নিউজিল্যান্ডে রুবেল-শরিফুলরাই হয়ে গেলেন সাংবাদিক!
ভারতের ক্রিকেটে এটি প্রায়ই দেখা যায়। যেকোনো ম্যাচ শেষে কিংবা ম্যাচের আগে লেগস্পিনার ইয়ুজভেন্দ্র চাহাল সাক্ষাৎকার নেন নিজের সতীর্থ ক্রিকেটারদের, যা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয় 'চাহাল টিভি'র সাক্ষাৎকার হিসেবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় ভারতের এই চাহাল টিভির আয়োজন।
এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেও যেন দেখা মিলল 'রুবেল-শরিফুল টিভি'র। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগেই সে দেশের ক্রিকেট বোর্ড থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, করোনা সতর্কতার কারণে বাংলাদেশের কোনো সাংবাদিককে তারা এবারের সফরের ম্যাচগুলো কাভারের অনুমতি দিতে পারছে না।
যে কারণে প্রথমবারের মতো কোনো সফরে সাংবাদিক ছাড়াই গেছে বাংলাদেশ দল। সাংবাদিক না গেলে কী হয়েছে! রুবেল-শরিফুলরা নিজেরাই বনে গেছেন সাংবাদিক, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একে অপরের। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া ডিপার্টমেন্ট থেকে সরবরাহকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে এমন চিত্র।
নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্যমণ্ডিত মাঠ কুইন্সটাউনের জন ডেভিস ওভালের সবুজ গালিচায় বসে একে অপরের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুবেল ও শরিফুল। যেখানে তারা কথা বলেছেন নিজেদের প্রস্তুতি ও আসন্ন সিরিজে লক্ষ্যের ব্যাপারে। প্রথমে অগ্রজ সতীর্থ রুবেলকে প্রশ্ন করেছেন শরিফুল। পরে আবার রুবেলের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এ বাঁহাতি তরুণ পেসার।
রুবেল-শরিফুলের সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো
(প্রথমে রুবেলকে প্রশ্ন করেন শরিফুল)
শরিফুল: নিউজিল্যান্ডে কেমন লাগছে?
রুবেল: নিউজিল্যান্ডে তো এর আগেও অনেক এসেছি। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে আসলে বোলিং করতে ভালো লাগারই কথা। এখাসড উইকেট সুন্দর থাকে, স্পোর্টিং থাকে। ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধাজনক। তবে বোলাররা যদি ভালো জায়গায় বল করতে পারে, পরিকল্পনা মোতাবেক, আমার কাছে মনে হয় বোলারদের জন্যও ভালো হবে।
শরিফুল: আমার কাছে মনে হয়, আপনি বাংলাদেশের সফলতম পেসারদের একজন। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে জেতানোর অনেক অভিজ্ঞতা আপনার আছে। দর্শকরা আপনার কাছে অনেক কিছু আশা করে। তো আপনি এখন কতটুকু চেষ্টা করছেন নিজের সেরাটা দেয়ার?
রুবেল: অবশ্যই। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি। ইনশাআল্লাহ সামনে যদি সুযোগ পাই, আমি আমার শতভাগ দেব। এছাড়া আমার ভালো স্মৃতিগুলো, কীভাবে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ভালো খেলেছিলাম, চেষ্টা করব নিজের মাথায় নেয়ার জন্য। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরোটা খুব ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তো এটাই আর কী। ইনশাআল্লাহ! আমি আমার নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।
শরিফুল: নিউজিল্যান্ডে এসে আমরা কোনো ম্যাচ জিতিনি। এবার কি সেই রেকর্ডটা ভাঙতে পারব? আপনার কতটুকু আত্মবিশ্বাস?
রুবেল: ইনশাআল্লাহ! কারণ আমরা যে দল আছি, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। ইনশাআল্লাহ আমরা যদি সবাই পরিকল্পনা অনুযায়ী, উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি, উইকেটটায় গিয়ে আমরা যদি খুব সুন্দরভাবে এডজাস্ট করতে পারি... দলের তো অবশ্যই একটা পরিকল্পনা থাকে। আমরা সবাই যদি নিজেদের সেরাটা দিতে পারি তো নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ।
(দ্বিতীয়াংশে শরিফুলকে প্রশ্ন করেন রুবেল)
রুবেল: অনুশীলন কেমন চলছে?
শরিফুল: আলহামদুলিল্লাহ! অনেক ভালো চলছে।
রুবেল: নিউজিল্যান্ডের উইকেট কেমন মনে হচ্ছে? তোমার তো প্রথম সফর।
শরিফুল: উইকেটটা অনেক ভালো মনে হচ্ছে। স্কোরিং উইকেট। স্ট্যাম্পের বাইরে যেকোনো কিছু করলেই রান খরচ হবে। শুধু লাইন-লেন্থে ঠিক করে বল করতে হবে।
রুবেল: তোমার প্রস্তুতি কেমন নিচ্ছো? ওদের কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ড অনেক কঠিন টিম, তো তোমার প্রস্তুতি কেমন?
শরিফুল: প্রস্তুতি তো আল্লাহর রহমতে ভালোই আছে আল্লাহর রহমতে। ওদের দেশে, ওদের সব জানা... তো ওদের সঙ্গে খেলা একটু কঠিনই হবে। চেষ্টা করব নিজের পরিকল্পনায় থাকার।
রুবেল: তোমার স্টক বল কোনটা? সেটায় মনোযোগ দিচ্ছ বেশি?
শরিফুল: হ্যাঁ! স্টক বলটায় মনোযোগ দিচ্ছি, স্টাম্প টু স্টাম্প, হালকা সুইং।
রুবেল: ঠিক আছে, গুড লাক! বেস্ট উইশেস ফর ইউ ব্রাদার।
এসএএস/জেআইএম