সৌভাগ্যের রান আউটে বড় জুটি ভাঙলো বাংলাদেশ
টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশ দলের। প্রথম ঘণ্টায় তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামদের তোপে নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। তবে উইকেটে সেট হয়ে ক্রমেই চেনা রূপে ফিরতে শুরু করেন ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং।
মনে হচ্ছিল, সারাদিন ধরেই হয়তো ব্যাটিং করতে পারবেন এ দুই টপঅর্ডার ব্যাটার। অন্তত বাংলাদেশের কোনো বোলারই তাদের সাজঘরে ফেরানোর মতো বোলিং করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য সৌভাগ্যজনক রান আউটে ভেঙেছে ১৩৮ রানের জুটি, ফিফটি হাঁকিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ডানহাতি ওপেনার ইয়ং।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৩৯ রান। দুই ওপেনার টম লাথাম ১ ও ইয়ং আউট হয়েছেন ৫২ রান করে। ডেভন কনওয়ে অপরাজিত রয়েছেন ৮৪ রান নিয়ে। তাকে সঙ্গ দিতে নতুন ব্যাটার হিসেবে উইকেটে এসেছেন রস টেলর।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় শুরু হয়েছে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। সাত ব্যাটারের সঙ্গে তিন পেসার ও একমাত্র স্পিনার নিয়ে সাজানো হয়েছে সফরকারীদের একাদশ।
আগে বোলিং করতে নেমে শুরুর স্পেলে আগুন ঝরান তাসকিন ও শরিফুল। ইনিংসের প্রথম ৮ ওভারের মধ্যে ছয়টিই ছিল মেইডেন, রান হয় মাত্র দুইটি। কিউই অধিনায়ক টম লাথামকে সাজঘরে ফেরাতে বেশি সময় নেননি শরিফুল। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই তিনি ফেরান লাথামকে।
এই উইকেটে অবশ্য বড় কৃতিত্ব ছিল উইকেটরক্ষক লিটন দাসের। শরিফুলের ফুল লেন্থের ডেলিভারি ফ্লিক করেছিলেন লাথাম। কিন্তু ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগে বল, পরে প্যাডে লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। নিজের বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় সেটি লুফে নেন লিটন।
এরপর কনওয়ে-ইয়ংকেও শুরুতে চাপে রেখেছিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। দিনের প্রথম ঘণ্টায় খেলা ১৩ ওভারে মাত্র ১৫ রান করতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এরপর আর একবারের জন্যও কোনো সমস্যা হয়নি কিউইদের দুই টপঅর্ডার ব্যাটারের। দেখে শুনে খেলে প্রথম সেশনে ২৭ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৬ রান করে তারা।
দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন ইয়ং। ইনিংসের ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল জমা পড়ে লিটনের গ্লাভসে। কিন্তু বাংলাদেশের কেউই সেই বলে আবেদন করেননি। রিপ্লে'তে দেখা যায় আবেদন করলে বা রিভিউ নিলে ২৭ রানেই আউট হতে পারতেন ইয়ং।
সেই বলে বেঁচে যাওয়ার পর আর কন সুযোগই রাখেননি তারা। দেখে মনে হচ্ছিল যেন ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলতে নেমেছেন এ দুই ব্যাটার। প্রায় প্রতি ওভারেই আসছিল বাউন্ডারি। মেহেদি হাসান মিরাজের করা ইনিংসের ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি পূরণ করেন কনওয়ে। সেই ওভারে আরও দুই বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।
কনওয়ের আগে নামলেও ফিফটির জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছে ইয়ংকে। ইনিংসের ৪০তম ওভারে পূরণ ইয়ং-কনওয়ের জুটির ১০০ রান। এর কয়েক ওভারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন ইয়ং। তবে ফিফটি করার পর বেশিক্ষণ আর উইকেটে থাকা হয়নি তার।
মিরাজের করা ইনিংসের ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে মিডউইকেটের দিকে ঠেলে দিয়েই সিঙ্গেলের জন্য দৌড় দিয়েছিলেন ইয়ং। তাকে ফিরিয়ে দেন কনওয়ে। পরে ইয়ং পপিং ক্রিজে ফেরার আগেই নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রো ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন লিটন। ফলে বিদায়ঘণ্টা বাজে ১৩৫ বলে ৫২ রান করা ইয়ংয়ের, ভাঙে ১৩৮ রানের জুটি।
এসএএস/এমএস