ব্রাদার্সের খেলতে আপত্তি : মোহামেডানকে জয়ী ঘোষণা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০১৯

যেকোনো ম্যাচের ফলাফল পাওয়ার জন্য অন্তত খেলতে হয় দুই ইনিংস। পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ হলে দুই দলের ইনিংসে ন্যুনতম ২০ ওভার করে খেলা হলে, তবেই আসে ফলাফল। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) বিকেএসপিতে দেখা মিলল এক ইনিংস খেলেই ম্যাচের ফলাফল পাওয়ার নজির।

যেখানে ঘটনার হোতা ব্রাদার্স ইউনিয়ন এবং জয়ী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সাভারের বিকেএসপিতে মোহামেডানের ইনিংস শেষ হওয়ার পরপরই বৃষ্টির কারণে থেমে যায় ম্যাচ। পরে বৃষ্টি থামলে মাঠ শুকাতেও ব্যয় হয় কয়েক ঘণ্টা সময়।

ম্যাচের দুই আম্পায়ার বেলা ৩.৪৯ মিনিটের সময় মাঠ পর্যবেক্ষণ করে জানান ৪.০৬ মিনিটের মধ্যে খেলা শুরু করা যাবে। এতে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সামনে নতুন লক্ষ্য দাঁড়াবে ১৭৪ রানের।

কিন্তু বৃষ্টিভেজা কন্ডিশন ও উইকেটে কার্টেল ওভারের এ ম্যাচ খেলতে অনীহা প্রকাশ করেছে ব্রাদার্স। তাদের দাবী আগামীকাল রিজার্ভ ডেতে নতুন করে তাদের পুরো ইনিংস খেলতে দেয়া হোক। তবে তা নিয়মের মধ্যে না থাকায় প্রতিপক্ষ খেলতে অনীহা জানানোর কারণে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে মোহামেডানকে।

ঘটনার বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হয় ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ শিপারের সঙ্গে। তিনি সাভার থেকেই জাগোনিউজকে মুঠোফোনে জানান, ‘আম্পায়াররা ৪.০০টা বাজার আগে ১১ মিনিট আগে দুই দলকে জানিয়ে দেয় যে ৪.০৬ মিনিটে খেলা শুরু হবে এবং ম্যাচ হবে ২০ ওভারের। সে অনুযায়ী দুই আম্পায়ার মাঠে নামে। কিন্তু ৪.১৫ মিনিট পর্যন্ত ব্রাদার্স ইউনিয়ন মাঠে নামেনি। তাদের দাবী ছিলো আউটফিল্ড ভেজা।’

জাগোনিউজের কাছ থেকে প্রশ্ন রাখা হয়, ‘আউটফিল্ড কী সত্যিই ভেজা এবং খেলার অনুপযোগী ছিলো? ম্যাচ রেফারির উত্তর, ‘পিচের এক কোণায় একটু পানি জমে ছিলো এবং নরম ছিলো। তবে এ জায়গাটি এমন ছিলো যেখানে বলও যায় খুব কম এবং কোনো ফিল্ডারও সেখানে দাঁড়ায়নি। তাই আমাদের মনে হয়নি খেলা অসম্ভব। ফলে আম্পায়াররা ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করার পর ‘রিফিউজড টু প্লে’ নিয়মের আওতায় মোহামেডানকে জয়ী ঘোষণা করেছে।’

এর আগে অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে বিকেএসপির চার নাম্বার মাঠে ৯ উইকেটে ৩১৬ রানের পাহাড়সমান স্কোর গড়ে মোহামেডান। ওপেনার ইরফান শুক্কুর (১০৫ বলে ৯২), অভিষেক মিত্র (৭৯ বলে ৬৮) ও অধিনায়ক রকিবুল হাসানের ঝড়ো ফিফটি (৩৫ বলে ৫০) এবং শেষ দিকে সোহাগ গাজীর ব্যাটিং তাণ্ডব (২৫ বলে অপরাজিত ৪৩)।

কিন্তু এর মধ্যেও চরম ব্যর্থ মোহাম্মদ আশরাফুল। রান খরায় ভুগতে থাকা জাতীয় দলের সাবেক এই তারকা ব্যাটসম্যান আজ শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে সম্পূর্ণ চাপমুক্ত অবস্থায় ব্যাটিং করতে নেমেও করেছেন মোটে ৬, তাও দ্বিগুণ বল খেলে (১২ বল)। স্ট্রাইক রেটের অবস্থা যাচ্ছেতাই (৫০)।

মোহামেডানের রান তিনশ পেরিয়ে গেলেও সেটা মূলত চারজনের চওড়া ব্যাটে। বাকি সাতজনের অবস্থা যে বড়ই করুণ। প্রথম উইকেটে ওভারপিছু প্রায় ৬ রানের কাছাকাছি তুলে ১৭৪ রানের (৩০.৩ ওভার) বিশাল পার্টনারশিপ গড়ে দিয়েছেন ইরফান শুক্কুর ও অভিষেক মিত্র। অধিনায়ক রকিবুল আর সোহাগ গাজী ছাড়া বাকি সাত জনে মিলে করেছেন মোটে ৪১ রান।

দুই ওপেনার শক্ত ভিত গড়ে দিয়ে ফিরেছেন সাজেদুল ইসলামের এক ওভারেই। এরপর ব্যর্থ মোহাম্মদ আশরাফুল (৬), চতুরঙ্গ ডি সিলভারা (১১)। রকিবুল দলকে আড়াইশ পার করে দিলেও নাদিফ চৌধুরী (১৪), আলাউদ্দিন বাবু (২), নিহাদুজ্জামানরা (২) ব্যাট হাতে দলের উপকারে আসেননি।

শেষ পর্যন্ত সোহাগ গাজীর ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় গড়া ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে মোহামেডানের রান তিনশো পেরিয়েছে। ব্রাদার্স ইউনিয়নের মোহাম্মদ শরীফ আর সাজেদুল ইসলাম নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।

এআরবি/এসএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।