‘পরিণত বুমরাহ’ই ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ১০ অক্টোবর ২০২১

উপমহাদেশের ক্রিকেট মানেই, বোলিংয়ে তাদের মূল শক্তি স্পিন। এই স্পিন সুবিধাটা দল সবচেয়ে বেশি নেয় যে দল, সেই ভারতই আবার সর্বপ্রথম দেশের বাইরে, বিশেষ করে সেনা (SENA - দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া) অঞ্চলে দাপট দেখাতে একটা সময় জোর দিল। তাতে মিলল সফলতাও। ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর পেস বোলিং লাইন-আপেরও মালিক।

তবে এই বিপ্লব এমনিতেই ঘটেনি। ক্রিকেট বোর্ড স্পিন প্রথা থেকে বের হতে বড় ভূমিকা রেখেছে এটা সত্যি। তবে ভারতের কিছু পেসারের ভূমিকাও তো তাতে কম নয়। কঠোর পরিশ্রম আর মেধার সংমিশ্রনে তারা নিজেদের এভাবেই জাহির করেছে যে, ভারত স্পিন রেখে পেস আক্রমণে আরও বেশি মনযোগী হওয়ার মানসিক শক্তি পেয়েছে।

গত প্রায় ৫-৬ বছর ধরে ভারত দলে কত দারুণ পেসারই তো উঠে এসেছে। তবে এর মধ্যে একজন, এমনভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন যে- এশিয়ান পেসারদের মান কতখানি হতে পারে সেটা টের পেয়েছে বাকি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো। নামটা তার জসপ্রিত বুমরাহ।

আহমেদাবাদে জন্ম নেয়া এই পেসার ২০১৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই একাদশের সেরা পেসার। একাদশ নির্বাচনে অটো চয়েজ। সেই ‘অটো চয়েজ বুমরাহ’ কিন্তু নিজের দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্স দিয়েই হয়েছেন। শুরুতে নতুন বল কিংবা শেষের পুরনো বল- যখনই বুমরাহর ডাক পড়ে, তখনই নিজের মুন্সিয়ানা দেখান তিনি। অর্থোডক্স অ্যাকশনে ইন-সুইং, আউট-সুইং, রিভার্স-সুইং, ইয়র্কার, বাউন্সার- এক পেসারের পারফেক্ট কম্বিনেশন যেন এই বুমরাহ।

সবচেয়ে বড় কথা- মাথা খাটিয়ে, পরিস্থিতি বুঝে বল করার ক্ষমতা আছে বুমরাহর। যে কারণে জাতীয় দল কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ- যেখানে খেলেন সেখানেই দলের মূল অস্ত্র হয়ে ওঠেন তিনি। হয়ে ওঠেন অধিনায়কের সবচেয়ে বড় আস্থার প্রতীক। যে আস্থার প্রতীক হয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতের জন্য লড়বেন তিনি।

বিরাট কোহলির হাতে মোহাম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমারের মতো আরও মানসম্পন্ন পেসার থাকলেও, বুমরাহই হবেন তার তুরুপের তাস। বিশেষ করে প্রতিপক্ষের রানের লাগাম টেনে ধরার জন্য, ব্রেক-থ্রু পেতে কিংবা ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষকে খোলসবন্দী করতে বুমরাহর চেয়ে সেরা অস্ত্র আর কোথায় পাবেন কোহলি?

টানা ব্লকহোলে বল করে যাওয়ার দারুণ ক্ষমতা আছে বুমরাহ। এই বিষয়টা আরও বেশি অনন্য করে তুলেছে তাকে। ইনিংসের শেষের দিকে, প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা যখন হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন, তখন বুমরাহ বোলিংয়ে এলেই তাদের রান তুলতে যেন হাঁসফাঁস করার মতো অবস্থা হয়ে ওঠে।

অভিষেকের বছরই বুমরাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিশ্ব শাসন করতেই এসেছেন। ওই বছর ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফরম্যান্স দেখাতে না পারলেও, হয়েছিলেন বছরের সর্বোচ্চ উইকেট (২৮) শিকারি। বিশ্বকাপে নবিন হিসেবেই খেলেছিলেন এই ডানহাতি পেসার। তবে এই পাঁচ বছরের মধ্যে অভিজ্ঞতার স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছেন তিনি। সঙ্গে কঠোর পরিশ্রমে, নিজের বোলিং নিয়ে কাজ করে নিজেকে করেছেন আরও পরিণত।

আর বুমরাহর এই পরিণত হয়ে ওঠায় এবারের বিশ্বকাপে হতে পারে ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি। যে শক্তির জোরে, প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতের ঘরে হয়তো দ্বিতীয়বার এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপ ট্রফিটা গেলে যেতেও পারে।

এসএস/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।