ফাউন্ডেশন গঠনের পেছনের গল্প জানালেন সাকিব
সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও একমাত্র কন্যার সঙ্গে থাকতে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাকিব আল হাসান পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু স্বাস্থ্যসংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথম ১৪ দিন তাকে থাকতে হয়েছে আলাদা, সেলফ আইসোলেশনে। সেখানে বসেই গত ২৮ মার্চ ঘোষণা দিয়েছেন 'দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন' গঠনের।
নিজের নামে করা এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এরই মধ্যে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন সাকিব। তাদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে সুরক্ষা সরঞ্জামাদিও দিয়েছে সাকিব ফাউন্ডেশন।
সবমিলিয়ে সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় দারুণ এক উদ্যোগই নিয়েছেন সাকিব। কিন্তু সেলফ আইসোলেশনে থেকে এত কিছু কীভাবে সামলে নিলেন তিনি? কীভাবেই বা দূর দেশে বসে তদারকি করছেন নিজের ফাউন্ডেশনের সব কাজ? এই ফাউন্ডেশন গঠনের পেছনের গল্পটাই বা কী?
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) রাতে সব প্রশ্নের নিজের মুখেই দিয়েছেন সাকিব। জানিয়েছেন ফাউন্ডেশন শুরুর গল্প, বুঝিয়েছেন এটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা ও পরিকল্পনা। একইসঙ্গে শুক্রবার এই ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটের ঘোষণাও দিয়েছেন সাকিব।
তার পরিকল্পনা ছিল আগে খেলাধুলাবিষয়ক কার্যক্রম দিয়ে শুরু করার। পরে ধীরে ধীরে এটি এগুবে মানুষের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে। কিন্তু করোনাই বদলে দিয়েছে সব পরিকল্পনা। জরুরি অবস্থা সামাল দিতে তড়িঘড়ি করেই ফাউন্ডেশনের শুরু করে দেয়া হয়েছে।
সাকিব বলেন, 'প্রথমে খেলাধুলাবিষয়ক করার চিন্তা ছিল। যেখানে পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। আসলে ঐ কারণেই এটা শুরু করা। যদিও আমি এটার যাত্রা আরও পরে করব ভেবেছি, সময় যখন হয় এবং সবকিছু মনমত প্রস্তুত করতে পারি তখন।’
‘কিন্তু এই মহামারীর কারণে আসলে সব পরিস্থিতিই বদলে যায় এবং এই সময়ে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মানুষের সাহায্য কিংবা স্বাস্থ্যখাতে কোন সাহায্য করা যায় কি না- এই চিন্তায়ই মূলত শুরু করা। সবাই সবার জায়গা থেকে সাহায্য করছে আমি নিশ্চিত। এই বিপদের সময়ে আমাদের দেশে, শুধু আমাদের দেশে নয় সবদেশেই এই বিপদটা এখন। ঐখান থেকেই আসলে চিন্তাটা শুরু, কাজ করার ইচ্ছে জাগে।’
সারাদেশ অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে থাকলেও প্রায় প্রতিদিনই রাস্তায় দেখা যায় হাজার হাজার মানুষ। যাদের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে প্রচুর। তবে সাকিব মনে করেন এদের বেশিরভাগই পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন।,
তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে অনেকেই বলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে, কী কারণে (মানুষ) বাইরে যাচ্ছে। আমরা ঠিক জানছি না কী কারণে বা কতটা প্রয়োজনে বের হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত জানছি না ততক্ষণ বলাটা খুব সহজ আমাদের জন্য, যারা স্বচ্ছল আছি। আমার মনে হয় এ ব্যাপারটা আমাদের সবারই চিন্তা করা উচিৎ। হ্যাঁ সবাই যে খুব প্রয়োজনেই বের হচ্ছে তা না। কিছুসংখ্যক মানুষ আছে যারা অত প্রয়োজন ছাড়াও বের হচ্ছে।’
‘অনেকেই আছে আমি যদি বিশেষ করে ঢাকার কথাই বলি যে পরিমাণ বস্তি আছে, তারা তো ঘরের ভেতরেই সামজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছে না। তারা বাইরে এটা কীভাবে মেনে চলবে? তাদের জন্য এটা বড় মুশকিল যারা একদিন বাইরে না গেলে খাবারটা আনতে পারে না। এ জায়গায়াটায় আমরা সবাই মিলে যদি সাহায্য করতে পারি, অবদান রাখতে পারি, আমার কাছে মনে হয় সাময়িকভাবে এই বিপদ থেকে উতরাতে পারব।’
এসএএস/এমএস