দু’টি সুযোগ পেয়ে স্বস্তিতে মাশরাফি

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:০২ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

‘আরে ধুর, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তো রাউন্ড রবিন লিগে আমাদের রংপুর রাইডার্সের সামনে দাড়াতেই পারেনি। এতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়ে তুলতে পারেনি। প্রথমবার ৬৩ আর পরের বার ৭২’এ অলআউট হয়েছে। ঐ সামান্য ক’টা রান টপকে আমরা দুবারই হেসে খেলে ৯ উইকেটে জিতেছি।’- কোয়ালিফায়ারের আগে এই ভেবে রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফি নির্ভার থাকতেই পারেন। তার মনোবলও আকাশছোঁয়া হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো মাশরাফি অমন কিছু ভাবছেন না।

কোয়ালিফায়ার ১’এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবার আগে কোনরকম পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলতে নারাজ রংপুর ক্যাপ্টেন। তার ভালই জানা, আগের দুই জয়ে হয়ত অবস্থান সমৃদ্ধ হয়েছে। পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে থেকে এক নম্বর হয়ে কোয়ালিফায়ারে নামা যাচ্ছে। তাতে হয়ত মনোবল আর ও আত্মবিশ্বাস একটু বেশী থাকবে। কিন্তু নকআউট পর্বে সেই ম্যাচের পারফর্ম্যান্স ও ফল কোনটারই এতটুকু গুরুত্ব নেই। এখানে আগের ম্যাচের ফল অর্থহীন। নতুন ম্যাচে আগের হিসেব নিকেশও থাকবে না।

তাই মাশরাফি আগের দুই ম্যাচের পরিণতির কথা ভেবে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চান না। তবে কুমিল্লাকে পরপর দু’বার হারানো এবং এক নম্বর হয়ে নকআউট পর্বে আসতে পারাকে ইতিবাচক চোখে দেখতে চান রংপুর অধিনায়ক। তার কাছে এটাও এক ধরনের স্বস্তি।

তা হলো, ৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার কাছে কোয়ালিফায়ার ১’এ হারলেই সব শেষ হয়ে যাবে না। আরও একটি সুযোগ থাকবে। তাতে করে মানসিক চাপটা খানিক কম। কোয়ালিফায়ার ১’এ পারিনি তো কি হয়েছে? সবকিছু তো আর শেষ হয়ে যায়নি- এই চিন্তার অবকাশ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আগামীকাল ঢাকা ডায়নামাইটস ও চিটাগং ভাইকিংসের বিজয়ীর সঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার আবার খেলার সুযোগ থাকবে। এটাই মাশরাফিকে খানিক চাপমুক্ত রেখেছে।

তাই তো মুখে এমন সংলাপ, ‘এই টুর্নামেন্টের যে সিস্টেম তাতে করে সবাই চাইবে যে এক-দুইয়ে থাকার, তাহলে দুইটা সুযোগ থাকে। এটা ভালো যে, আমরা দুইটা সুযোগ পাব। সুতরাং এটা আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে যে সে সুযোগটা পেয়েছি।’

তবে এটা ভেবে নির্ভার থাকার পাত্র তিনি নন। বরং দুই ম্যাচ সহজে জিতলেও মাশরাফি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শক্তিশালী ও কঠিন প্রতিপক্ষ ধরেই মাঠে নামার পক্ষে। তাই তো তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা অনেক শক্তিশালী দল, আপনি যদি ভারসাম্যের দিকে যান, খুব শক্তিশালী দল। কাজেই আগের সাফল্যর কথা ভেবে বসে থাকলে চলবেনা। সত্যিকার অর্থে আসল ও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ তো সামনে।’

নিজ দলের প্রতিও তার আস্থা যথেষ্ট। তার দলের কম্বিনেশনটাকে ভাল আখ্যা দিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের কম্বিনেশনও ভাল। শেষ ছয় ম্যাচে আমরা খুব ভালো করেছি। বিশেষ করে টপ অর্ডারে যে চারজন ব্যাটিং করেছে, তাদের দুইজন এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং ক্রিস গেইল এই ফরম্যাটের অলমোস্ট কিং। গেইল হয়তো বা বেস্ট ফর্মে এখনো আসেনি। এবি ডি ভিলিয়ার্স প্রথম ম্যাচ থেকে ফর্মে আছে, তার ব্যাটের ধারা সাবলীল ছিল এবং প্রতি ম্যাচের তার অবদানও রাখতে পেরেছেন। তাতে আমরা অনেক সুবিধা পেয়েছি। কারণ বড় বড় রান চেজ করতে হয়েছে।’

মাশরাফি মানছেন এক সময় তারা খুব খারাপ অবস্থায় ছিলেন। এক পর্যায়ে প্রথম ছয় ম্যাচে চার পরাজয় আর দুটি মাত্র জয় ছিল সঙ্গী। সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়ে সবার ওপরে উঠে আসা অনেক বড় ব্যাপার। সেই উঠে আসার পিছনে যে অ্যালেক্স হেলস, রিলে রুশো আর ডি ভিলিয়ার্সের বিরাট অবদান, সে অনুভব ও উপলব্ধিটা ঠিকই আছে ভিতরে।

আর আছে বলেই মুখে এমন কথা, ‘আমরা একটা সময় টুর্নামেন্টে খুব বাজে অবস্থায় ছিলাম, ছয় ম্যাচে দুই জয়। আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারব কি না, এই রকম সিচুয়েশনে ছিলাম। ওখান থেকে এই পর্যন্ত আসা মনে করি যে আমাদের দলের জন্য খুব পজিটিভ হয়েছে, ভালো হয়েছে। তবে আবারো আমি মনে করে যে সামনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।’

এআরবি/এসএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।