বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ভাঙচুরের শিকার আম্পায়ার-রেফারিরা
মাঠে যাওয়ার পথে আক্রমণের শিকার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিরা- এটুকু পরে হয়তো ভাবনা আসতে পারে, মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ঘটানো হয়েছে এমন ঘটনা। কিন্তু আসলে তা নয়। মূলত আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিক্ষোভের সামনে পড়ে গিয়েছিলেন আম্পায়ার-রেফারিরা।
শুক্রবার আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের পর থেকেই দেশের ক্রিকেটাঙ্গন উত্তাল ছিল সাকিব আল হাসানের স্ট্যাম্প ভাঙার ঘটনায়। শনিবার ছিল বিরতির দিন। এদিন সন্ধ্যায় তাকে দেয়া হয় তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার শাস্তি। বিরতির পর আজ আবার শুরু হয়েছে লিগের অষ্টম রাউন্ডের খেলা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায়ই শুরু হয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর ও পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার খেলা। কিন্তু সাভারের বিকেএসপিতে হতে যাওয়া দুই ম্যাচে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও, খেলা শুরু হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হামলার শিকার হয়েছেন দুই মাঠের চার ম্যাচের আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিরা। তবে এটি কোনো পরিকল্পিত বা উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ ছিল না। বরং দূর্ভাগ্যবশত সাভারের আশুলিয়ায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের রোষানলে পড়েছেন দুই ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পল ও আদিলসহ আম্পায়ার এবং অন্যান্য ম্যাচ অফিসিয়ালরা।
ঘটনাস্থল নতুন ও পুরনো ইপিজেডের মধ্যবর্তী স্থান, সময় আনুমানিক সকাল সাতটা। ঢাকা থেকে দুই মাইক্রোবাসে যাচ্ছিলেন চার ম্যাচের ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়াররা। সেখানে আগে থেকেই আন্দোলনরত অবস্থায় ছিলেন পোশাক শ্রমিকরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ছোড়ে পুলিশ।
এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে শ্রমিকরা। তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় থাকা গাড়িঘোড়ায় ভাঙচুর শুরু করলে, সেখানে পড়ে যান প্রিমিয়ার লিগের আম্পায়ার-ম্যাচ রেফারিরাও। তবে শারীরিকভাবে কেউ আঘাত পাননি। মাইক্রোবাসের পেছনের কাছ ভেঙে গেছে। বিকেএসপি সূত্রে জানা গেছে এ খবর।
সাবেক ক্রিকেটার, কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ও ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পল নিজে উদ্যোগ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। যে কারণে মাঠে পৌঁছতে প্রায় ৯টার বেশি যায়। তাই যথাসময়ে দুই ম্যাচের একটিও শুরু করা যায়নি। মাঠে পৌঁছানোর পর তড়িঘড়ি টস করে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দুই মাঠেই খেলা শুরু করা হয়।
এ খবরে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, আম্পায়ার-ম্যাচ রেফারিদের বহনকারী মাইক্রোবাস হামলার মধ্যে পড়লে, খেলোয়াড়দের কী অবস্থা? তাদের জন্য রয়েছে ভালো খবর। মোহামেডান, ওল্ড ডিওএইচএস, লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ এবং শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের খেলোয়াড়দের বহনকারী বাস আগেই বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিল। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখে পড়তে হয়নি তাদের।
এআরবি/এসএএস/জিকেএস