‘ফাইনালে দুই দলই সমান-সমান’

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৯ পিএম, ০৩ মার্চ ২০১৯

নবাগত বিকেএসপির কাছে প্রথম ম্যাচে নাটকীয়ভাবে হেরে শঙ্কার মুখে পড়ে গিয়েছিল প্রাইম দোলেশ্বরের সেমিফাইনালের টিকিট। সেই দলটিই সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে লড়বে শিরোপার জন্য।

বিকেএসপির কাছে হারের পর সেমির টিকিট পেতে দ্বিতীয় ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে শুধু জিতলেই হতো না দোলেশ্বরের, মেটাতে হতো রানরেটের সমীকরণও। সে ম্যাচে বল হাতে ১৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে থামিয়েছিলেন ১৪৫ রানে অধিনায়ক ফরহাদ রেজা।

সেমির টিকিট পেতে এ রান করতে হতো ১৮.১ ওভারের মধ্যে। সে দায়িত্বও নিজ কাঁধে তুলে নেন রেজা। মাত্র ১৫ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে দেন ঠিক ১৮ ওভারে। পরে সেমিফাইনালে যেনো ছাড়িয়ে যান আগের ম্যাচকেও।

বল হাতে ৩২ রান খরচায় নেন এবারের আসরের এবং নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৫ উইকেট। তিন বল তিন উইকেট নিলেও মাঝে একটি ওয়াইডের কারণে হয়নি হ্যাটট্রিক। তবু প্রতিপক্ষ প্রাইম ব্যাংক দাঁড় করায় ১৭০ রানের পুঁজি।

যা তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে প্রায় অসম্ভব সমীকরণের সামনে পড়ে যায় প্রাইম দোলেশ্বর। তখন আবার ব্যাট হাতে আবির্ভাব রেজার। ১৮ বলে যখন প্রয়োজন ৪৩ রান, তখন নামেন তিনি। ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ২ বল বাকি থাকতেই। খেলেন ৮ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংস।

টানা দুই ম্যাচে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালের আগে ফুরফুরে মেজাজেই আছেন ফরহাদ রেজা। তবু যেহেতু ফাইনাল ম্যাচ, তাই নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ শেখ জামালও যে সেমিতে জিতেছে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ।

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ১৮২ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৬৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল শেখ জামাল। ১১ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৭৬ রান। শেষের নয় ওভারে জিততে দরকার আরও ১০৬ রান। মাঠে থাকা নুরুল হাসান সোহান এবং জিয়াউর রহমানের পর নেই আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান।

তখনই শুরু তান্ডব। ১২তম ওভারে ১২, ১৩তম ওভারে ২৪, ১৪তম ওভারে ১৮, ১৫তম ওভারে ১৪, ১৬তম ওভারে ৬, ১৭তম ওভারে ২০ আর ১৮তম ওভারের ৪ বলে ১২ রান নিয়ে ১৪ বল আগেই শেষ ম্যাচ! দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৫৪ বলে ১১৭ রান! সোহান ৩ চার ও ১ ছয়ে অপরাজিত ৪৩, ম্যাচসেরা জিয়া ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ২৯ বলে অপরাজিত ৭২। মাত্র ২১ বলে পঞ্চাশ করেছিলেন তিনি।

প্রতিপক্ষ যখন এমন জয় নিয়ে এসেছে ফাইনালে তখন তাদের খাটো করে দেখার সুযোগ নেই প্রাইম দোলেশ্বর অধিনায়ক ফরহাদ রেজার সামনে। তবে নিজেদেরকেও আন্ডারডগ মানতে রাজি নন তিনি। তাই তো ঘোষণা দিয়েছেন ফাইনালের দুই দলই সমান-সমান, জিততে হলে খেলতে হবে সেরাটাই।

রোববার মিরপুরের একাডেমি মাঠে ফাইনালের আগে নিজেদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেয়ার ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপে রেজা বলেন, ‘ওরা (শেখ জামাল) অনেক ভালো টিম। শেষ ম্যাচে ওরা অনেক ভালো খেলেছে। জিয়া ভাই আছে, এছাড়া কিছু পাওয়ার প্লেয়ার আছে। বোলিংও ভালো আছে। শহিদুল আছে। অবশ্যই আমরা চাইব আমাদের কাজ গুলো ঠিক মত করতে দেখা যাক কি হয়। দুইটা দলই সমান, টি-টুয়েন্টি খেলায় যে যেদিন ভালো খেলবে সেই জিতবে।’

এখনো পর্যন্ত বল হাতে ৮ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ফরহাদ রেজা। ব্যাট হাতেও রান করেছেন প্রায় ২৩০ স্ট্রাইকরেটে। নিজের এমন পারফরম্যান্সের পেছনে বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলতে গিয়ে পাওয়া চাপ সামাল দেয়ার দীক্ষাটাই কাজে লাগছে বলে জানান রেজা।

তিনি বলেন, ‘আসলে বিপিএলে আমি রংপুরের সাথে ছিলাম, আমরা টানা ছয়টা ম্যাচ জিতেছিলাম, প্রথম দিকে খুব কষ্ট হচ্ছিল। পরে টানা জিতেছি। ক্রিকেটে সবই সম্ভব। আসলে যার যেদিন দিন যাবে। আমাদের ভালো খেলতে হবে মেইনলি। আগের ম্যাচে যেমন পরিকল্পনা ছিল সামনেও তাই থাকবে। চেষ্টা করব আমি যতটুকু সুযোগ পাবো, বোলিং কিংবা ব্যাটিংয়ে, কাজ গুলো ঠিক মতন করতে।’

এসএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।