ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ে বাধা হতে পারে যে বিষয়গুলো

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৯

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপরই মাঠে গড়াচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপের জমজমাট ফাইনাল। নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞ আয়োজনের জন্য প্রস্তুত ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডস। ফাইনালে মুখোমুখি দুই দলের মধ্যে কে জিতবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্রিকেটে যে নতুন এক চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে বিশ্ব, তা একদম নিশ্চিত।

রোববারের ফাইনালে স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের ওপর। একে তো ঘরের মাঠ, তার উপর ২৭ বছর পরে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দেশটি। তাই ফেবারিট হলেও খুব একটা ফুরফুরে মেজাজে নেই তারা। কেননা ফাইনালের অপর দল নিউজিল্যান্ড যে তাদের থেকে কোনো অংশে কম নয়!

তাই প্রথমবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা পেতে হলে অনেক বেগ পোহাতে হবে ইংলিশদের। পেরোতে হবে অনেক বাধা। বিশ্বকাপের ফাইনালে যে সব বাধার সম্মুখিন হবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড, তার খুঁটিনাটি বের করার চেষ্টা করেছে বিখ্যাত ইংলিশ ম্যাগাজিন উইজডেন। সেগুলোই তুলে ধরা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য।

গাপটিল বনাম আর্চার-ওকস
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস খেলার পর মার্টিন গাপটিল আভাস দিয়েছিলেন এই আসরে ভালো কিছু করার; কিন্তু এরপর পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই উল্টোচিত্রটা দেখিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। সেই ম্যাচ থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত একদমই ফ্লপ তিনি। সুতরাং, গাপটিলের ব্যাট চুপ করে থাকাটা চিন্তার কারণ হতে পারে ইংলিশদের জন্য। কেননা, নিজের দিনে যে কি করতে পারেন এই ব্যাটসম্যান তা খুব ভালো করেই জানে সবাই। সেই দিনটা যদি ফাইনাল ম্যাচের জন্য নির্ধারিত থাকে, তাহলে বড়সড় এক বিপদে পরতে হবে ইংল্যান্ডকে।

archer-gupitll

সুতরাং, ইংল্যান্ডের উচিত প্রথম দশ ওভারের মধ্যেই গাপটিলের উইকেট নেয়া। তার জন্য কঠিন এই কাজটা করতে হবে দুই ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস এবং জোফরা আর্চারকে। গাপটিলের দুর্বলতা খুঁজে ফাইনালে শুরুতেই তাকে আউট করে নিজেদের আবারো প্রমাণ করতে হবে এই দুই ইংলিশ পেসারকে।

ইংল্যান্ড বনাম ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাদের দুঃস্বপ্নময় অতীত
ক্রিকেটের জনক হলেও এখনো পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপার ছোঁয়া পায়নি ইংলিশরা। এর আগে তিনবার ফাইনাল খেললেও প্রতিবারই হারের মুখ দেখেছে দেশটি। ১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে তারা।

1992-final

এই দুঃস্বপ্নময় অতীতের বোঝা কাঁধে নিয়েই ২৭ বছর পর আবারো ফাইনালে নামতে হবে থ্রি লায়ন্সরা। শিরোপা জিতলে হয়ত এই অতীতগুলো আর কেউ মনে রাখবে না হয়তো; কিন্তু শিরোপা হাতছাড়া করলে আরো একটি ফাইনাল হারের বোঝা বহন করতে হবে দেশটিকে।

মরগ্যানের ব্যাটিং বনাম ফার্গুসনের বাউন্সার
চেহারার গাট-গঠন দেখে ব্রিটিশদের মতো মনে হলেও আদতে নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেন স্পিডস্টার লকি ফার্গুসন। ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলারদের মধ্যে একজন তিনি। আর বিশ্বকাপেও রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। ৮ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় চার নম্বরে অবস্থান করছেন এই বোলার। তার দুর্দান্ত গতির বাউন্সার সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বড়সড় বাঘা ব্যাটসম্যানদের।

morgan-pull

ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোয় ফার্গুসনের করা সেই বাউন্সারগুলো সামলাতে হবে ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানকে। কেননা এই বিশ্বকাপে বাউন্সারেই সবচেয়ে বেশি ভুগছেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের বিপক্ষে শর্ট বলে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন তিনি। তাই তার এই দুর্বলতার সুযোগ নিতে নিশ্চয়ই কোনো ভুল করবেন না ফার্গুসন।

তিন নম্বর পজিশনের লড়াই
বর্তমানে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকা করলে উপরের সারিতেই নাম থাকবে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং ইংল্যান্ডের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান জো রুটের। দলের হয়ে তিন নম্বর পজিশনেই ব্যাট করেন তারা। তার উপর বিশ্বকাপে দু’জনেই আছেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় নিজ নিজ দলের হয়ে শীর্ষে আছেন এই দুই ব্যাটসম্যান।

williamson

সুতরাং, বলাই যায় ফাইনালে তিন নম্বর পজিশনে জমজমাট এক লড়াই দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। কারণ, দুই ব্যাটসম্যানের কাছেই সুযোগ আছে আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে ওঠার। তবে ইংল্যান্ডের জন্য যেমন রুটের রান করাটা জরুরি, তেমনি উইলিয়ামসনের জ্বলে না ওঠাটাও জরুরি। কারণ প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলছেন এই কিউই ব্যাটসম্যান। দুয়ে-দুয়ে চার মিলে গেলেই ইংলিশদের লাভ। তাই কালকের ম্যাচে উইলিয়ামসনকে যতদ্রুত সম্ভব আউট করতে চাইবে ইংলিশ বোলাররা।

লড়াই হবে ধারাভাষ্যকক্ষেও
ফাইনালে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের লড়াইটা শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের উত্তেজনার ঝাঁজ থাকবে ধারাভাষ্যকক্ষেও। কথার লড়াইয়ে মেতে উঠবেন ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড- দুই দেশের ধারাভাষ্যকাররা। যেমনটা হয়ে যাচ্ছে প্রতিটি ম্যাচেই। তাদের সেই শ্রুতিমধুর কণ্ঠের সঙ্গে ম্যাচ দেখার রোমাঞ্চটা যেন এক অনন্য উচ্চতায় উঠে আসে।

Comentators

আসরের প্রথম সেমিফাইনালে গাপটিলের দুর্দান্ত থ্রোতে মহেন্দ্র সিং ধোনির রানআউটের সময় ইয়ান স্মিথের ধারাভাষ্য এখনো মানুষের কানে লেগে আছে। তার মুখের বুলির কারণে ম্যাচের উত্তেজনা আরো কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছিল।

সেমিফাইনালের মতো ফাইনাল ম্যাচেও ধারাভাষ্যে থাকবেন ইয়ান স্মিথ। এবং তার সঙ্গে থাকবেন ইংল্যান্ডের নাসির হুসেইন, মাইক আথারটনসহ অন্য ধারাভাষ্যকাররা।

এএইচএস/আইএইচএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।