নাফীস ঝড় ম্লান করে দিল শুভাগতর টর্নেডো

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

শেষপর্যন্ত উদ্দেশ্য কতোটা সফল হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখন মানে শুরুর খবর ভালো। এতদিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যথাযথ প্ল্যাটফর্মের অভাবের আক্ষেপ করা স্থানীয় ক্রিকেটাররা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি লিগের প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করেছেন নিজেদের। ব্যাট হাতে শাহরিয়ার নাফীস, শুভাগত হোম কিংবা বল হাতে সোহরাওয়ার্দী শুভরা আলো ছড়িয়েছেন।

স্থানীয় তারকাদের জাত চেনানোর দিনে লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে রীতিমতো অঘটনই যেনো ঘটাল গত মৌসুমেই প্রিমিয়ারে উঠে আসা শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। তুলনামূলক শক্তিশালী লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টের শুভসূচনা করেছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। রুপগঞ্জের ১৩ ওভারে করা ১১৫ রানের সংগ্রহ ৩ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই টপকে গিয়েছে শাইনপুকুর।

ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড়ঘণ্টা পরে। বিশ ওভারের ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ইনিংসপ্রতি ১৩ ওভারে। যেখানে বৃষ্টিস্নাত কন্ডিশনের সুবিধা নিতে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শাইনপুকুর অধিনায়ক শুভাগত হোম।

স্বভাবতই শুরুটা ভালো হয়নি রূপগঞ্জের। বৃষ্টিভেজা উইকেটে পাওয়ার প্লে'র সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি দুই ওপেনার সালাউদ্দিন পাপ্পু এবং মোহাম্মদ নাঈম।। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ১৯ বলে ১৯ রান করেন নাঈম।

পরের ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন পাপ্পুও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ১৪ রান। বেশিদূর যেতে পারেননি মেহেদি মারুফ। ৪৪ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে মাত্র ৬ রান করেন তিনি। জাকের আলিকে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন তিন নম্বরে নামা শাহরিয়ার নাফীস।

দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে ৩৫ বলে যোগ করেন ৩৭ রান। দ্বাদশ ওভারের প্রথম দুই বলে জাকের আলি (১১) এবং মুক্তার আলিকে (০) আউট করেন সুজন হাওলাদার। এরপর ইনিংসের শেষ দশ বলে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন শাহরিয়ার নাফীস এবং অধিনায়ক নাঈম ইসলাম।

সুজনের সে ওভারের শেষ দুই বলে ছক্কা-চারে দশ রান নেন নাঈম। আর শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে যথাক্রমে ৪, ৪, ২, ৬ ও ১ রানে মোট ১৭ রান নিয়ে দলীয় সংগ্রহকে ১০০ পার করান নাফীস। শেষ বলে ৪ মেরে ইনিংসের সমাপ্তিটা দারুণ টানেন নাঈম। নির্ধারিত ১৩ ওভারে ৫ উইকেটে

তিন নম্বরে খেলতে নেমে ২৪ বলে ২টি চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কার মারে ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন নাফীস। অধিনায়ক নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ৪ বলে ১৫ রানের ক্যামিও ইনিংস। বল হাতে সোহরাওয়ার্দী শুভ এবং সুজন নেন ২টি করে উইকেট।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি শাইনপুকুরেরও। পাওয়ার প্লে'র ফায়দা নিতে ব্যর্থ হন দুই ওপেনার সাব্বির হোসেন এবং সোহরাওয়ার্দী শুভ। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন শুভ। করেন ১৪ বলে ১৬ রান।

দ্বিতীয় উইকেটেও রানের গতি বাড়াতে ব্যর্থ হন আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং সাব্বির। অষ্টম ওভারের শেষ বলে আফিফ আউট হওয়ার আগে ১১ বল খেলেন করেন মাত্র ৮ রান। ফলে শেষের ৫ ওভারে জয়ের জন্য ৫৯ রানের প্রয়োজন থাকে শাইনপুকুরের।

পরের ওভারেই ওপেনার সাব্বিরকে ফিরিয়ে রূপগঞ্জের আশা বাড়িয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ। আউট হওয়ার আগে ৩ ছক্কার মারে ২৫ বলে ৩২ রান করেন সাব্বির। এরপর দলের পুরো চিত্রনাট্য নিজ হাতে লিখেন শাইনপুকুর অধিনায়ক শুভাগত।

উইকেটে নেমে প্রথম ২ বলেই হাঁকান ছক্কা, পরের বলে নেন ১ রান। লক্ষ্যমাত্রা নেমে আসে ২৪ বলে ৪৪ রানে। দশম ওভারের শেষ তিন বলে আবারও ৬, ২ ও ৪ রানের মারে মোট ১৫ রান তুলে নেন শুভাগত। তখনো পেন্ডুলামের মতো ঝুলতে থাকা ম্যাচে শাইনপুকুরের প্রয়োজন ১৮ বলে ২৯ রান। যা কি-না ১৫ বলেই করে ফেলে শাইনপুকুর।

অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা শুভাগতকে ফেরান আসিফ হাসান। তবে আউট হওয়ার আগে কাজের কাজটি করে যান অধিনায়ক শুভাগত। ১০ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৩২ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৪ বলে ২২ রান।

দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে ফিরে যান ধীমান ঘোষ। তবে সে ওভার থেকে ১০ রান নেয়ায় জয়ের জন্য শেষ ওভারে বাকি থাকে ১১ রান। দলের জয়ের দায়িত্বটা নিজ কাঁধে নেন রূপগঞ্জ অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। করতে আসেন শেষ ওভার।

প্রথম বল ওয়াইড করেন নাঈম, দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে স্ট্রাইকে দেলোয়ার হোসেনকে আনেন তৌহিদ হৃদয়। ম্যাচে প্রথমবারের মত স্ট্রাইক পেয়েই ছক্কা হাঁকান দেলোয়ার, পরের বলে ৪ মেরে দলের জয়টাও নিশ্চিত করেন এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

তবে অধিনায়কোচিত ইনিংসে ম্যাচ মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার সুবাদে ম্যাচসেরার পুরষ্কারটা জেতেন শুভাগত হোমই।

এসএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।