‘ফাইনালটা জিততে পারতাম, যদি...’

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

সকালের সূর্য যেমন সবসময় গোধূলির আভাস দেয় না, তেমনি আজ দিনের শুরুর সঙ্গে মিললো না বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের বাকিটা সময়। টস জিতে বোলিং করতে নেমে ইনিংসের ৮ম ওভারের মধ্যে সাজঘরে ফেরানো হয়েছিল দুই ওপেনারকে, মিলেছিল দারুণ সূচনা।

কিন্তু এরপর আর চেপে ধরা হয়নি পাকিস্তান ইমার্জিং দলকে। জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন পাকিস্তানের দুই টপঅর্ডার রোহাইল নাজির ও ইমরান রফিক। এরপর বল হাতেও বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের টুঁটি চেপে ধরতে সক্ষম হয়েছে মোহাম্মদ হাসনাইন, খুশদিল শাহরা।

যার ফলে পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেললেও, শেষপর্যন্ত ফাইনালে এসেই ডুবেছে বাংলাদেশের শিরোপা স্বপ্নের তরী। আরও একবার ফাইনালে পৌঁছে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। অথচ গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচ কিংবা সেমিফাইনালে সহজ জয়ের পর বাংলাদেশকেই ধরা হয়েছিল ফাইনালের ফেবারিট।

আগের চার ম্যাচের সবকয়টিতেই বাংলাদেশকে জিতিয়েছিল টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান নাইম শেখ, সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ সব ইনিংস। শেষদিকে ফিনিশিং দিয়েছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও ইয়াসির আলি রাব্বিরা। যার ফলে কোনো ম্যাচেই মিডল অর্ডারকে পরীক্ষা দিতে হয়নি।

আজ ফাইনাল ম্যাচে এসে ব্যর্থ হয়েছে নাইম শেখ, সৌম্য সরকাররা; দায়িত্ব বর্তায় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ওপর। পাকিস্তানের করা ৩০১ রানের সংগ্রহ টপকে যেতে যে কোনো একটি বড় জুটিই যথেষ্ঠ হতো। কিন্তু নাজমুল শান্ত, আফিফ ধ্রুবরা ভালো শুরুর পরেও নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি, আউট হয়েছেন চল্লিশের ঘরে গিয়ে। মাশুল দিয়েছে বাংলাদেশ, শিরোপা হাতছাড়া করেছে ৭৭ রানে হেরে।

ফেবারিট হিসেবে খেলতে নেমে এত বড় হার, নিশ্চয়ই হতাশার বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের জন্য? এত কাছে গিয়ে শিরোপা হারানোর ব্যর্থতাটাও হয়তো মেনে নেবে দল। কিন্তু না! ম্যাচ শেষে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ভাষ্যমতে, এ পরাজয়টি আসলে দলের জন্য ব্যর্থতা বা হতাশা- কিছুই নয়। তবে ম্যাচটি জেতা উচিৎ ছিলো বলে মনে করেন তিনি।

ইমার্জিং দলের অধিনায়ক বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটা (ফাইনালের হার) হতাশা ব্যর্থতা কোনো কিছুই না। আমার মনে হয় এমন বড় ম্যাচে আরেকটু বুঝে- শুনে খেলা উচিত ছিল। যে রকম উইকেট ছিল রানটা চেজেবল ছিল। ফিল্ডিংয়ে আমরা কিছু ভুল করেছি, সেটা না করলে আরেকটু ভালো হতো।’

টস হেরে আগে ব্যাট করে ৩০১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু তাদের দলীয় সংগ্রহ হতে পারতো আরও অনেক কম। ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায় ইয়াসির রাব্বির বদৌলতে জীবন পেয়ে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন ফাইনাল সেরা রোহাইল নাজির। পরে আরও দুইটি ক্যাচ ছাড়েন ইয়াসির।

তিন ক্যাচ মিসের প্রায়শ্চিত্ত করা যেত ব্যাট হাতে; কিন্তু দুই ওপেনার সৌম্য ও নাইম দ্রুত আউট হওয়ার পর আর জুটি গড়তে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। ভালো শুরুর পরেও বড় হয়নি কারও ইনিংস। ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এসব ভুলত্রুটির কথাই বলে যান অধিনায়ক।

শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় বড় ম্যাচে আমাদের প্ল্যানিং যেটা, সেই অনুযায়ী যদি খেলতে পারি তাহলে জেতা সম্ভব। আজকে আরেকটু রিলাক্স থাকা উচিত ছিল। ফিল্ডিংয়ের বেশ কয়েকটা ভুল হয়েছে, কিছু ওভার ওরা পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পারেনি, ব্যাটিংয়েও বড় জুটি হয়নি। আমরা যদি নরমাল ম্যাচের মতো রিলেক্স থাকতে পারি, (পরবর্তীতে) ফাইনালেও ভালো কিছু সম্ভব।’

‘শুরুটা ভালো হলে পরের ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধা হতো। উইকেটটা যেমন ছিল, যেকোনো একটা বড় জুটি হলেই জেতা যেত। আমাদের পরিকল্পনা ছিল উইকেট হাতে রাখা। শেষ দশ ওভারে ১০০ রান দরকার থাকলে সেটাও সম্ভব ছিল।’

এসএএস/আইএইচএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।