আম্পায়ারের ওপর রেগে আগুন ওয়ার্নার, পাশে নেই কোচ
বুধবার রাতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটে হাতের মুঠোয় থাকা জিততে পারেনি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর করা ১৪৯ রানের জবাবে ১৪৩ রানে থেমে গেছে তাদের ইনিংস। শেষ চার ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচটি হাতছাড়া করেছে তারা।
অথচ রান তাড়ায় শুরুটা দুর্দান্ত ছিল হায়দরাবাদের। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা (৭ বলে ১) হতাশ করলেও, দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলকে সঠিক পথেই রেখেছিলেন ওয়ার্নার ও মানিশ। দুজনের জুটিতে মাত্র ১১ ওভারেই আসে ৮৩ রান।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে দলীয় ৯৬ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন ওয়ার্নার। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। তখন জয়ের জন্য বাকি ছিল ৪০ বলে ৫৪ রান। লাইনআপে মানিশ, বেয়ারস্টো, সামাদ, হোল্ডারদের মতো ব্যাটসম্যানরা থাকায় তেমন চিন্তার কারণ ছিল না হায়দরাবাদের।
কিন্তু বাকিদের ভয়াবহ ব্যর্থতায় ৬ রানের জন্য ম্যাচ হেরে গেছে হায়দরাবাদ। ম্যাচ যখন একটু একটু করে ছিটকে যাচ্ছিল হায়দরাবাদের হাত থেকে, তখন ডাগআউটে দেখা যায় চিন্তিত-বিমর্ষ ওয়ার্নারের প্রতিচ্ছবি। যিনি শেষ ওভারে গিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ ঝাড়েন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে।
হায়দরাবাদের ইনিংসের ১৮ ও ২০তম ওভার দুইটি করেন ডানহাতি পেসার হার্শাল প্যাটেল। তার দুই ওভারেই ছিল দুইটি কোমর উচ্চতার নো বল। প্রথম ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলটি জেসন হোল্ডারের কোমর উচ্চতায় করেন হার্শাল। পরে শেষ ওভারের তৃতীয় বলটি রশিদ খানের কোমর উচ্চতায় করেন তিনি।
ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বোলার এক ম্যাচে দুইটি কোমর উচ্চতার নো বল করলে, তাকে আর সেই ম্যাচে বোলিংয়ের অনুমতি দেয়া হবে না। কিন্তু আম্পায়াররা হার্শালের বিরুদ্ধে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। বরং শেষ ওভারের বাকি চার বল করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন হার্শাল।
আম্পায়ারদের এ সিদ্ধান্ত নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওয়ার্নার। টিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, দ্বিতীয় নো বলটির পর হার্শালকে বোলিং থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ডাগআউটে বসে চিৎকার করছেন ওয়ার্নার। কিন্তু তার কথায় কর্ণপাত করেননি আম্পায়াররা। পরে ম্যাচ শেষে হায়দরাবাদ কোচ ট্রেভর বেইলিসও কথা বলেছেন আম্পায়ারদের পক্ষেই।
মূলত হোল্ডারকে করা নো বলটি তার শরীর বরাবর ছিল না বলে কোনো সতর্কবার্তা দেননি আম্পায়াররা। তবে রশিদের বিপক্ষে ডেলিভারিটি শরীর বরাবর থাকায় সেটিতে সতর্কবার্তা দেয়া হয় এবং পরবর্তী একই ভুলের জন্য বোলিং থেকে সরিয়ে দেয়ার কথাও বলা হয়।
এ বিষয়ে ম্যাচ পরবর্তী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বেইলিস বলেছেন, ‘সে (ওয়ার্নার) খানিকটা চিন্তিত ও রেগে ছিল কারণ আমরা তখন ভাল খেলছিলাম না এবং শেষ পর্যন্ত হেরে গেছি। আমার মতে, আম্পায়াররা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। এখানে দ্বিতীয় নো বলটা ভয়ঙ্কর ছিল। তবে প্রথমটা ব্যাটসম্যানের শরীর বরাবর ছিল না। তাই সেটি কোনো সতর্কবার্তা পায়নি। তাই আমার মতে, আম্পায়াররা ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।’
এদিকে দুই ওভারে দুই নো বলের পেছনে অতিরিক্ত ঘামের কথা বলেছেন হার্শাল। ম্যাচ শেষে তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, ‘আমি খুব ঘামছিলাম এবং তালুতে পর্যন্ত ঘাম চলে আসছিল। তবে অবশ্যই এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। এমন ভুল আর করা যাবে না। এগুলো একদমই বেসিক ভুল। চাপের মুহূর্তে এমন করার কোনো সুযোগ নেই।’
এসএএস/জিকেএস