অভিষেকেই অনন্য রেকর্ডে ‘২০০ রুপি’র সেই বোলার
শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে চোখ ধাঁধানো বোলিং করেছেন ভারতের ২৬ বছর বয়সী পেসার নবদীপ সাইনি। তার একার বোলিংয়ের কাছেই হেরে গেছে ক্যারিবীয়রা। চার ওভারের স্পেলে মাত্র ১৭ রান খরচায় নিয়েছেন ৩টি উইকেট, ছিলো একটি মেইডেন ওভারও।
আর মেইডেনটিও কি-না ইনিংসের শেষ ওভারে! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শেষ ওভারে মেইডেন নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য এক কীর্তি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাইনির আগে এ অসাধারণ নজির দেখিয়েছেন মাত্র তিনজন বোলার। নিজের অভিষেক ম্যাচেই চতুর্থ বোলার হিসেবে এ তালিকায় ঢুকে গেছেন সাইনি।
অথচ বছর ছয়েক আগেও ক্রিকেট বল ধরেও দেখেননি ভারতের উদীয়মান এ গতিতারকা। পাড়া-মহল্লায় টেপ টেনিস দিয়ে খ্যাপ খেলাই ছিলো তার নেশা। বিনিময়ে প্রতি ম্যাচের জন্য পেতেন মাত্র ২০০ রুপি করে। সেই ডানহাতি পেসার নবদীপ সাইনিই এবার ৬ বছরের মাথায় খেলতে নামলেন ভারতের জাতীয় দলের হয়ে এবং প্রথম ম্যাচেই ঢুকে গেলেন অনন্য এক রেকর্ডে।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের প্রথম তিন ওভারে ১৭ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছিলেন সাইনি। তাই তাকেই শেষ ওভারের জন্য ডাকেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তখন স্ট্রাইকে ছিলেন উইন্ডিজের ইনিংসকে একাই টানতে থাকা কাইরন পোলার্ড, খেলছিলেন ৪৯ রান নিয়ে।
নিজের অর্ধশতক থেকে মাত্র ১ রান দূরে থাকা অবস্থায়ই শেষ ওভারের প্রথম দুই বল ডট খেলেন পোলার্ড। তৃতীয় বলে ধরা পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে। সাইনির সে ওভারের পরের তিন বল থেকেও কোনো রান করতে পারেননি ওশানে থমাস। যার ফলে ইতিহাসের মাত্র চতুর্থ বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০তম ওভারে মেইডেন দেয়ার রেকর্ড গড়েন সাইনি।
টি-টোয়েন্টিতে ইনিংসের শেষ ওভারে মেইডেন দেয়ার প্রথম ঘটনাটাও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। ২০০৮ সালের নিউজিল্যান্ডের অফস্পিনার জিতান প্যাটেল প্রথমবারের মতো দেখিয়েছিলেন এ কীর্তি। শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৩৭ রান। সে ওভার করতে এসে কোনো রান না দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছিলেন জিতান। মজার বিষয় হলো এরপর নিউজিল্যান্ডের হয়ে আর টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি এ স্পিনারের।
জিতানের বছরদুয়েক পর ২০১০ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ওভারে মেইডেন নেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করছিল অস্ট্রেলিয়া, ১৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান করে ফেলে তারা। লক্ষ্য ছিলো ২০০’র বেশি সংগ্রহ দাঁড় করানো।
কিন্তু শেষ ওভার করতে এসে কোনো রানই খরচ করেননি আমির, উল্টো ছয় বলের মধ্যে শেষের ৫ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সে ওভারের ছয়টি বল ছিলো এমন: W W W W 0 W। তবে সবকয়টি উইকেটই আমিরের নয়। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে রানআউট হওয়ায় হ্যাটট্রিক হয়নি তার। তবে শেষ ওভারে ৫ উইকেট পড়ার ঘটনাও বেশ সাড়া ফেলেছিল তখন।
আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ ওভারে মেইডেন দেয়ার সবশেষ ঘটনাটি চলতি বছরেরই। দুই সহযোগী দেশ কাতার ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার ম্যাচে এ কীর্তি গড়েন সিঙ্গাপুরের বোলার জানাক প্রকাশ। এ তালিকায় চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে যোগ হয়েছেন ভারতের নবদীপ সাইনি।
এসএএস/পিআর