মেয়ে হিন্দুদের পূজা নকল করায় টিভিই ভেঙে ফেলেন আফ্রিদি
দানিশ কানেরিয়ার ধর্ম বিষয়ে শোয়েব আখতারের বিতর্কিত মন্তব্যের জের ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটে শুরু হয়েছে তোলপাড়। শোয়েব ও কানেরিয়ার দাবি, শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে দলের অনেকের কাছ থেকে খারাপ ব্যবহার পেতে হয়েছে কানেরিয়াকে। যদিও পাকিস্তানের তখনকার খেলোয়াড়রা এ অভিযোগ শুরু থেকেই উড়িয়ে দিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ক আলোচনা যখন তুঙ্গে, তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলো শহীদ আফ্রিদির একটি ভিডিও ক্লিপ। যেখানে তিনি সাফ জানিয়েছেন নিজের হিন্দু বিদ্বেষের কথা। শুধু তাই নয়, ছোট মেয়ে টিভি সিরিয়াল দেখে হিন্দুদের পূজা নকল করায় সেই টিভিই ভেঙে ফেলেছিলেন আফ্রিদি।
নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক মিনিটের ভিডিও ক্লিপটি মূলত ২০১৭ সালের ২৪ মার্চের। পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল এয়ারি টেলিভিশনে নিদা ইয়াসিরের উপস্থাপনায় হওয়া ‘গুড মর্নিং পাকিস্তান’র সেই পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আফ্রিদি ও জিসান আফজাল।
অনেক কথার ভিড়ে উঠে আফ্রিদির টিভি দেখার বিষয়ে আলোচনা। যেখানে তিনি বলেন যে, টিভির প্রতি তার খুব একটা আগ্রহ নেই, এমনকি বাসায়ও অন্যরা সে অর্থে টিভি দেখে না। টিভির ব্যাপারে নিজের স্মরণীয় একটি ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে হিন্দু বিদ্বেষ ফুটে ওঠে আফ্রিদির কণ্ঠে। এসময় পূজার আরতি নিয়েও ব্যঙ্গ করেন আফ্রিদি।
This is reality of secularism in Pakistan, TVs are broken for showing Hindu rituals & people applaud it pic.twitter.com/PXKcs5wcyf
— Amit Kumar Sindhi (@AMIT_GUJJU) December 28, 2019
তিনি বলেন, ‘আমি এরই মধ্যে একবার টিভি ভেঙে ফেলেছি। আমার স্ত্রীর কারণে টিভিটা ভেঙেছিলাম আসলে। তখন আমাদের এখানে স্টার প্লাসের সিরিয়ালগুলো চলতো খুব। আমি আমার স্ত্রীকে বলতাম যে, আপনি দেখলে একা টিভি দেখবেন। বাচ্চাদের টিভি দেখতে দিয়েন না। তো একদিন আমার ঘর থেকে বের হওয়ার পর দেখি, আমার মেয়ে টিভি দেখে হাত কেমন কেমন ঘোরাচ্ছিল।’
আফ্রিদি বেশ কয়েকবার ব্যঙ্গাত্মক সুরে হাত ঘুরিয়ে পূজার আরতির কথা বোঝানোর সময় হেসেই খুন হয়ে যান উপস্থাপক নিদা ইয়াসির। তবে তিনি বলে দেন, ‘এটি ছিলো পূজার আরতি।’ আফ্রিদি তখন বলেন, ‘জানি না আমার কী হলো তখন। আমি আমার হাতের ধাক্কায় দেয়ালের মধ্যেই টিভিটি আছড়ে ভেঙে ফেললাম। সেবারই টিভি ভেঙেছিলাম।’
আফ্রিদির কথা শেষ হতেই করতালিতে মুখর হয় অনুষ্ঠানের সেট। যা রীতিমতো অবাক করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের। এমন ধর্ম বিদ্বেষী মন্তব্যে কীভাবে সমর্থন জানানো যায়, তাই যেনো ভেবে পাচ্ছেন না অনেকে। যথারীতি এ ভিডিওকে ঘিরেও দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে ভারত ও পাকিস্তানের টুইটার ব্যবহারকারীরা।
এ ভিডিও ক্লিপটি দুই বছর আগের হলেও, সম্প্রতি দানিশ কানেরিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ধর্ম বিদ্বেষের ইস্যুতে ফের আলোচনায় এসেছে। যা কি না অনেকের মনে সন্দেহের উদ্রেক তৈরি করেছে যে, আসলেই হয়তো পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে ধর্ম বিদ্বেষের শিকার হতেন কানেরিয়া।
এসএএস/পিআর