তামিমকে সঙ্গে পেলেন মুশফিক, রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে সাকিব

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ
শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ , স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চলতি বিপিএলের পর্দা নামতে বাকি আর মাত্র ৪টি ম্যাচ। তিন দিনে হওয়া এই চার ম্যাচ শেষেই জানা যাবে কোন দলের ঘরে যাবে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরের শিরোপা। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রথম পর্বের খেলা। টিকে রয়েছে কেবল ৪টি দল- রংপুর রাইডার্স, চিটাগং ভাইকিংস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এবং ঢাকা ডায়নামাইতস।

এ চার দলের প্লে-অফের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন বোলার-ব্যাটসম্যানরা। তাদের সমষ্টিগত পারফরম্যান্সেই শেষপর্যন্ত সুপার ফোরের টিকিট পেয়েছে দলগুলো। ব্যক্তিগত সাফল্যে এখনো পর্যন্ত এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে রাজত্ব বিদেশি ব্যাটসম্যানদের, বল হাতে আবার একচ্ছত্র আধিপত্য চলছে দেশি বোলারদের।

তবে টুর্নামেন্ট শেষের দিকে এগিয়ে যেতেই ধীরে ধীরে ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠছেন দেশি তারকারা। যার প্রমাণ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার সেরা পাঁচে তামিম ইকবালের জায়গা করে নেয়া। কেননা বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব শেষেও সেরা পাঁচজনের তালিকায় দেশি ব্যাটসম্যানদের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন মুশফিকুর রহীম।

সেখানে প্লে-অফের আগে প্রথম পর্ব শেষে মুশফিককে সঙ্গ দিতে হাজির হয়েছেন তামিম ইকবাল। অ্যালেক্স হেলসকে নিচে নামিয়ে পাঁচে উঠে এসেছেন তামিম। এছাড়া সুপার ফোরে চার দলের দেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেরা দশে রয়েছেন চিটাগং ভাইকিংসের ইয়াসির আলি রাব্বি এবং ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

এ দুইজন ছাড়াও সেরা দশে রয়েছেন বাদ পড়ে যাওয়া খুলনা টাইটানসের জুনায়েদ সিদ্দিকী এবং সিলেট সিক্সার্সের সাব্বির রহমান রুম্মন। তবে তাদের আর ম্যাচ না থাকায় টুর্নামেন্ট শেষে সেরা দশ থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

অন্যদিকে বল হাতে ঠিক উল্টো চিত্রের দেখা মিলেছে পুরো বিপিএল জুড়েই। আসরের শুরু থেকেই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় জয়জয়কার স্থানীয় বোলারদের। যা বহাল তবিয়তে রয়েছে প্রথম পর্ব শেষেও। সেরা পাঁচ উইকেট শিকারীর তালিকার সবাই ছাড়াও সেরা দশে রয়েছেন মোট ৯ জন বাংলাদেশি বোলার।

২২ উইকেট নিয়ে বোলারদের শীর্ষে রয়েছেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু তার দল সিলেট বাদ পড়ে যাওয়ায় নিজের উইকেট আর বাড়াতে পারবেন না তাসকিন। ফলে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডটা নিজের করার সুযোগ নেই তার।

তবে এ সুযোগটা রয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সামনে। প্রথম পর্বের ১২ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। রেকর্ড গড়তে আর মাত্র ২টি উইকেট প্রয়োজন তার। এজন্য অন্তত এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন সাকিব। সোমবার চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে এলিমিনেটর ম্যাচটি জিতলে পরে কোয়ালিফায়ার এবং কোয়ালিফায়ার ম্যাচেও জিতলে মোট ৩টি ম্যাচ পাবেন সাকিব। এ তিন ম্যাচে ২ উইকেট পেলেই এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়ে ফেলবেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার।

