুশফিক। ওপরে যাদের কথা বলা হলো তারাতো প্রমাণিত, পরীক্ষিত।
নতুনদের মধ্যে মাঠ মাতাতে পারেন কারা? ঢাকার এবারের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল অবশ্য ‘পঞ্চ পান্ডবের’ তিনজন- সাকিব, তামিম ও রিয়াদকে ধরে মোট ৫ জনের নাম বলেছেন।
বাবুল মনে করেন ওই তিন শীর্ষ তারকার বাইরে লিটন দাস আর নাজমুল হোসেন শান্তও এবার আলো ছড়াতে পারেন। তাদের ব্যাট শাসন করতে পারে প্রতিপক্ষ বোলারদের।
তবে ফরচুন বরিশাল কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন বলছেন ভিন্ন কথা। বরিশাল কোচের ব্যাখ্যা, সিনিয়র তামিম , রিয়াদ অবশ্যই অনেক ভাল পারফরমার। তাদের উজ্জ্বল আর সমৃদ্ধ ট্র্যাক রেকর্ডই বলে দেয় তারা কতটা সফল ও প্রমাণিত।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপিএলে নিজ দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছে মাশরাফি, তামিম আর রিয়াদ। আর সাকিবের কথা নতুন করে কিই বা বলার আছে? টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সে ওয়ান অফ দ্য ওয়ার্ল্ড বেস্ট। কাজেই দেশের শীর্ষ তারকাদের নিয়ে নতুন করে আসলে কথা বলার কিছু নেই। এরা টপ লেভেলে নিজেদের মেধা যোগ্যতা আর সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। অনেক ভাল খেলেছে। রেকর্ড, পরিসংখ্যান তাই জানাচ্ছে।
সুজন বরং নতুনদের কথাই ভাবতে চান বেশি। তার চোখে এবারের বিপিএল মাতাতে পারেন কয়েকজন প্রতিভাবান তরুণ। সেই তালিকায় সবার আগে সুজনের মুখে উঠে এসেছে নাজমুল হোসেন শান্তর নাম। তারপর পরই লিটন দাসের কথা বলেছেন সুজন।
এর বাইরে মোস্তাফিজুর রহমান, নুরুল হাসান সোহান, শুভাগত হোম চৌধুরী, পারভেজ ইমন এবং তৌহিদ হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বরিশাল কোচ।
সুজনের ব্যাখ্যা, ‘নাজমুল হোসেন শান্তকে আমি অলওয়েজ হাই রেট করি। যদিও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ন্যাশনাল টিমের হয়ে সে সেভাবে খেলেনি; কিন্তু যদি শেষ দুটি বিপিএল দেখেন, তাহলে দেখবেন প্রায় দেড়শো স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছে শান্ত। সেঞ্চুরিও হাকিয়েছে। বড় রান করেছে। শান্ত ইজ এ ভেরি গুড প্লেয়ার। এবং আমার আশা এবারের বিপিএলে তার গুড প্রসপেক্ট আছে।
সঙ্গে লিটন দাসও আছে। লিটনের হিটিং অ্যাবিলিটি ভাল। সব ধরনের শটস খেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে। আমার বিশ্বাস এবারের বিপিএলে জ্বলে উঠবে লিটনের ব্যাটও।
মোস্তাফিজের কথাও বিশেষভাবে বললেন সুজন। এবারের বিপিএলে দেশি বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজের ভাল করার সম্ভাবনা বেশি বলে মন্তব্য সুজনের। পাশাপাশি তাসকিন আর রুবেল হোসেনেরও সফল হবার সম্ভাবনা আছে, এমন বিশ্বাস বরিশাল কোচের। ওদের বাড়তি গতি কাজে দিতে পারে বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
সুজন যোগ করেন, এর বাইরে আরও অনেকেই আছে যাদের অ্যাবিলিটি আছে। আমি তাদের সম্পর্কে আশাবাদী। যাদের দিকে ইতিবাচক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছি। তবে প্রেশার সিচুয়েশন বা চাপে পড়লে কী করবে সেটা নিয়েও খানিক দ্বিধায় আছি।
তারা কারা? নুরুল হাসান সোহান, শুভাগত হোম, তৌহিদ হৃদয়, পারভেজ ইমন, শরিফুল, শফিকুল? সোহান খুব ইফেক্টিভ। শুভগত হোমও দারুন প্লেয়ার এ ফরম্যাটে। ম্যাচ উইনার। আর তৌহিদ হৃদয়, পারভেজ ইমনের সুযোগ আছে ভাল করার।
বোলারদের মধ্যে পেসার শরিফুলের দিকে বিশেষ নজর জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়কের। শরিফুল এ ফরম্যাটে ভাল বল করে। স্টক বল আছে ভালই। স্লোয়ার, ইয়র্কার ছুঁড়তে পারে। ’
এআরবি/আইএইচএস