শেষ পর্যন্ত ৪ স্পিনার ৩ পেসারেই সাজানো হলো টেস্ট স্কোয়াড

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ এএম, ৩১ আগস্ট ২০১৯

জাগো নিউজের পাঠকরা আগেভাগেই জেনে গিয়েছিলেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে থাকছে না কোন নতুন মুখ। সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত আর আফিফ হোসেন ধ্রুবকে নিয়ে কথা উঠলেও তারা কেউ থাকবেন না, তা আগেই জানা হয়ে গিয়েছিল। জানা ছিল, দল হবে ১৫ জনের। তাতে থাকবেন ৩ পেসার আর ৪ স্পিনার।

ঠিক তাই। গতকাল ৩০ আগস্ট শুক্রবার যে দল ঘোষণা হয়েছে, তাতে আছেন তিন পেসার-তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহি আর এবাদত হোসেন।

আর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাথে স্পিনার হিসেবে দলে জায়গা হয়েছে আরেক বাঁহাতি তাইজুল ইসলাম এবং দুই অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসানের।

দল সম্পর্কে পূর্ব ধারণাটি মোটামুটি পরিষ্কার হলেও একটি জায়গায় হিসেবে মেলেনি শেষ পর্যন্ত। বলা হয়েছিল- তামিম ইকবাল যেহেতু নেই, ছুটিতে। তাই সাদমান ইসলামের সঙ্গী হিসেবে প্রথমে নবীন কাউকে নেয়ার ইচ্ছে থাকলেও পরে সেখান থেকে সরে এসে অভিজ্ঞ কাউকে দলে নেয়ার সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত। প্রশ্ন ছিল জহুরুল ইসলাম অমি, না ইমরুল কায়েস?

শুরুতে জহুরুল ইসলাম অমির নাম বেশি শোনা গেলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে ইমরুল কায়েস চলে আসেন আলোচনায়। দল চূড়ান্ত করার ঠিক আগের দিন মানে ২৯ আগস্ট মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়, সাদমান ইসলামের ওপেনিং পার্টনার হিসেবে আরেক বাঁহাতি ইমরুল কায়েসকেই রাখা হচ্ছে।

কিন্তু একদম শেষ মুহূর্তে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন নির্বাচকরা। নেব নেব করেও শেষ পর্যন্ত ইমরুল কায়েসকে নেননি তারা। জহুরুল ইসলাম অমিও বিবেচনায় আসেননি। তার বদলে দলে রাখা হয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনকে।

গতকাল শুক্রবার থেকে যে দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু হয়েছে, তাতে সাকিবের নেতৃত্বাধীন লাল দলের হয়ে মিঠুন ওপেনও করেছেন। যদিও কিছুই করতে পারেননি। ১৪ বলে ১ রান করে আউট হয়ে গেছেন।

অর্থাৎ নির্বাচকরা সাদমানের সাথে কোন প্রতিষ্ঠিত টেস্ট ওপেনারকে নেননি। সাদমানের সঙ্গী হিসেবে মূলত সৌম্য সরকারের ওপরই নির্ভর করা হয়েছে। আর বিকল্প চিন্তা হিসেবে মিঠুনকে ধরা হয়েছে।

কেন শেষ মুহূর্তে ইমরুলের জায়গা হলো না? তার ব্যাখ্যা গতকাল দিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। ইমরুলের ছেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। তার দেখভাল করতে হচ্ছে ইমরুলকেই। তাই শেষ মুহূর্তে অনুশীলন করা হচ্ছেনা এবং খুব স্বাভাবিকভাবে মনোযোগ আর মনোসংযোগটাও আছে ছেলের দিকে। তাই তাকে টেস্ট দলে না রাখাকেই উত্তম মনে করেছেন নির্বাচকরা। তাই ইমরুল নিজেকে খানিক দূর্ভাগা ভাবতেই পারেন।

ওদিকে তিন পেসার ফর্মুলা ঠিক আছে। কিন্তু যাকে অটোমেটিক চয়েজ ভাবা হচ্ছিল, সেই বাঁহাতি মোস্তাফিজুর রহমান নেই। তার দলে না থাকাও রীতিমত বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে তার জবাবও দিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। মোস্তাফিজ কন্ডিশনিং ক্যাম্প মানে ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের সময় পিঠে ব্যথা পেয়েছেন। নির্বাচকদের কথা শুনে মনে হলো ব্যথা যে খুব গুরুতর, তা নয়। তবে যেহেতু সামনেই তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আর নভেম্বরের একদম প্রথমেই ভারত সফর (দুই টেস্ট এবং তিন টি-টোয়েন্টি ), তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে মোস্তাফিজকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে।

ইনজুরি মুক্ত হয়ে এখন ভাল বোলিং করার কারণে তাসকিন আহমেদকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। আর আবু জায়েদ রাহি আগে ভাল করার কারণে থেকে গেছেন। খালেদ আহমেদও ছিলেন বিবেচনায়। কিন্তু এ বছর মার্চে নিউজিল্যান্ডে অভিষেক হওয়া এ দ্রুত গতির বোলার পুরোপুরি ফিট নন। তাকেও ইনজুরি গ্রাস করেছে। কাজেই তার বদলে আরেক দ্রুত গতির বোলার ইবাদত হোসেন জায়গা পেয়েছেন।

এর বাইরে কোনই চমক নেই। আর যাদের থাকার কথা, সেই অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাথে ওপেনার সাদমান ইসলাম, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ঠিকই আছেন। শুধু মিঠুনই তেমন আলোচনায় ছিলেন না। বোঝাই গেছে, তাকে আসলে বিকল্প ওপেনার হিসেবে চিন্তা করা হয়েছে।

এআরবি/এমএমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।