বিশ্বকাপ ফাইনালে স্পটলাইট থাকবে যাদের ওপর
পুরো আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ ও ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট। আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে মুখোমুখি হবে দুই দল। যেখানে নির্ধারিত হবে চলতি আসরের চ্যাম্পিয়ন দল।
নিজ নিজ দলকে ফাইনালে তোলার পথে অসাধারণ সব নৈপুণ্য দেখিয়েছেন (বাংলাদেশের) তানজিদ হাসান, শাহাদাত হোসেন, মাহমুদুল জয়, রাকিবুল হাসান, (ভারতের) জশস্বি জাসওয়াল, কার্তিক ত্যাগি, রবি বিষ্ণু, দিব্বংশ সাক্সেনারা। এবার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে কে বা কারা হন দলের জন্য হিরো, সেটিই দেখার বিষয়।
তার আগে দেখে নেয়া যাক ফাইনাল ম্যাচে স্পটলাইট থাকবে যাদের ওপর
যশস্বি জাসওয়াল (উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, ভারত)
চলতি বিশ্বকাপের পাঁচ ইনিংসে ব্যাট করে তিন ফিফটির সঙ্গে একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ভারতের বাঁহাতি ওপেনার যশস্বি জাসওয়াল। এই ৫ ম্যাচে ১৫৬.০০ গড়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৩১২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। যে ম্যাচে পঞ্চাশ পেরুতে পারেননি, সে ম্যাচে জয়ের জন্য লক্ষ্যই ছিলো মাত্র ৪২, তিনি অপরাজিত ছিলেন ২৯ রানে। বাকি চার ম্যাচের জশস্বির ব্যাট থেকে এসেছে ৫৯*, ৫৭, ৬২* ও ১০৫* রানের ইনিংস।
আরও পড়ুনঃ গুরুর মুখে ‘ফুচকা বিক্রেতা’ ক্রিকেটারের জীবনের গল্প
শাহাদাত হোসেন (মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, বাংলাদেশ)
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত খেলেছে পাঁচ ম্যাচ। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়েছেন তিন ম্যাচে। যেখানে একবারও আউট হননি তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে শাহাদাতের অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল বড়সড় সংগ্রহ। এছাড়া সেমিফাইনালেও ৪০ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন এ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। চাপের মুখে বড় শট খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে আনার সামর্থ্য রয়েছে তার। এমনকি ডট বল খেলে ফেললেও, ঘাবড়ে না গিয়ে ইনিংস বড় করতে পারার গুণ তাকে বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে।
রবি বিষ্ণু (লেগস্পিনার, ভারত)
বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটে লেগস্পিনারের গুরুত্ব কত- তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দলে একজন লেগস্পিনার থাকার সুবিধা পাচ্ছে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলও। এখনও পর্যন্ত অন্তত দুইটি ম্যাচে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন লেগস্পিনার রবি বিষ্ণু। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৪ উইকেট নিয়ে জিতিয়েছেন দলকে। কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ নম্বরে ফিফটি হাঁকিয়ে এনে দিয়েছিলেন লড়াই করার পূঁজি। বল হাতে এখনও পর্যন্ত ১৩ উইকেট শিকার করেছেন বিষ্ণু। ফাইনাল ম্যাচেও তার দিকেই থাকবে চোখ।
তানজিদ হাসান তামিম (ওপেনার, বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ জাতীয় দলের তারকা ওপেনার তামিম ইকবাল, তার নামেই এবার আরেক ওপেনার রয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও। সিনিয়র তামিমের মতোই বাঁহাতি ব্যাটিং করে জুনিয়র তানজিদ হাসান তামিম। পাওয়ার প্লে'র পূর্ণ সুবিধা নিয়ে দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে তার। দ্রুতগতির শর্ট বলে দৃষ্টিনন্দন সব শট খেলে এরই মধ্যে বাহবা কুড়িয়েছেন তানজিদ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে তার ৮০ রানের ইনিংসটি টুর্নামেন্টেরই অন্যতম সেরা ব্যাটিং প্রদর্শনী। চলতি আসরে ১০৭.১৯ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছেন তানজিদ। যা বাংলাদেশকে দিয়েছে বাড়তি সুবিধা।
কার্তিক ত্যাগী (পেসার, ভারত)
পাওয়ার প্লে'তে নতুন বল কিংবা ডেথ ওভারে পুরনো বল- ভারতের অন্যতম ভরসার পাত্র ডানহাতি পেসার কার্তিক ত্যাগী। চলতি আসরে ৫ ম্যাচে মাত্র ৩.৪৯ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন তিনি। একজন পেসারের জন্য যা কি না অসাধারণের চেয়েও বেশি কিছু। দ্রুতগতির সঙ্গে নিখুঁত ইয়র্কার তার বিশেষ অস্ত্র। বাংলাদেশের বিপক্ষে ফাইনালে প্রথম স্পেলে যদি ছন্দ খুঁজে পেয়ে যান কার্তিক, তাহলে খারাপ কিছুই দেখতে হবে টাইগার ভক্তদের। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া পুরো টুর্নামেন্টে কার্তিকের শিকার ৪ উইকেট।
রাকিবুল হাসান (বাঁহাতি স্পিনার, বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের বোলিংয়ের মাঝের ওভারগুলোতে নির্ভরতার প্রতীক বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান। টুর্নামেন্টের পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনি বোলিং করেছেন চারটিতে। এরই মধ্যে একবার করে চার ও পাঁচ উইকেট নেয়া হয়ে গেছে তার। এক ম্যাচে করেছেন হ্যাটট্রিকও। কিপটে বোলিংয়ের জন্য বিশেষ সুনাম তার। চলতি টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ওভারপ্রতি মাত্র ৩.১০ করে রান খরচ করেছেন রাকিবুল। ফাইনাল ম্যাচে ভারতের রানের চাকা থামিয়ে রাখতে রাকিবুল ১০ ওভার গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য।
এসএএস/পিআর