আক্ষেপ রয়েই গেছে লিটনের

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা লন্ডন থেকে
প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ০৬ জুলাই ২০১৯

‘চেষ্টা করেছি, পারিনি’ -লিটন দাসের আক্ষেপটা রয়েই গেছে। সাফল্য আর ব্যর্থতার মিশেলে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ। কিন্তু লিটনের মনের কষ্টটা কাটলো না, জীবনের প্রথম বিশ্বকাপে যা চেয়েছিলেন সেটা যে করতে পারেননি!

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ একাদশে সুযোগ পাওয়াই কঠিন ছিল লিটনের। ওপেনিং পজিশনটা তামিমের সঙ্গে শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন সৌম্য সরকার। লিটনকে তাই শুরুর চার ম্যাচ সাইডলাইনেই বসে থাকতে হয়।

মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যর্থতায় পঞ্চম ম্যাচে এসে মিডল অর্ডারে সুযোগ মেলে ওপেনার লিটনের। আর টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই খেলেন ৬৯ বলে হার না মানা ৯৪ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। তারপর আর একাদশের বাইরে ছিটকে পড়েননি। পরের সবগুলো ম্যাচই খেলেছেন।

কিন্তু খেললে কি হবে, প্রথম ম্যাচের মতো পরেরগুলোতে আর জ্বলে উঠতে পারেননি। প্রতিবারই দারুণ শুরুর পর উইকেট দিয়ে এসেছেন। শেষ চার ইনিংসে লিটন আউট হন-২০, ১৬, ২২ আর ৩২ রানে।

শুরুর মতো কি শেষটা হলো? লিটনও মানছেন, প্রত্যাশামতো শেষটা করতে পারেননি। আক্ষেপভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে যখন আসি…প্রত্যেক খেলোয়াড়ের তো একটা স্বপ্ন থাকে। যেহেতু ব্যাটসম্যান, রান করবোই। প্রথম ম্যাচ খেলার পর যেই আত্মবিশ্বাস পেলাম, মনে হলো দলের জন্য আরও অবদান রাখতে পারব। কিন্তু ওরকমভাবে পারিনি। আমি প্রতিদিনই ভালো শুরু পেয়েছি কিন্তু শেষ করতে পারিনি। এই দিক থেকে আমি খুশি না। আমার মনে হয় তিনটা ম্যাচে দুটি ফিফটি পাওয়া উচিত ছিল।’

মিডল অর্ডারে মিঠুনের জায়গায় খেলেছেন, কিন্তু আফগানিস্তনের বিপক্ষে এক ম্যাচে ওপেনিংয়েও সুযোগ পেয়েছিলেন লিটন। কাজে লাগাতে পারেননি। আউট হয়ে যান ১৬ রানে।

ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কি কোনো অসন্তুষ্টি আছে? লিটনের জবাব, ‘জায়গা তো টিম ম্যানেজম্যান্ট দেবে, আমি শুধু আমার চেষ্টা করেছি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাকে ওপেনিংয়ে দিয়েছিল। আমি চেষ্টা করেছি। সফল হইনি। এখানেও চেষ্টা করেছি, সফল হইনি। আপাতত এটা নিয়ে চিন্তিত না।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বড় জুটি গড়েছিলেন। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষেও একটা প্রচেষ্টা ছিল লিটনের। তবে ৫৮ রানের জুটি গড়েই থামতে হয়।

এ জুটি নিয়ে লিটন বলেন, ‘এ রকম পরিস্থিতিতে ভারতের বিপক্ষে আমরা জুটি গড়েছিলাম। আমি ভালো স্টার্ট দিয়েছিলাম। মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করলে ব্যাটসম্যানরা স্বপ্ন দেখে ফিনিশ করে আসার, বড় রান করার। হয় সাকিব ভাই নয়তো আমি কেউ একজন বড় রান করবে। কিন্তু সব দিন তো আর একই রকম হয় না। চিন্তা ছিল ভালো কিছু করার নয়তো বড় রান করার।’

বোঝাই যাচ্ছে, মিডল অর্ডারে সাকিবের সঙ্গে মোটামুটি বোঝাপড়া হয়ে গেছে লিটনের। সাকিব তো এবারের বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে ছিলেন দুর্দান্ত। লিটন মনে করেন, তার মতো ফিটনেস তৈরি করতে পারলে ভালো করা সম্ভব, ‘এই মুহূর্তে যদি আয়ত্ত্ব করতে চাই, তাহলে ওনার ফিটনেসটা। উনি ফিটনেসে অনেক এগিয়ে গেছেন। এটা করতে পারলে ভালো হবে।’

এবারের বিশ্বকাপে সেমিতে খেলার স্বপ্ন পূরণ না হলেও ব্যাটিংটা মোটামুটি ভালোই ছিল বাংলাদেশের। ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জিকে কেমন মনে হচ্ছে? লিটন মনে করছেন, ব্যাটিংয়ে উন্নতি হয়েছে তাদের।

ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে কাজ করা নিয়ে ডানহাতি এই ওপেনার বলেন, ‘নেইলের সঙ্গে আমি অনেক দিন ধরে কাজ করছি। এটা প্রথম ট্যুর না। ও আসার পর থেকে খেলোয়াড়দের একটু ব্যাটিং ইমপ্রুভ আমিও দেখছি, আপনারাও দেখছেন। মূল বিষয়টা হচ্ছে পরিকল্পনা ও প্র্যাকটিস থিওরি। আমার মতে, খেলোয়াড়দের হেল্প করছে। আপনি তো খেলোয়াড়দের ব্যাটিংয়ের সব কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন না।’

এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।