শুধু সাকিবই নন, ২০ উইকেট নিয়ে রেকর্ডের পাতায় মোস্তাফিজও

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ
শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ , স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: ১২:১০ এএম, ০৬ জুলাই ২০১৯

২০১৫ সালে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচেই পরপর পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। সে বছরই নভেম্বরে নেন তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট। এরপর ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দারুণ বোলিং করলেও পাঁচ উইকেট পাওয়া হচ্ছিল না মোস্তাফিজের।

ফাইফারের এ ক্ষুধাটা তিনি যেন জমিয়ে রেখেছিলেন ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরের জন্য। তাই তো বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত ও পাকিস্তানের মতো দুই দলের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে মোস্তাফিজ শিকার করেছেন ৫টি করে উইকেট।

শুক্রবার বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নিয়ে নিজের নাম তুলেছেন সম্মানজনক অনার্স বোর্ডে। একইসঙ্গে গড়েছেন একগাদা রেকর্ড।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে খানিক খরুচে হলেও তার বোলিংয়ের বিপক্ষেই আউট হয়েছেন সেঞ্চুরিয়ান ইমাম উল হক, ইমাদ ওয়াসিম, হারিস সোহেল, ওয়াহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ আমির। এ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে আউট করে চলতি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় ২ নম্বরে উঠে এসেছেন মোস্তাফিজ।

আট ম্যাচ খেলে মোস্তাফিজের উইকেট সংখ্যা ২০টি। সমান ম্যাচ খেলে ২৪টি উইকেট শিকার করেছেন শীর্ষে থাকা মিচেল স্টার্ক। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডটাও নিজের করেছেন মোস্তাফিজ।

তবে এ রেকর্ডটি তিনি করেছেন ভারতের বিপক্ষে ফাইফার নিয়েই। সে ম্যাচে ৫ উইকেট শিকারের মাধ্যমে তিনি ভেঙে দিয়েছিলেন ২০০৭ বিশ্বকাপে আব্দুর রাজ্জাকের নেয়া ১৪ উইকেটের রেকর্ড। আর শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও ৫ উইকেট নিয়ে এ রেকর্ডটিকে ২০ উইকেটে নিয়ে ঠেকালেন কাটার মাস্টার।

বিশ্বকাপের সব রেকর্ড বাদেও দারুণ একটি রেকর্ড গড়েছেন মোস্তাফিজ। ভারতের বিপক্ষে ফাইফারটি ছিলো তার ক্যারিয়ারের চতুর্থবারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার। সেদিন তিনি বসেছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ বার পাঁচ উইকেট নেয়া আব্দুর রাজ্জাকের পাশে। পাকিস্তানের বিপক্ষে আবারও ৫ উইকেট নিয়ে, বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৫ বার ফাইফার নেয়া বোলার এখন মোস্তাফিজই।

এদিকে লর্ডসের মাঠে ৫ উইকেট নেয়ার পথে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১০০ উইকেট পূরণ করেছেন মোস্তাফিজ। এ মাইলফলকে পৌঁছতে তিনি খেলেছেন মাত্র ৫৪টি ম্যাচ, বোলিং করেছেন ৫৩টি ইনিংসে।

যার ফলে এশিয়ার পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম ১০০ উইকেট নেয়ারও কীর্তি এখন মোস্তাফিজের দখলে। এছাড়া ওয়ানডে ইতিহাসে যৌথভাবে চতুর্থ দ্রুততম ১০০ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটার তিনি।

মোস্তাফিজের সমান ৫৪ ম্যাচে ১০০ উইকেট নিয়ে এতদিন এককভাবে চতুর্থ স্থানে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার শেন বন্ড। সবচেয়ে কম ম্যাচে ১০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তিটা আছে আফগানিস্তানের রশিদ খানের দখলে। ১০০ উইকেট নিতে তিনি খেলেন মাত্র ৪৪ ম্যাচ।

৫২ ও ৫৩ ইনিংসে ১০০ উইকেট নিয়ে যথাক্রমে এই তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্ক ও পাকিস্তানের সাবেক স্পিনার সাকলাইন মুশতাক।

এতসব ইতিবাচক রেকর্ডের ভিড়ে মোস্তাফিজের হয়েছে একটি নেতিবাচক রেকর্ডও। চলতি বিশ্বকাপে বল হাতে ২০ উইকেট নিলেও, তিনি খরচ করেছেন ৪৮৪ রান। যা কি-না বিশ্বকাপের এক আসরে কোনো বোলারের সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ৪৭২ রান খরচ করে লজ্জার এ রেকর্ডটি নিজের করে রেখেছিলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি।

এসএএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।