২০১৫ সালের আসরে বরিশাল বুলসের পেসার কেভন কুপার, ২০১৭ সালে সাকিব নিজে এবং চলতি আসরে তাসকিন নিয়েছেন ২২টি উইকেট। এখনো পর্যন্ত এটিই বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড। মাত্র ২টি উইকেট পেলেই তাসকিন, কুপার এবং নিজেকে ছাড়িয়ে এককভাবেই শীর্ষে উঠে যাবেন সাকিব।

প্রথম পর্বে বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক

১. রিলে রুশো (রংপুর রাইডার্স) – ১২ ম্যাচে ৮৫.৬৬ গড়ে ৫১৪ রান, সর্বোচ্চ ১০০*
২. মুশফিকুর রহীম (চিটাগং ভাইকিংস) – ১২ ম্যাচে ৩৮.০০ গড়ে ৪১৮ রান, সর্বোচ্চ ৭৫
৩. নিকলাস পুরান (সিলেট সিক্সার্স) – ১১ ম্যাচে ৪৭.৩৭ গড়ে ৩৭৯ রান, সর্বোচ্চ ৭৬*
৪. লরি ইভানস (রাজশাহী কিংস) – ১১ ম্যাচে ৩৭.৬৬ গড়ে ৩৩৯ রান, সর্বোচ্চ ১০৪*
৫. তামিম ইকবাল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস) – ১২ ম্যাচে ২৮.০৯ গড়ে ৩০৯ রান, সর্বোচ্চ ৭৩

এছাড়া সেরা দশে থাকা বাংলাদেশের অন্য ব্যাটসম্যানরা হলেন ইয়াসির আলি রাব্বি ১০ ম্যাচে ২৯৯ রান (৭ম), জুনায়েদ সিদ্দিকী ১২ ম্যাচে ২৯৮ রান (৮ম), সাব্বির রহমান ১২ ম্যাচে ২৭৬ রান (৯ম), সাকিব আল হাসান ১২ ম্যাচে ২৭৫ রান (১০ম)।

প্রথম পর্বে বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী

১. তাসকিন আহমেদ (সিলেট সিক্সার্স) – ১ ম্যাচে ১৪.৪৫ গড়ে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ২৮ রানে ৪ উইকেট
২. সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস) – ১২ ম্যাচে ১৫.২৮ গড়ে ২১ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৪ উইকেট
৩. মাশরাফি বিন মর্তুজা (রংপুর রাইডার্স) – ১২ ম্যাচে ১৬.৪২ গড়ে ১৯ উইকেট, সেরা বোলিং ১১ রানে ৪ উইকেট
৪. আবু জায়েদ রাহী (চিটাগং ভাইকিংস) – ১২ ম্যাচে ২১.৮৩ গড়ে ১৮ উইকেট, সেরা বোলিং ২৫ রানে ৩ উইকেট
৫. মোহাম্মদ সাঈফউদ্দীন (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস) – ১১ ম্যাচে ১৬.২৩ গড়ে ১৭ উইকেট, সেরা বোলিং ২২ রানে ৪ উইকেট

এছাড়া সেরা দশে থাকা বাংলাদেশের অন্য বোলাররা হলেন ফরহাদ রেজা ১২ ম্যাচে ১৭ উইকেট (৬ষ্ঠ), আরাফাত সানি ১২ ম্যাচে ১৬ উইকেট (৮ম), রুবেল হোসেন ১২ ম্যাচে ১৬ উইকেট (৯ম) এবং অলক কাপালি ১২ ম্যাচে ১৪ উইকেট (১০ম)।

বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড

১. কেভন কুপার (বরিশাল বুলস) – ৯ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ১৫ রানে ৫ উইকেট (২০১৫)
২. তাসকিন আহমেদ (সিলেট সিক্সার্স) – ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ২৮ রানে ৪ উইকেট (২০১৯)
৩. সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস) – ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৫ উইকেট (২০১৭)
৪. আবু হায়দার রনি (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস) – ১২ ম্যাচে ২১ উইকেট, সেরা বোলিং ১৯ রানে ৪ উইকেট (২০১৫)
৫. সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস) - ১২ ম্যাচে ২১ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৪ উইকেট (২০১৯)

এসএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।