আফ্রিদির সেই রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরির নেপথ্যে টেন্ডুলকার
ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে, ব্যাট করতে নেমেছেন প্রথমবার। ১৬ বছর বয়সী তরুণ কোথায় মানসিক চাপে ভুগবেন, উল্টো বোলারদের এক হাত নিয়ে মাঠ ছাড়লেন ৫০ মিনিট খেলে মাত্র ৪০ বলে ১০২ রানের রেকর্ডময় এক ইনিংসে।
সে ইনিংসে তখনকার সময়ের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের করে নেন পাকিস্তানি তরুণ শহীদ আফ্রিদি। তবে তার সেঞ্চুরি করা ব্যাটটি মূলত তার ছিলো না, পেয়েছিলেন ওয়াকার ইউনুসের কাছ থেকে। আর ওয়াকার ইউনুসকে সেটি দেন ভারতীয় তারকা শচিন টেন্ডুলকার।
ফলে আফ্রিদির সেই রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরিটি মূলত করা হয়েছে টেন্ডুলকারের ব্যাট দিয়েই। নিজের আত্মজীবনী মূলক বই ‘গেম চেঞ্জার’ এর এক অধ্যায় এসব তথ্য নিজেই জানিয়েছেন আফ্রিদি।
১৯৯৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি আফ্রিদি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নামিয়ে দেয়া হয় তিন নম্বরে, যেখানে সাইদ আনোয়ারের সঙ্গে গড়েন ১২৬ রানের জুটি। যার মধ্যে ১০২ রানই করেন তিনি নিজে।
আউট হওয়ার আগে মাত্র ৩৭ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করে গড়েন দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। মুত্তিয়া মুরালিধরন, সনাত জয়াসুরিয়াদের পিটিয়ে ৬ চার ও ১১ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটি। এতদিন পর সে ইনিংসের স্মৃতিচারণ করেছেন নিজের বইতে।
যেখানে আফ্রিদি লিখেছেন, ‘আমাকে তো ব্যাটটা দিয়েছিলেন ওয়াকার (ইউনুস) ভাই। বলুন তো ওয়াকার ভাইকে কে দিয়েছিল ব্যাটটা? শচিন টেন্ডুলকার! তাই বলাই যায় আসলে নাইরোবিতে শহীদ আফ্রিদির প্রথম সেঞ্চুরিটি শচিনের ব্যাট দিয়ে করা।’
সেই অধ্যায়ে আফ্রিদি আরও লিখেছেন যে তিনি মূলত আগের রাতেই স্বপ্নে দেখছিলেন জয়াসুরিয়া, মুরালিধরনদের ছক্কা হাঁকাচ্ছেন। যা তিনি তার রুমমেট শাদাব কবিরকেও জানিয়েছিলেন। পরে মাঠেও তার স্বপ্ন সত্যি প্রমাণিত হয়।
আফ্রিদি লিখেন, ‘আগের রাতেই আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম যে জয়াসুরিয়া, মুরালিধরন এবং ধর্মসেনাকে ছক্কা মারছি আমি। বড় বড় সব ছক্কা। রুমমেট শাদাব আমাকে বললো, দোয়া করো যাতে মাঠেও তাই হয়।’
সে ম্যাচে ১০ ওভারে ৯৪ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন জয়াসুরিয়া, মুরালিধরন ১০ ওভারে ৭৩ খরচায় নেন ২টি উইকেট। পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ৩৭১ রান। পরে লঙ্কানরা ২৮৯ রানে থামলে ৮২ রানের জয় পায় পাকিস্তান।
নিজের বইটিতে আফ্রিদি নিজের সত্যিকার বয়স সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। সেটি হলো কাগজে কলমে সে সেঞ্চুরিটি করার সময় বয়স ১৬ হলেও, আসলে তখন তার বয়স ছিল ১৯। আফ্রিদি লিখেন, ‘রেকর্ডের ব্যাপারে যদি বলতে হয়, আমি তখন ১৯ বছরের ছিলাম, ১৬ বছরের নয়। আমি ১৯৭৫ সালে জন্ম নিয়েছি। হ্যাঁ, কর্তৃপক্ষ আমার বয়স লুকিয়েছে।’
এসএএস/পিআর