ইংরেজি না জানার ভান করে নিজ দলকে হারিয়েছিলেন তিনি

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ এএম, ১৩ মে ২০২০

খেলাধুলায় ইংরেজির ব্যবহার আবশ্যিক নয়। সংশ্লিষ্ট খেলার সকল স্কিলস থাকলে ভাষা কোন সমস্যাই হতে পারে না। কিন্তু ইংরেজি জানার পরেও না জানার ভান করে থাকা কখনও কখনও ঘটাতে পারে বিপদ। যার অন্যতম উদাহরণ পাকিস্তানের লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ।

২০১৭ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন ইয়াসির। এর মধ্যে একটিতে তিনি কোন পাত্তাই দেননি অধিনায়ক স্যাম নর্থইস্টের কথায়। ভান করে থাকেন ইংরেজি না বোঝার। অথচ ইংরেজি বেশ ভাল বুঝতে ও বলতে পারেন তিনি।

কিন্তু ওরচেস্টারের বিপক্ষে সে ম্যাচে অধিনায়কের কথা শুনেও না বোঝার ভান করে ছিলেন এ বর্ষীয়ান স্পিনার। যার ফলে ম্যাচটিই হেরে যেতে হয় ইয়াসিরের দল কেন্টকে। প্রায় তিন বছর সেই স্মৃতি আওরালেন কেন্টের তখনকার অধিনায়ক স্যাম নর্থইস্ট।

টু হ্যাকস, ওয়ান প্রো’তে সেই ম্যাচের স্মৃতি মনে করে নর্থইস্ট বলেছেন, ‘মৌসুমের শুরুতে আমাদের দলে ছিল ওয়েন পারনেল। সে চলে যাওয়ার পর তার জায়গায় অ্যাডাম মিলনের আসতে খানিক সময় লাগছিল। মাঝের সময়টাতে শুধু ইয়াসির শাহই খালি না। যখন আপনার হাতে বিশ্বের সেরা বোলারকে খেলানোর সুযোগ থাকে, তখন সেটাকে মানা করে দেয়া খুব কঠিন।’

ওরচেস্টারকে তারা ৩৯৯ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিলেন। যা কি না মাত্র একদিন অর্থাৎ ৯০ ওভারের মধ্যে করতে হতো দলটিকে। এদিকে নিজের অস্ত্রভাণ্ডারে ইয়াসিরের মতো বারুদ থাকায়, পুরোপুরি নিশ্চিন্ত ছিলেন নর্থইস্ট। কিন্তু দিন শেষে হাসি টেকেনি তার মুখে।

তিনি বলেন, ‘ম্যাচটা ছিল ওরচেস্টারে। সেটাই আমার অধিনায়কত্ব ক্যারিয়ারে অন্যতম বাজে একটা দিন। আমরা তাদের সামনে একদিনে ৪০০ (৩৯৯) রানের লক্ষ্য দিলাম। রাতে আমার দারুণ ঘুম হয়েছিল। কারণ আমার হাতে ইয়াসির শাহ আছে। ভাবছিলাম হয়তো লাঞ্চের মধ্যেই ম্যাচ শেষ করে দেবে সে।’

‘যাইহোক, সেদিন লাঞ্চ পর্যন্ত সময় মাত্র ১ উইকেট হারায় ওরচেস্টার। ইয়াসির তখনও উইকেটশূন্য। আমি তখন তার কাছে গিয়ে ফিল্ড পরিবর্তন, বোলিংয়ে বৈচিত্রের ব্যাপারে কথা বলছিলাম। কিন্তু সে এমন ভাব করল যেন আমার কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। অথচ অন্যদের সঙ্গে ইংরেজিতে পুরোদমে কথা বলছিল। আমার মনে হচ্ছিল, কী হচ্ছে এখানে? সে আমার কথা একদমই শুনছে না।’

‘লাঞ্চ ব্রেকে আমি ইয়াসিরের আগে ভিডিও দেখে ভাবছিলাম, এই বোলার নিশ্চয়ই একটা সময় কাজের কাজ করে দেবে। দলের অন্যরা এসে আমাকে বলছিল, আমি যেন ইয়াসিরকে বলি আরেকটু গতি কমিয়ে বোলিং করতে। আমি তখন বোঝাতে চাইলাম যে, এটাই বলছি আমি। কিন্তু সে আমার কথা শুনছেই না যেমন। তবু সে বিশ্বের এক নম্বর বোলার। তাই তাকে তার মতো করে আক্রমণ করতে দিচ্ছিলাম আমি।’

কিন্তু শেষপর্যন্ত ম্যাচটি হেরে যায় কেন্ট। ড্যারেল মিচেল (১৪২) জো ক্লার্ক (১১০) মিলে ১৭৫ রানের জুটি গড়লে মাত্র ৮১ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ওরচেস্টার। ইয়াসির ১৩২ রান খরচায় ৫ উইকেট নিলেও সেটা দলের কোন কাজে আসেনি।

নর্থইস্ট বলেন, ‘চা পানের বিরতির পর ইয়াসির গতি কমিয়ে বোলিং শুরু করে। তার আগপর্যন্ত একটা উইকেটও পায়নি সে। ক্লার্ক ও মিচেল অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে ম্যাচটা জিতে নেয়। ইয়াসির ২০ মিনিটের ব্যাপারে ৬ উইকেট (৫) নিয়ে নেয়। আমরা ম্যাচে ফিরছিলাম। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর হয়নি। আমার অধিনায়কত্ব সেদিন ভাল হয়নি। তাই আপনার দলে বিশ্বের সেরা বোলার থাকলেই সবসময় জেতার গ্যারান্টি নেই।’

এসএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।