শচিনকে দু’বার ‘ভুল আউট’ দিয়েছিলেন সেই কিংবদন্তি আম্পায়ার!
ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ারিং করেও কিংবদন্তি হওয়া যায়, সেটা দেখিয়েছেন স্টিভ বাকনার। নিখুঁত সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা ছিল তার। এ কারণে আইসিসির আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে ছিলেন দীর্ঘদিন। যদিও তিনি এখন অবসরে। সেই স্টিভ বাকনার স্বীকার করে নিলেন, তিনিও ভুল করেছিলেন। এমনকি ভারসের কিংবন্তি ক্রিকেটার, মাস্টার ব্লাস্টার শচিন টেন্ডুলকারকে ভুল করে দুইবার আউট দিয়েছিলেন বলে স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি।
ক্রিকেট আম্পায়ারিংয়ের জগতে জনপ্রিয় নাম ছিল স্টিভ বাকনারের। চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকে আইসিসির এলিট প্যানেলের এই আম্পায়ার দর্শকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। আম্পায়ারিং থেকে অবসর নেয়ার ১১ বছর পর এসে বাকনার শচিনকে দেয়া দুটি ভয়ানক ‘ভুল’ স্বীকার করে নিয়ে সে জন্য অনুতাপও প্রকাশ করলেন।
এক রেডিও পডকাস্ট শোতে এসে স্টিভ বাকনার স্বীকার করেন, তিনি দু’বার শচিনকে ভুল করে আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ওই চ্যাট শোতে আইসিসির এলিট প্যানেলের সাবেক এই আম্পায়ার বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় একবার (২০০৩ গ্যাবা টেস্ট) শচিনকে জেসন গিলেস্পির বলে এলবিডব্লিউ আউট দিয়েছিলাম। ওটা ছিল আমার ভুল সিদ্ধান্ত। বল উইকেটের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছিল। আমি পরে রিপ্লে দেখে বুঝতে পারি। সেদিন শচিন আউট ছিলেন না। পরে অনুতাপ হয়েছে। দ্বিতীয়বার শচিনকে ভুল করে আউট দিয়েছিলাম ভারতে। ২০০৫ সালে ইডেন গার্ডেন্সে আমি তাকে আবদুল রাজ্জাকের বলে ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্ত দিই; কিন্তু পরে দেখা যায় শচিনের ব্যাটে বল লাগেনি। ইডেন গার্ডেন্স ছিল অনেক বড় স্টেডিয়াম। ওখানে খেলা হলে অনেক সময় আমরা কিছু শুনতে পেতাম না। সেদিনও তাই হয়েছিল। ওই ভুলের জন্য আমি আজও অনুতপ্ত।’
বাকনার বলেন, ‘ওগুলো ছিল আসলে মানবীয় ভুল। যে কারণে আমি শচিনকে দু’বার ভুল করে আউট দিয়ে দিই। আমি কোনোভাবেই চাই না, কোনো আম্পায়ার এ ধরনের ভুল করুক। কারণ, একটি ভুলও যে কারো ক্যারিয়ারকে পুরোপুরি হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।’
ভারতীয় মিডিয়াগুলোর দাবি, আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারে অনেকবার ভুলের জন্য শিরোনামে এসেছেন বাকনার। এর মধ্যে অন্তত ১৫-১৬ বার ভুগতে হয়েছে ভারতকেই। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বিতর্কিত ম্যাচ ছিল ২০০৩ ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সেই গ্যাবা টেস্ট।
তবে বাকনার বলছেন, ‘কোনও ভুলই তিনি ইচ্ছাকৃত করেননি। আম্পায়াররা ইচ্ছাকৃত ভুল করে না। এতে তাদের নিজেদের ক্যারিয়ারেরই ক্ষতি। কারণ, আম্পায়ারিংয়ে ভুল হলে ভুলটাই সারাজীবন মনে রাখে সবাই। আসলে মানুষ মাত্রই তো ভুল হয়। আমিও তেমনই ভুল করেছেন। ১ লাখের বেশি দর্শক যদি চিৎকার করতে থাকে, তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এ কারণেই আজ অনুতাপ হচ্ছে বেশি। তবে আমি বলতে চাই, মানুষ যে কোনো সময় ভুল করতে পারে। সেই ভুল গ্রহণ করে নিতে পারাটাও জীবনের একটি অংশ।’
আইএইচএস/