ধোনিকে ২-৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ করতে বললেন শেবাগ
আইপিএলের চলতি আসরে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। যে কারণে প্রায় ৩-৪ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। এ ঘটনার জন্ম দিয়ে তুমুল সমালোচনার শিকার হয়েছেন ধোনি।
এবার সে ঘটনায় মুখ খুললেন ধোনিরই সাবেক সতীর্থ এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার ভিরেন্দর শেবাগ। তার মতে ধোনিকে অন্তত ২-৩ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা উচিৎ ছিলো। কারণ চেন্নাই অধিনায়ক যা করেছে তা মোটেও শোচনীয় ছিলো না।
রাজস্থানের বিপক্ষে সে ম্যাচের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে কোমরের ওপরে বল করে বসেন বেন স্টোকস। তবে বলের গতি কম থাকায় ব্যাটসম্যান মিচেল স্যান্টনারের পাশাপাশি বিভ্রান্ত হয়ে যান মূল আম্পায়ার উল্লাস গান্ধে। তিনি হাত বাড়িয়ে জানিয়ে দেন এটি উচ্চতার কারণে নো বল। কিন্তু লেগ আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ড আবার তাকে থামিয়ে বলেন এটি নো বল নয়। সে বল থেকে ২ রান নেন স্যান্টনার, সমীকরণ দাঁড়ায় ২ বলে ৬ রানে।
কিন্তু দুই আম্পায়ারের দুই রকম সিগন্যাল মানতে পারেননি চেন্নাই অধিনায়ক ধোনি। রাগে ফুঁসতে থাকেন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে। প্রথমে মাঠে থাকা ভারতীয় অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজা আম্পায়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এ ব্যাপারে। কিন্তু তা মনঃপুত হয়নি ধোনির।
আর সইছিলো না দেখে খেলার মাঝেই ঢুকে পড়েন মাঠের মধ্যে। প্রথমেই এগিয়ে যান লেগ আম্পায়ার অক্সেনফোর্ডের দিকে। সেখানে আসেন মূল আম্পায়ার গান্ধেও। তাকে দেখিয়ে ধোনি বলতে থাকেন, মূল আম্পায়ার নো বল ডেকেছে, মূল আম্পায়ার নো বল ডেকেছে। কিন্তু এতে সাড়া দেননি অক্সেনফোর্ড। তিনি অটল থাকেন নিজের সিদ্ধান্তে।
বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় ধোনিকে বোঝাতে থাকেন এটি নো বল হয়নি। তখন বোলার বেন স্টোকসও সামনে চলে এলে ছোটখাটো এক বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। আম্পায়াররা বারবার ধোনিকে বোঝালেও অসন্তুষ্টই দেখা যায় ধোনিকে। সিদ্ধান্তেও কোনো বদল আসেনি। ফলে রাগে গজরাতে গজরাতে মাঠ ছেড়ে যান ধোনি।
এত বড় কাণ্ড ঘটিয়ে ধোনি পান কেবলমাত্র ম্যাচের ৫০ শতাংশ জরিমানার শাস্তি। এমনকি মৌখিক কোনো তিরস্কারও করা হয়নি তাকে। তাই ক্ষেপেছেন শেবাগ। বললেন অন্তত উদাহরণ সৃষ্টির জন্য হলেও ধোনিকে বড় শাস্তি দেয়া উচিৎ ছিলো।
শেবাগ বলেন, ‘আমি মনে করি ধোনি অল্পেই পার পেয়ে গেল। তাকে অন্তত ২-৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা উচিৎ ছিলো। কারণ রাজস্থানের বিপক্ষে সে যা করেছে, একই কাজ যদি অন্য দলের খেলোয়াড়রাও ভিন্ন ম্যাচে করে? তখন মাঠে আম্পায়ারদের মূল্যটা কী রইবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তত একটা উদাহরণ সৃষ্টির জন্য হলেও ধোনিকে কিছু ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা উচিৎ ছিলো। সেদিনের ঘটনায় সে বাইরেই থাকতে পারতো এবং মাঠে ঢোকার পরিবর্তে ম্যাচের চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে সব ঠিক করে নিতে পারতো।’
তবে ধোনি যদি একই কাজ ভারতীয় দলের হয়ে করতেন তাহলে শেবাগ কিছু মনে করতেন না। তার ভাষ্যে, ‘ধোনি যদি একই কাজ ভারতীয় দলের জন্য করতো, তখন আমি খুশিই হতাম। ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করার সময় আমি কখনোই তাকে মাথা গরম করতে দেখিনি। আমার মনে হচ্ছে ইদানীং চেন্নাই টিমের জন্য সে খুব বেশিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছে।’
এসএএস/জেআইএম