সাইফউদ্দিন আনফিট হলে সুযোগ পাবেন ফরহাদ রেজা!
তাকে নিয়ে এরই মধ্যে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। নানা গুঞ্জনও ডানা মেলেছে। শাখাপ্রশাখা গজিয়েছে বেশ। শোনা যাচ্ছে পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন নাকি ‘বিগ ম্যাচ ফোবিয়া’য় আক্রান্ত। বড় দল বা বিশেষ বিশেষ দলের বিপক্ষে খেলার আগে নাকি তার এই রোগ মাথাচাড়া দেয়। হঠাৎ হঠাৎ ছোট খাট ইনজুুরির অজুহাত দেখিয়ে সাইফউদ্দীন খেলা থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান।
পত্র-পত্রিকায় এমন কথা লিখা হয়েছে। এমনও শোনা যায়, ক্রিকেটারদের কারো মুখ থেকেই নাকি এ খবরটি ফাঁস হয়েছে। যদিও টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন আজ সকালে জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, খবরটি সত্য নয়। সাইফউদ্দিনের সত্যি পিঠে ব্যাথা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু সাথে যোগ করেছেন সাইফউদ্দীনের হ্যামস্ট্রিং ইনজুুরিও আছে। তাই সে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচ খেলতে পারেনি।
ম্যানেজার সুজন আরও যোগ করেন, বিশ্বকাপের মত বড় আসরে কোন ক্রিকেটারের পক্ষে ঠুনকো অজুহাত কিংবা ছোটখাট ইনজুরিকে বড় ইস্যু বানিয়ে নিজ থেকে বা স্ব-ইচ্ছায় সরে দাড়ানোর কোনও সুযোগ ও অবকাশ নেই। ফিজিওর রিপোর্টই শেষ কথা। ফিজিওর রিপোর্টে যদি কারো ইনজুরির কথা বলা হয়, তাহলে আর তাকে খেলানোর প্রশ্ন আসে না। আর ফিজিও যদি বলেন, অমুক ফিট, তখন আর নিজ থেকে না খেলার ইচ্ছা প্রকাশের সুযোগ নেই। ফিজিও আমাদের জানিয়েছে, সাইফউদ্দিনের পিঠে টান লাগছে। তাই অস্ট্রেলিয়ার সাথে সাইফউদ্দিনকে খেলানো হয়নি।
এদিকে আজও (শনিবার) ম্যানেজার সুজন এবং প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছেন, সাইফউদ্দিন আর মোসাদ্দেকের পরিচর্যা চলছে। মোসাদ্দেক অনেকটাই কাঁধের আঘাত কাটিয়ে উঠেছে। আজ অনুশীলনও করেছে। আশা করা যায়, আগামী পরশু (সোমবার) আফগানিস্তানের সাথে খেলবেন মোসাদ্দেক।
আর সাইফউদ্দিন? তার কী অবস্থা? তিনি কী সুস্থ্য হয়ে উঠছেন? প্রধান নির্বাচক আর ম্যানেজারের কথা, সাইফউদ্দিন পুরোপুরি ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহনের নিবিড় পরিচর্যা আর পর্যবেক্ষণে আছে। তিনিই ভাল বলতে পারবেন। তবে দু’একদিনের মধ্যে সাইফউদ্দিনের ফিটনেস টেস্ট হবে।
আশা করা যায় সে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে দলে ফিরবে। যদি সাইফউদ্দিন ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারেন? তার পিঠের ব্যাথা আর হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যা যদি দু’এক দিনের মধ্যে ভাল না হয়, তাহলে? এ প্রশ্নের জবাব সরাসরি দেননি নান্নু-সুজনের কেউই।
তবে ভিতরের খবর, আগামীকালকের (রোববারের) মধ্যেই হয়ত সাইফউদ্দিনের টেস্ট হয়ে যাবে। যদি তিনি সুস্থ্য হয়ে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে যান, তাহলে তো কথাই নেই। না হয় দেশ থেকে কাউকে ডাকা হতে পারে।
শোনা যাচ্ছে, দেশে কেউ-কেউ নাকি সাইফউদ্দিনের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তাসকিনের কথা বলছেন। এমনও নাকি বলা হচ্ছে, সাইফউদ্দিনকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাসকিনকে উড়িয়ে আনা হবে। সত্যিই কি অমন কিছু ঘটতে পারে?
আজ (রোববার) সাউদাম্পটন সময় দুপুরের পর এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল নান্নুকে। প্রধান নির্বাচক জাগো নিউজকে সরাসরি উত্তর দিয়েছেন, ‘প্রশ্নই আসে না। সত্যিই যদি সাইফউদ্দিন আনফিট হয়ে পড়ে, তাহলে দেশ থেকে যদি কাউকে আনতেই হয়, তাহলে আমরা প্রথমে ডাকবো ফরহাদ রেজাকে। এই কন্ডিশনের সাথে তার বোলিংটাই হয়তো বেশি কার্যকর হতে পারে। তাসকিন হলো সেকেন্ড চয়েজ।’
নান্নু এই বলে থামলেও ম্যানেজার সুজন এ সম্পর্কে কিছু বলেননি। বরং আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, সাইফ সুস্থ্য হয়ে দলে ফিরবে। আর তাকে ফেরত পাঠানোর খবরকেও সুজন ভিত্তিহীন ও গুজব বলে মন্তব্য করেছেন। যদিও দলের ভিতরে আরও একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তা হলো সাইফউদ্দিনের ওপর নাকি তার সহ-ক্রিকেটাররাও তেমন সন্তুষ্ট নন।
তাই তাকে যদি সত্যি দেশে ফেরত পাঠানো হয়, তাহলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। আর তখন ভাগ্য খুলে যেতে পারে ফরহাদ রেজা কিংবা তাসকিনের। হয়ত কালকেই সাইফউদ্দিন উপাখ্যান শেষ হবে। দেখা যাক কি হয় আসলে?
এআরবি/এসএএস