তরুণরা এলে তার ক্যারিয়ার হুমকিতে পড়বে, মনে করেন না মাহমুদউল্লাহ
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের সেরা পারফরমার। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানোর পাশাপাশি একজোড়া শতক উপহার দিয়ে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
তারপর ২০১৭ সালে এই যুক্তরাজ্যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিবের সাথে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাকিয়ে দলকে অবিস্মরণীয় জয় উপহার দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভক্ত ও সমর্থকরা অনেক আশায় ছিলেন, এবার বিশ্বকাপে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন রিয়াদ। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে উল্টো। নিজেকে খুঁজেই পাননি ‘পঞ্চ পান্ডবের’ এ অন্যতম সদস্য।
একমাত্র অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি ( ৬৯) ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি। বিশ্বকাপের ঠিক পরপরই শ্রীলঙ্কায় গিয়েও চরম ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ। তিন ম্যাচে করেছেন সাকুল্যে ১৮ রান। শুধু রান করতে না পারার কারণেই নয়, রিয়াদকে শারীরিকভাবেও শতভাগ সুস্থ ও চাঙ্গা মনে হয়নি।
বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন কাঁধের ব্যথা তথা ইনজুরি নিয়ে। থ্রো করতে সমস্যা হতো। বোলিং তো করতেই পারেননি। আর বিশ্বকাপের সময় কাফ মাসলে টান পড়ে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ে যাওয়া। অবস্থা এমন হয়েছে যে, অতিবড় মাহমুদউল্লাহ সমর্থকও আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কি জানি ক্যারিয়ার বুঝি যায় যায়! মুখে তার নাম না বললেও নির্বাচকরা ভিতরে ভিতরে তার বিকল্পও খোঁজা শুরু করে দিয়েছিলেন।
মোদ্দা কথা, ক্যারিয়ারে একটা কঠিন সময়ের মুখোমুখি মাহমুদউল্লাহ। এর মধ্যে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আওয়াজও দিয়ে ফেলেছেন, টি-টোয়েন্টি দলে পরিবর্তন আসতে পারে। কিছু সম্ভাবনাময় তরুণকে তারা হয়ত ঘরের মাঠে তিন জাতি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে পরখ করে দেখবেন।
নাইম শেখ, সাইফ হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুবদের মত সম্ভাবনাময় তরুণদের নামও উচ্চারিত হয়েছে। এই বিষয়টা রীতিমত ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি, চ্যালেঞ্জও। কি ভাবছেন মাহমুদউল্লাহ? নিজের ক্যারিয়ারের খারাপ সময়ে তরুণদের উত্থানকে কিভাবে নিচ্ছেন?
আজ সাংবাদিকদের কাছ থেকে এ প্রশ্ন পেয়ে মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ইতিবাচক কথাই বলেছেন। তারও কথা, ‘দলের ভেতরে ও বাইরে একটা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকা খুব দরকার। তাহলে দলে থাকা ও ঢোকার জন্য একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। যেটা আসলে দলের জন্যই মঙ্গল। তাতে করে সবারই ভাল খেলার তাড়া থাকে।’
মাহমুদউল্লাহ প্রশ্ন কর্তার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি জানি না আপনি কোনদিক থেকে কি বুঝাতে চেয়েছেন, তবে আমি সবসময় স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতাকে স্বাগত জানাই। কারণ এটা না থাকলে ক্রিকেটে কখনো উন্নতি হবে না। আর আমাদেরও উন্নতি হবে না। তাই আমি প্রতিযোগিতা সবসময় উপভোগ করি আর এটা আমাদের সবার জন্যই ভালো।’
সাইফ-আফিফদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে না নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টিকে আমি খুব ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি। আপনি যাদের নাম বললেন ওরা কয়েক বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক ভাল করছে। তারা সকলেই অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়।’
নিজের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে, রিয়াদের চোখ মুখ দেখে অবশ্য তা মনে হয় না। নিজেকে এখন মোটামুটি ইনজুরিমুক্তই দাবি করলেন তিনি, ‘আল্লাহর রহমতে আমার কাফ মাসলে যে ব্যথাটা ছিল সেটা অনেক কম। এখন শতভাগ ফিট আমি। গতকাল টেপিং, রানিং করলাম। আর কাঁধের রেঞ্জ আগের চেয়ে অনেক ভালো। ফিজিও বায়েজিদ ভাই এবং ডাক্তার দেবাশিষ দা পরীক্ষা করলেন। আমার সেই হিসেবে রেঞ্জ আল্লাহর রহমতে অনেক বেশি ভালো। ইনশাআল্লাহ, আজকে থেকে বোলিংও শুরু করবো।’
রিয়াদের অনুভব-উপলব্ধি ও শেষ কথা, ‘পরিশ্রমের বিকল্প নেই। আমি সবসময় বলি এবং বিশ্বাস করি। আপনি যতো বেশি পরিশ্রম করবেন এর ফলাফল আপনি পাবেন, অবশ্যই পাবেন। আমি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত।’
এআরবি/এমএমআর/পিআর