বিপিএল-পিএসএলে ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন নাসির

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৪৫ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেছিলেন ম্যাচ ফিক্সিংয়ে নিজের সম্পৃক্ততার কথা। যে কারণে ডাকতে হয়েছে আনুষ্ঠানিক শুনানি। সেই শুনানির শুরুতেও জোর দিয়ে নিজের নির্দোষ থাকার কথা বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার নাসির জামশেদ।

কিন্তু খুব বেশিদিন নিজের অবস্থানে অনড় থাকতে পারলেন না তিনি। জেরার একপর্যায়ে ঠিকই স্বীকার করে নিয়েছেন নিজের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা এবং ম্যাচ ফিক্সিং করতে সতীর্থ খেলোয়াড়দের ঘুষ দেয়ার কথা।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই যুক্তরাজ্য নাগরিক ইউসুফ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইজাজের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল নাসির জামশেদকে। যার জের ধরে, ২০১৬ সালের পাকিস্তান সুপার লিগে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ মেলায় ২০১৮ সালের আগস্টে নাসিরকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল পিসিবি (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড)।

তবু চলছিলো তার শুনানি। বিশেষ করে সতীর্থ খেলোয়াড়দের ফিক্সিংয়ের জন্য ঘুষ প্রদানের অপরাধেই আনুষ্ঠানিক শুনানির ব্যবস্থা করে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট। যেখানে নিজের প্রাথমিক বয়ানে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন নাসির। তবে শুনানির প্রথম দিনেই নিজের প্রাথমিক বক্তব্য পাল্টে সব দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

নাসিরের মাধ্যমেই ইউসুফ ও ইজাজ অন্যান্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব নিয়ে যোগাযোগ করে। শুনানির শুরুতে প্রসিকিউশন কর্মকর্তা অ্যান্ড্র থমাস জানান, তাদেরই একজন পুলিশ অফিসার কৌশলে ফিক্সার নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করে এবং আনোয়ারের সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করে। যেখান থেকে ক্রিকেটে জুয়ার সিন্ডিকেটের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

পাকিস্তানি ওপেনারের বিষয়ে তদন্ত করে জানা গিয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২০১৬ সালের আসরে ২টি ম্যাচ এবং একই বছর পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ১টি ম্যাচে ফিক্সিং করার পরিকল্পনা করেছিলেন নাসির। পিএসএলের ফিক্সিং সফলভাবে সম্পন্ন হলেও, বিপিএলে আসলে ফিক্সিং করতে পারেননি তিনি।

নাসিরের এই ফিক্সিংয়ে সরাসরি সহায়তা করেছিলেন পাকিস্তানের আরেক ওপেনার শারজিল খান। যিনি পিসিবি কর্তৃক পেয়েছিলেন ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা। পিএসএলের এক ম্যাচে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম দুই বল ডট খেলেন শারজিল। যা তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন নাসির।

একইভাবে বিপিএলেও নাসির-শারজিল মিলে করেছিলেন ফিক্সিংয়ের পরিকল্পনা। ২০১৬ সালের আসরে তারা দুজনই ছিলেন রংপুর রাইডার্সে। কিন্তু দুইবার চেষ্টা করেও তা সফলভাবে করতে পারেননি তারা। কেননা প্রথমবার ব্যাটিংয়ের সময় বাহারি গ্রিপ ব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথ সিগনাল পাঠাতে ভুলে যান নাসির। আর পরেরবার একাদশেই ছিলেন না শারজিল।

তদন্তে উঠে এসেছে এ সবকিছুই। যা স্বীকার করে নিয়েছেন নাসির। তার সঙ্গী হিসেবে পরিচিত ইউসুফ আনোয়ারের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল ২০১৬ সালের নভেম্বরে। আনোয়ারের দাবি বিপিএলে অন্তত ৬ জন ক্রিকেটার তার হয়ে কাজ করেছেন।

এ সবকিছুর ওপর ভিত্তি করেই নাসির জামশেদ, ইউসুফ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইজাজকে কারাদণ্ড দিতে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট। আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে।

এসএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।