সাত মিনিটে হলেন কোচ, জিতিয়ে দিলেন বিশ্বকাপ

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩১ পিএম, ১৬ জুন ২০২০

২০১১ সালে নিজেদের ঘরের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপে দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে জিতেছিল দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। সেই সাফল্যের অন্যতম রূপকার ছিলেন ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ গ্যারি কারস্টেন।

অথচ কারস্টেন নিজেও নিশ্চিত ছিলেন না আদৌ ভারতের কোচ হতে যাচ্ছেন কি না। কোনরকমের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় এত বড় দায়িত্ব নেয়ার ব্যাপারে খানিক দ্বিধায়ই ছিলেন তিনি। তবে মাত্র ৭ মিনিটের চিন্তায় দায়িত্ব নেন কারস্টেন এবং তিন বছরের মধ্যেই ভারতকে এনে দেন স্বপ্নের বিশ্বকাপ।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৮ সালের ১ মার্চ ভারতের হেড কোচ পদে যাত্রা শুরু করেন কারস্টেন। পরের বছর তার অধীনেই টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানে বসে ধোনির দল। এর বছর দুয়েকপর আসে বিশ্বকাপ শিরোপা। সেই দলের সব খেলোয়াড় একবাক্যে স্বীকার করেন কারস্টেনের কথা।

এ দায়িত্ব নেয়ার আগে যে অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল, সে ব্যাপারে জানিয়েছেন কারস্টেন। টকস্পোর্টসের পডকাস্টে তিনি বলেন, ‘আমি সুনিল গাভাস্কারের কাছ থেকে একটা মেইল পেলাম। যেখানে লেখা ছিল, আমি ভারতীয় দলের কোচ হতে চাইব কি না। শুরুতে ভেবেছিলাম এটা হয়তো কেউ মজা করছে। ফলে আমি এর উত্তর দেইনি।’

‘তিনি (গাভাস্কার) আবার আমাকে মেইল করেন, তুমি কি একটা ইন্তারভিউ দিতে আসবে? আমি আমার স্ত্রীকে এটি দেখাই এবং সে বলে, এটা হয়তো অন্য কোন ব্যক্তির মেইল হবে। তো এই প্রক্রিয়ার শুরুটাই ছিলো খুব অদ্ভুত। এটাই স্বাভাবিক ছিল। কেননা আমার তো কোচিংয়ের কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না।’

প্রাথমিকভাবে ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সময়ের জন্য চুক্তি করা হয় কারস্টেনের সঙ্গে। পরে সেটির মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১১ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এরপর তিনি চলে যান দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের জন্য। ভারতের কোচ হওয়ার ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না কারস্টেন। তখন রবি শাস্ত্রী তার কাজ সহজ করে দেন।

কারস্টেন বলেন, ‘রবি শাস্ত্রী ছিল সেই ইন্টারভিউ কমিটিতে। তো আমাকে জিজ্ঞেস করলে, গ্যারি তুমি বলো যে ভারতকে হারানোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কোন কাজটা করো? এ প্রশ্নটা আমার কাজ সহজ করে দেয়। আমি ২-৩ মিনিটের মধ্যে সকল পরিকল্পনা সাজিয়ে-গুছিয়ে বলে দেই।’

‘আমার উত্তরে রবির পাশাপাশি বোর্ডের বাকিরাও খুব সন্তুষ্ট হয়। কারণ এর ৩ মিনিট পর, সবমিলিয়ে মাত্র ৭ মিনিটের ইন্টারভিউ শেষে, বোর্ডের সেক্রেটারি আমাকে একটি চুক্তিনামা এগিয়ে দেন। সেটি হাতে নিয়ে নিজের নাম খুঁজতে থাকি কিন্তু পাইনি। তবে সেখানে গ্রেগ চ্যাপেলের নাম ছিল, যিনি ভারতের সাবেক কোচ ছিলেন।’

এরপর ঘটে যায় অদ্ভুত ঘটনা। তা জানিয়ে কারস্টেন বলেন, ‘আমি নিজের নাম না দেখে চুক্তিনামাটি ফিরিয়ে দিয়ে বলি, আপনি হয়তো ভুলে আগের কোচের কাগজ আমাকে দিয়েছে। তিনি আমার দিকে রহস্যময় চাহনি দিয়ে পকেট থেকে একটি কলম বের করেন এবং চ্যাপেলের নাম কেটে আমার নাম লিখে দেন।’

এসএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।