মাশরাফিরা ‘ফ্যামিলি ব্রেক’ চাইলে না করবে না বিসিবি

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ
শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ , স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০৯:০৮ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০১৯

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু ৭ মে থেকে, ফাইনালসহ এ টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১৭ মে। এরপর আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ ২৬ মে। সে লক্ষ্যে ২৪ মে থেকে শুরু হবে আইসিসির ‘সাপোর্টিং পিরিয়ড’। অর্থাৎ ২৪ মে থেকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর যাবতীয় দায়িত্ব নেবে আইসিসি।

তাহলে মে মাসের ১৭ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত কি করবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল? কোথায় থাকবে? সে সময়ের দায়িত্ব কে নেবে? জাগো নিউজের পাঠকরা বেশ কিছুদিন আগেই জেনেছেন, মাঝের এই সময়টায় বিসিবি নিজ খরচে; তবে আইসিসির তত্ত্বাবধানে থাকবে ইংল্যান্ডেই, সেখানের কন্ডিশন ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে।

তবে এতে আবার আপত্তি রয়েছে দলের সিনিয়র সদস্যদের। কারণ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ৭ তারিখ শুরু হলেও, মাশরাফি বাহিনী দেশ ছাড়বে ১ মে। পরে ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে বিশ্বকাপের অন্তত গ্রুপ পর্ব পর্যন্ত খেলতেও পেরিয়ে যাবে ৫ জুলাই পর্যন্ত সময়। বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৫ জুলাই।

অর্থাৎ যদি আয়ারল্যান্ড থেকে সরাসরি ইংল্যান্ড গিয়ে বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফেরা হয়, তাহলে একটানা অন্তত ৬৬ দিন কাটাতে হবে দেশের বাইরে। পরিবার-পরিজন থেকে একটানা এতদিন দূরে থাকা মানসিকভাবে বেশ চ্যালেঞ্জিং। লম্বা সফরের শেষ দিকে জেঁকে বসে অবসাদ, মনের মধ্যে ঝড় তোলে পরিবার ও দেশের টান।

তাই জাতীয় দলের সিনিয়র তথা ‘পঞ্চপান্ডব’র চারজন মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহীম চাচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজটা শেষ করে দেশে ফিরতে। পরে ২৪ মে’র আগে ইংল্যান্ড গিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিতে।

পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে নেয়া এই বিরতিকে বলা হয় ‘ফ্যামিলি ব্রেক’, যা কি-না প্রায়ই দেখা যায় ক্রীড়াঙ্গনে। লম্বা সফরের মাঝে অবসাদগ্রস্ততা চেপে ধরলে খেলোয়াড়দের দেয়া হয় এই ফ্যামিলি ব্রেক, যা খেলোয়াড়দের চাঙা রাখতেও বিশেষ সহায়তা করে।

বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও যদি এই ফ্যামিলি ব্রেক নিতে চায়, তাহলে কোনো বাধা দেবে না দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা বিসিবি। বরং খেলোয়াড়দের সহায়তা করারই আশ্বাস দিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান।

প্রাথমিকভাবে বোর্ডের তরফ থেকে ‘না’ সূচক প্রতিক্রিয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও সেটি উড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে প্রথম বিশ্বকাপের টিকিট এনে দেয়া আকরাম খান। তিনি জানিয়েছেন, চাইলে ইংল্যান্ডেও পরিবারকে নিয়ে যেতে পারবেন মাশরাফি-সাকিবরা।

আজ (বুধবার) সংবাদমাধ্যমে আকরাম বলেন, “আসলে ব্যাপারটা হলো যে চার-পাঁচ দিনের মধ্যে দেশে ফিরে আবার ইংল্যান্ডে যেতে হবে। একটা টানা-হেঁচড়ার মতো অবস্থা। তবে কোনো খেলোয়াড় যদি দেশে আসতে চায় তাহলে বোর্ড পূর্ণ সহযোগিতা করবে। আমরা ‘না’ করবো না, যদি কেউ মাঝের বিরতিতে দেশে ফিরতে চায়।”

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপে তো পরিবারও নেয়া যায় এখন। তবে আমাদের সময় এটা ছিল না। তখন টিম ম্যানেজমেন্ট খুব শক্ত ছিল। আপনারা যদি মনে রাখেন, তাহলে দেখবেন গত বিশ্বকাপেও; কিন্তু খেলোয়াড়দের পরিবার সঙ্গে ছিল। এটার মধ্যে আমরা কোনো সমস্যা দেখি না।’

এ সময় আকরাম নিশ্চিত করেন ২২ এপ্রিলের আগেই টাইগারদের বিশ্বকাপ স্কোয়াড জানিয়ে দেয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ১৮ এপ্রিল দল ঘোষণার কথা থাকলেও, চলতি প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ পর্বের দুই রাউন্ড দেখার জন্য ১৯ এপ্রিল দল ঘোষণা হতে পারে বলে জানান আকরাম।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা ২২ এপ্রিলের আগে বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করবো। আমরা আসলে কয়েকজন খেলোয়াড়ের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে চিন্তিত। এক-দুজন খেলোয়াড়কে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ জন্য সুপার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে ১৮-১৯ তারিখ দল ঘোষণা করবো। খুব সম্ভবত ১৯ এপ্রিল আমাদের দল ঘোষণা করা হবে।’

এসএএস/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।