এটাই আসলে আমাদের দল, আমাদের রূপ : মাশরাফি
দশ দলের বিশ্বকাপের প্রথম পর্বেই একে অপরের মুখোমুখি হবে সবাই, এমন ফরম্যাটে আসর যেমন জমে, তেমনি দলগুলোর কাজ হয়ে পড়ে কঠিন। আর এ কঠিন ফরম্যাটের বিশ্বকাপে সূচিটাও কঠিন পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড।
এদের বিপক্ষে জয় তুলে বিশ্বকাপের শুরু করাটা বেশ কঠিনই ছিলো সাকিব-মাশরাফিদের জন্য। সে কঠিন কাজটি নিজেদের মতো করেই সেরেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়েই শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের করা ৩৩০ রানের জবাবে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রানে থেমে যায় প্রোটিয়াদের ইনিংস।
এটুকুতে অবশ্য বোঝানো সম্ভব নয় ঠিক কেমন ছিল মাঠে টাইগারদের দাপট। পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ফিল্ডিংয়ে খানিক ভুলভ্রান্তি হলেও, ব্যাটিং বা বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ।
সৌম্য সরকারের উত্তাল শুরু, সেখান থেকে মিডল অর্ডারে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহীমের রেকর্ড জুটি এবং শেষে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক সৈকতের ঝড়ো ফিনিশিংয়ে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
পরে বল হাতেও কখনোই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে ঝুঁকতে দেননি সাকিব, মিরাজ, মোস্তাফিজরা। তেমন কোনো বড় জুটিও গড়তে পারেনি প্রোটিয়ারা। শেষপর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রানে থামে তাদের ইনিংস। স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
আর তাই তো ম্যাচ শেষে এমন পারফরম্যান্সকেই নিজেদের আসল রূপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার মতে দলের সবাই একসঙ্গে এগিয়ে আসায় সহজেই পাওয়া গিয়েছে দারুণ এ জয়।
ম্যাচ শেষে সংবাদসম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘এটা অবশ্যই কমপ্লিট পারফরম্যান্স এবং এটাই আসলে আমাদের দল, আমাদের রূপ। আমি সবসময় চাই, সবাই এভাবেই এমন কার্যকর অবদান রাখবে দলে। আমি কালও (শনিবার) বলেছি যত বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় সামনে এগিয়ে আসবে, তত দলের পারফরম্যান্স ভালো হবে। আজ (রোববার) ঠিক সেটাই হয়েছে। সাকিব আবারও তিন নম্বরে খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা তাকে আয়ারল্যান্ডের ফাইনালে পাইনি কিন্তু ঐ টুর্নামেন্টেও সে দুর্দান্ত খেলেছে।’
মাশরাফির কণ্ঠে এতো বলিষ্ঠ উচ্চারণ ও দলের পারফরম্যান্সে তৃপ্তি দেখে-শুনে মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, তবে কি এটিই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা জয়?- না, অন্তত মাশরাফি এমনটা মানছেন না। তবে ওপরের দিকেই রাখছেন এ জয়কে।
তিনি বলেন, ‘এটা সেরা নয়, তবে অন্যতম সেরা বা স্মরণীয় জয়। ২০০৭ এবং ২০১১তেও স্মরণীয় জয় আছে। আমি এরকম পারফরম্যান্সটাই চাই এবং এমন খেলাই খুব ভালোবাসি। তবে এ ম্যাচ দেখেই সন্তুষ্ট হওয়ার কিছু নেই। এখনো কিছু জায়গা আছে উন্নতি করার। পরের ম্যাচগুলোতে সেসব জায়গা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
এআরবি/এসএএস