বিকেএসপিতে আসলে কী করছেন সাকিব?
নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হতে এখনও দেড় মাসেরও বেশি সময় বাকি। নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হওয়ার আগেই শ্রীলঙ্কায় শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেই সাকিব আল হাসানকে খেলানোর কথা বলে রেখেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিন্তু কিভাবে? নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হওয়ার তিনদিন পরই তো শুরু হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট।
মূলতঃ সাকিবকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলারই হয়তো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন খেলার বাইরে। সে কারণে হুট করেই তো আর তাকে মাঠে নামিয়ে দেয়া যাবে না। ফিটনেস থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতেই তাই দেশে চলে আসা সাকিবের। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিকেএসপিতে অনেক নিভৃতেই শুরু হয়েছে সাকিবের ফেরার প্রস্তুতি।
এতটুকু সবার জানা, সাকিব বিকেএসপিতে অনুশীলন শুরু করেছেন দুই প্রিয় গুরু সালাউদ্দিন এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিমের অধীনে। কিন্তু সাকিব আসলে বিকেএসপিতে কী ধরনের অনুশীলন করছেন- মোট কথা কী করছেন, সেটা যেন কোনোভাবেই জানার উপায় নেই। একেবারে কাক-পক্ষিও টের পাচ্ছে না, আসলে কী করছেন সাকিব।
যে সাকিব দেশে আসার আগে তাকে নিয়ে নিয়মিতই মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন সালাউদ্দিন এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিম- তাদের মুখে এখন পুরোপুরি কুলুপ আঁটা। ফোনে কথা বলাই যেন তাদের জন্য নিষিদ্ধ। মেসেজেরও কোনো উত্তর নেই।
মোট কথা, বিকেএসপির চৌহদ্দির বাইরে তাদের আওয়াজ পর্যন্ত আসছে না। সাকিব নিজে তো নয়ই, তার আশ-পাশের কেউ এখন কোনো কথা বলছেন না, কিছু জানাচ্ছেন না। করোনার কারণে মিডিয়ার প্রবেশ নিষিদ্ধ। সুতরাং, সাকিব কী করছেন, কী ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কতদিনে ম্যাচ খেলার উপযুক্ত হবেন- তার কোনো কিছুই এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে না। এমনকি সাকিবের অনুশীলনের কোনো ছবি পর্যন্ত কেউ তুলতে পারছেন না কিংবা বাইরে আসছে না।
কী থেকে কী হয়ে যাবে, আবার না আইসিসির রোশানলে পড়তে হয়! এসব ভেবেই সতর্ক ও সাবধানি সাকিব। শুধু সাকিব নন। যে দু’জন তার সাথে বিকেএসপিতে ট্রেনিংয়ে রাখছেন কোচের ভূমিকা, সেই নাজমুল আবেদিন ফাহিম আর মোহাম্মদ সালাউদ্দীনও নীরব।
সাকিব বিকেএসপিতে কী করছেন? ট্রেনিংয়ের ধরন কী? কখন শুরু হচ্ছে ট্রেনিং? ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন শুরু করেছেন কী? নাকি শুধুই ফিটনেস ট্রেনিং-ই চলছে? এসব জানতে রাজ্যের কৌতুহল ভক্ত ও সমর্থকদের।
কিন্তু সাকিব একদমই চুপ। নিজের ফেসবুক পেইজে এখন পর্যন্ত তার মাঠে ফেরা নিয়ে একটি কথাও লিখেননি। তার দুই কোচ ফাহিম আর সালাউদ্দীনও তাই। কোন কথা নেই। মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। রিং বেজেই যাচ্ছে; কিন্তু রিসিভ করার নাম পর্যন্ত নেই। এসএমএসের জবাবও দিচ্ছেন না। বোঝাই যাচ্ছে সাকিবের অনুশীলন কার্যক্রম এবং মাঠে ফেরার পূর্ব প্রস্তুতির কথা যতটা সম্ভব চাপা রাখতেই এ উদ্যোগ।
বিকেএসপির বাইরে আপাতত সাকিব সম্পর্কিত সব যোগাযোগ বন্ধ। জানা গেছে, সাকিব নিজেই তার আশপাশের সবাইকে এ ব্যাপারে নিষেধ করে দিয়েছেন। এ কারণেই মূলতঃ তার দুই কোচ সালাউদ্দিন এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিমরা কোনো কথাই বলছেন না মিডিয়ায়।
বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন বিকেএসপির জনসংযোগ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান। তিনি জানিয়েছেন, ‘মিডিয়া কিংবা কারো সঙ্গে কথা বলা সম্পর্ক সবাইকে নিষেধ করে দিয়েছেন সাকিব। মূলতঃ এখনও তার ওপর থেকে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে যায়নি। প্রায় দেড় মাস বাকি আছে। এই শেষ সময়ে এসে যেন আর কোনো জটিলতার মুখোমুখি না হন, সে জন্যই এতটা সতর্কতা অবলম্বন করছেন সাকিব আল হাসান।’
বিকেএসপির এই জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘সাকিবের অনুশীলন তদারক করছেন দুই কোচ সালাউদ্দিন এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিম। সঙ্গে একজন ফিজিও রয়েছেন। আপাতত ফিটনেসেই জোর দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকার কারণে ফিটনেসটা প্রথমে ঠিক করা প্রয়োজন। তারপরই না অন্যকিছু। তবুও, দুই কোচ এবং ফিজিও মিলে পরিকল্পনা করে সাকিবে অনুশীলন করাচ্ছেন। এর চেয়ে আমি আর বেশি কিছু বলতে পারছি না।’
আশরাফুজ্জামান আরেকটু তথ্য দিয়েছেন। সেটা হচ্ছে, বিকেএসপিতে সাকিব থাকছেন মধুমতি ভিআইপি কটেজে। তাকে খাবার দেয়া হচ্ছে বিকেএসপি থেকেই। তবে তিনি খাবারের মূল্য পরিশোধ করে দিচ্ছেন। মূলতঃ নিষেধাজ্ঞা না কাটা পর্যন্ত লাইমলাইটে আসতে চাচ্ছেন না সাকিব। একই কারণে কোচ সালাউদ্দিন এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিমরাও বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
এআরবি/আইএইচএস/এমকেএইচ