বিস্ফোরক তথ্য : নিয়মিতই বল টেম্পারিং করতো ইংল্যান্ড!
এক ‘গেম চেঞ্জার’ দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। নিজের আত্মজীবনীতে একের পর এক বিস্ফোরক সব তথ্য দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। এদিকে গেম চেঞ্জারের রেশ কাটতে না কাটতে এবার প্রেক্ষাপটে হাজির হলো ‘দ্য ফুল মন্টি’। সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার মন্টি পানেসারের আত্মজীবনী এটি।
ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ৫০টি টেস্ট, ২৬টি ওয়ানডে ও ১টি টেস্ট খেলা পানেসার আফ্রিদির মতোই তার বইয়ে জানিয়েছেন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। নিজের আত্মজীবনীতে পানেসার দাবি করেছেন, তার সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ড বলকে যেভাবে ব্যবহার করত তা আইনসিদ্ধ কি না, সেটা তার জানা নেই।
পানেসার তার ৮ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে, ইংল্যান্ড দলের হয়ে বল করার পাশাপাশি বলটা পেসবান্ধব করে তুলতে সাহায্য করতেন। সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসন বলে যেন বাড়তি সুইং করাতে পারেন সে জন্য বল ঘষে-মেজে প্রস্তুত করতেন তিনি। বলকে যতটা সম্ভব শুষ্ক রাখার জন্য কাজ করতেন তিনি। মূলত দল থেকে দেয়া এটি একটি দায়িত্ব ছিল পানেসারের উপর।
তবে এই দায়িত্ব কতটা বৈধ ছিল, সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পানেসার। বইয়ে এই বিষয়ে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘আমরা বের করেছিলাম মিন্ট এবং সানস্ক্রিন মুখের লালার ওপর প্রভাব ফেলে। সেটা বল রিভার্স সুইংয়েও সাহায্য করে।’
যদি সত্যিই ইংল্যান্ড বল বেশি সুইং করাতে এই পন্থা অবলম্বন করে থাকে তবে পানেসারের দ্বিধাদ্বন্দ্বের আর কিছু নেই। ইংল্যান্ড দল তবে বড় ধরনের অপরাধ করে ফেলেছে।
কারণ ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক টেস্ট ম্যাচে মুখের লালার জন্য মিন্ট ব্যবহার করে শাস্তি পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডু প্লেসিস। এমসিসির ৪২.৩ ধারায়ও বল আছে, একজন ফিল্ডার বল পরিষ্কার করতে কোনো বাধা নেই যতক্ষণ কৃত্রিম কিছু ব্যবহার করা না হচ্ছে।
এদিকে দ্য স্টেটসম্যান ডেইলি মেইলের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আত্মজীবনীর একটি অংশে পানেসার লিখেছেন, ‘আমি হয়তো মাঝেমধ্যে ভুল করে ট্রাউজারের জিপারের মাথা দিয়ে বল ঘষতাম। আমরা আইন ভেঙেছিলাম কি না, সেটা নির্ভর করে আপনি কীভাবে এই বিষয়টিকে দেখছেন। হয়তো খেলার চেতনার সূক্ষ্ম একটা চিড় ধরিয়েছিলাম আমরা। যদিও ক্রিকেটের আইনে বলা আছে, আমরা আমাদের জার্সি ব্যবহার করতে পারব।’
পানেসারের এই স্বীকারোক্তিও তাদের বিপক্ষে যাচ্ছে। কারণ এই জিপারে বল ঘষে ওই ওই ডু প্লেসিসই একবার নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এ ছাড়াও গেল বছর স্যান্ডপেপার কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার তিন ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরুন ব্যানক্রফট। ১ বছরের সাজা কাটিয়ে তারা ক্রিকেটে ফিরলেও সিরিশ কাগজ দিয়ে বল ঘষে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জাজনক অধ্যায় রচনা করেন তারা।
এসএস/এমএমআর/জেআইএম