সেই ৯২’র বিশ্বকাপের সঙ্গে এত মিল পাকিস্তানের!
খেলার মাঠে ইতিহাস বা পরিসংখ্যানের জায়গা খুবই অল্প। কারণ দুই দলের মধ্যে জয়ী নির্ধারিত হয় মাঠের লড়াইয়ে। তবু পরিসংখ্যানের হিসেবে মিলে গেলে অথবা ইতিহাসের পাতায় ডুব দিয়ে যদি পাওয়া যায় ইতিবাচক কিছু, তবে সেটি যেকোনো দলের জন্য হয় অনুপ্রেরণামূলক।
তেমনি অনুপ্রেরণার বড় একটি উৎসই পেয়ে গেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত তাদের যাত্রা খুব একটা আশাব্যঞ্জক না হলেও, ইতিহাস জানাচ্ছে ১৯৯২ সালে তথা যেবার পাকিস্তান জিতেছিল একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা- সেবারের সঙ্গে এবারের মিল রয়েছে অনেক বেশি।
এখনও পর্যন্ত ৬ ম্যাচ খেলে ২ জয় ও ১ পরিত্যক্ত ম্যাচ মিলিয়ে ৫ পয়েন্ট রয়েছে পাকিস্তানের নামের পাশে। তাদের পরবর্তী তিন ম্যাচ নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে। তার আগে প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফলেই পাওয়া গেছে অবিশ্বাস্য কিছু মিল।
চলুন দেখে নেয়া যাক সেসব মিলগুলো:
অভিন্ন ফরম্যাট
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশ ছিলো ৯টি। সেবার লিগপর্বে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল সব দল। পরে সেরা চারকে নিয়ে হয় সেমিফাইনাল। এবার অংশগ্রহণকারী দেশ ১০টি হলেও, সেবারের মতোই একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে সব দল। পরে সেরা চারকে নিয়েই হবে নকআউট পর্ব তথা সেমিফাইনাল।
খেলার নিয়ম
২৭ বছর আগের সে আসরে প্রতি ইনিংসে দুই প্রান্ত থেকে দুইটি নতুন সাদা বল দিয়ে খেলার নিয়ম করা হয়েছিল। এবারও প্রতি ইনিংসে দুই প্রান্ত থেকে দুইটি নতুন সাদা বল দিয়ে খেলা পরিচালিত হচ্ছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা পাকিস্তানের ফলাফলের ক্রম
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে হওয়া সে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফল ছিলো যথাক্রমে হার, জয়, পরিত্যক্ত, হার, হার ও জয়। এবারও প্রথম ছয় ম্যাচে ঠিক হার, জয়, পরিত্যক্ত, হার, হার ও জয় দেখেছে পাকিস্তান। সেবার প্রথম ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছিল ইমরান খানের দল, এবার সরফরাজ আহমেদের দলও ক্যারিবীয়দের কাছেই হেরেছে নিজেদের প্রথম ম্যাচ।
শুধু তাই নয়, ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের সপ্তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সে ম্যাচে জয়লাভ করেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করে তারা। এবারও নিজেদের সপ্তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই খেলতে নামবে তারা।
খেলোয়াড়দের মধ্যে মিল
১৯৯২ সালের আসরে পাকিস্তানের অন্যতম উদীয়মান তারকা ছিলেন ইনজামাল উল হক। এবার দলে রয়েছেন তার ভাতিজা ইমাম উল হক। সেবার পাকিস্তানের ষষ্ঠ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আমির সোহেল। এবার ষষ্ঠ ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরষ্কার জিতেছেন হারিস সোহেল। ৯২’র আগের দুই বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ছিলো যথাক্রমে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। এবারের বিশ্বকাপের আগের দুই আসরেও ঠিক তাই।
ঐতিহাসিক কিছু মিল
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ছিলেন জেলে বন্দী। এবারও বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে তিনি রয়েছেন কারাগারে বন্দী। সে বছর ‘আলাদিন’ নামক এনিমেটেড মিউজিক্যাল ফিল্ম মুক্তি পেয়েছিল। এবার মুক্তি পেয়েছে আলাদিন রিবুট।
এদিকে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের সঙ্গে এত মিল থাকলেও, পাকিস্তানের সাবেক তারকা অলরাউন্ডার আজহার মাহমুদ নিজের দেশের যাত্রাকে মেলাতে চাচ্ছেন ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা জয়ের সঙ্গে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের দিকে তাকালে অনেক মিল খুঁজে পাবেন। কিন্তু আমরা এদিকে তাকাচ্ছি না। তবে আপনি যদি ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা বিবেচনা করেন, তখন বুঝতে পারবেন আমরা এখন ঠিক সেই অবস্থায়ই আছি। সেমিতে যেতে হলে সবগুলো ম্যাচ জিততে হবে। সবগুলো ম্যাচই আমাদের জন্য ফাইনাল। একটা ম্যাচে খারাপ করলেই আমরা বাদ।’
এসএএস