এখনও ফেরার স্বপ্ন দেখেন তবে সৌম্য-লিটনদের ঈর্ষা করেন না জহুরুল
ব্যাট হাতে সময়টা দুর্দান্ত কাটছে জহুরুল ইসলাম। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ওপেনিংয়ে নেমে নিয়মিতই মাঠ মাতাচ্ছেন। হয়তো এই পারফরম্যান্স আমলে নেবেন না নির্বাচকরা। তবু ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান এখনও স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে ফেরার।
দেশের হয়ে খুব বেশি খেলার সুযোগ হয়নি জহুরুলের। তবে তিন ফরমেটেই খেলেছেন (৭টি টেস্ট, ১৪ ওয়ানডে আর ৩টি টি-টোয়েন্টি)। কিন্তু ২০১৩ সালের পর আর জাতীয় দলে সুযোগ মেলেনি। কত বছর হলো? প্রায় ছয় বছর। বয়সও ৩২ পেরিয়েছে। জহরুলের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা শেষ বলেই ধরে নেয়া যায়।
তবে অন্যরা কি ভাবছে, সেটা ব্যাপার নয়। জহুুরুল এখনও জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন। চলতি ঢাকা লিগে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় রান করে যাওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান আজ (বৃহস্পতিবার) আবাহনীর হয়ে ম্যাচ জেতানো এক ইনিংস খেলার পর বললেন সেই স্বপ্নের কথা।
চলতি ঢাকা লিগে আট ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত ২টি সেঞ্চুরি পেয়েছেন জহুরুল (বিকেএসপির বিপক্ষে ১২১ অপরাজিত এবং গাজী গ্রুপের বিপক্ষে ১৩০)। পেতে পারতেন আরও দুটি। মোহামেডানের বিপক্ষে ৯৬ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। আর আজ দলকে জেতানোর ম্যাচে অপরাজিত থাকেন ৯১ রানে।
আজ (বৃহস্পতিবার) প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ২২৫ তাড়া করতে নেমে ১৩৫ রানেই ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল আবাহনীর। সেখান থেকে সপ্তম উইকেটে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ৯২ রানের ম্যাচ জেতানো এক জুটি গড়েন জহুরুল।
কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে জেতালেও জহুরুল অবশ্য নিজে কৃতিত্ব নিতে নারাজ। আবাহনী খুব বিপদে ছিল এমনটাও মানতে চাইছেন না তিনি।
জহুরুলের ভাষায়, ‘ছয়টা উইকেট পড়ে গিয়েছিল। তবে আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ অনেক লম্বা। এরপরও মিরাজ বাইরে ছিল, মাশরাফি ছিল। সানজামুলও ভালো ব্যাট করে। উইকেটটা একটু আনইভেন ছিল। বেশি শট খেলা সম্ভব না। আমাদের ব্যাটসম্যানরা বেশি শট খেলতে গিয়েছিল। খুব আর্লি ৩টা উইকেট পড়ার পর আমার আর মিঠুনের একটা সুন্দর পার্টনারশিপ হয়। রুম্মান দ্রুত আউট হওয়ার কারণে আবার প্রেশারে পড়ে। সাইফউদ্দিন আবারো... প্রথম ম্যাচে ভালো পার্টনারশিপ ছিল। আজকেও ভালো করেছে। ওর টেম্পারমেন্ট খুবই ভালো। ও তো মূলত বোলিং অলরাউন্ডার। খুব ভাইটাল ইনিংস ছিল সাইফের ইনিংসটি।’
ইনজুরির কারণে বেশিরভাগ সময় সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। তাই কপালেরও দোষ দেখছেন জহুরুল। তিনি বলেন, ‘আসলে যখন খুব ভালো সময় যায়, তখনই আমি বেশিরভাগ সময় ইনজুরিতে থাকি। এবারের বিপিএলের সময় কব্জি ভাঙ্গা ছিল। বিসিএল খুব ভালো যাচ্ছিল। বিপিএলের নয়দিন আগে আমার কব্জি ভাঙ্গে। তারপর ভুল চিকিৎসার কারণে আমি চার ম্যাচ খেলি। পরে আবার দেখা যায় যে হাতে ফ্র্যাকচার ছিল। পরে আমি প্লাস্টার করি। লিগের নয়দিন আগে প্লাস্টার খুলি। আমি আসলে এত কিছু চিন্তা করি নি এবার লিগে ভালো পারফর্ম করব।’
ঢাকা লিগে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন কি দেখেন? জহুরুল আশা হারাননি। তাই বলে দলে যারা আছেন তাদেরও ঈর্ষা করছেন না, ‘আসলে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন যতদিন ক্রিকেট খেলব ততদিনই দেখব। আর আমার জায়গায়, টপ অর্ডারে যারা খেলছে বাংলাদেশের হয়ে, আমার মনে হয় ওরাই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সেরা প্লেয়ার। কারণ স্কিলের দিক থেকে ওরা অনেক ভালো প্লেয়ার, ভালো করছে। ওরা আমার মনে হয় ইংল্যান্ডের কন্ডিশন, এত বড় টুর্নামেন্ট। সব মিলিয়ে দল নির্বাচন করছে। আমি আশা করব ওরা জায়গা মতন পারফর্ম করে ও বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতায়।’
এমএমআর/এমকেএইচ