চুপ! একদম চুপ!!
পচেফস্ট্রমের সেনওয়েজ পার্কে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল দেখতে গ্যলারিভর্তি দর্শক। স্বাভাবিকভাবেই ফাইনালের দুই প্রতিযোগি বাংলাদেশ এবং ভারতের সমর্থকরাই উপস্থিত মাঠে। তবে, তুলনামূলক ভারতের দর্শকের উপস্থিতিই বেশি গ্যালারিতে।
ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতীয় দর্শকদের নানা উত্তেজনাকর মন্তব্য মাঠের খেলোয়াড়দেরও দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। মাঠজুড়ে ভারতের সমর্থকদের আধিক্য, তাদের শো-অফ সব কিছুই ছিল প্রায় সীমার অতিরিক্ত।
বাংলাদেশের সমর্থকরাও ছিল। তারাও হই-হুল্লোড়, আনন্দ-উল্লাস করে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
ম্যাচের শুরুতেই টস জয় বাংলাদেশের। টস জিতে ভারতকেই ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের সামনে ধুঁকতে শুরু করে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। এরপর বোলিংয়ে এসেই ওপেনিং জুটিতে ভাঙন ধরান অভিষেক দাস।
৯ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর যশস্বি জাসওয়াল এবং তিলক ভার্মা মিলে ৯৬ রানের জুটি গড়ে ম্যাচকে বাংলাদেশের হাত থেকে বের করে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় গ্যালারিতে ভারতীয় সমর্থকরাও উন্মত্ত আচরণ শুরু করে দেয়। তাদের আক্রমণাত্মক মন্তব্য, স্লেজিং বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরও অনেকটা ক্ষেপিয়ে তোলে।
এ কারণেই যখন তানজিম হাসান সাকিব তিলক ভার্মাকে শরিফুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন, তখন সেই ক্যাচ ধরে গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুপ থাকার ভঙ্গি করেন শরিফুল।
এরপর, স্পিনার রাকিবুল হাসানকেও দেখা গেছে একই ভঙ্গিমায়। ভারতীয় সমর্থকদের চুপ থাকারই যেন নির্দেশ দিলেন রাকিবুল হাসান। এরপর শরিফুল বোলিংয়ে এসে পরপর দুই বলে যসশ্বি জাসওয়াল এবং সিদ্ধেস ভিরকে ফিরিয়ে দিয়ে যেন বাংলাদেশকেই খেলায় ফিরিয়ে আনেন।
কিন্তু যে দৃশ্যটি সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, সেটা হচ্ছে যসশ্বিকে আউট করার পর তার দিকে তাকিয়ে শরিফুলের মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুপ থাকার ইঙ্গিত করা। যেন বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছেন, ‘তোমরা নিজেদের নিয়ে অনেক বড়াই করেছো। এবার চুপ থাকো। আমাদের কৃতিত্ব দেখো।’
মূলতঃ ভারতকে ১৭৭ রানে অলআউট করে দিয়ে তাদের শৌর্য-বীর্যেই যেন আঘাত হানলেন বাংলাদেশের বোলাররা। শরিফুল, রাকিবুল, অভিষেক আর তানজিম হাসান সাকিবরা বুঝিয়ে দিলেন, সমালোচনার দিন শেষ। এবার আমাদের বিজয়গাঁথা দেখো ক্রিকেট বিশ্ব।
আইএইচএস/এমকেএইচ