সামর্থ্যে ফারাক নেই, পার্থক্য আত্মবিশ্বাসে : মাশরাফি

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিপিএল আসলে কতটা আলো ছড়াচ্ছে? বাংলাদেশের ক্রিকেটে কি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে? দেশের তরুণ ক্রিকেটাররাই বা এ আসরে কেমন খেলছেন? তাদের পারফরমেন্স কতটা সন্তোষজনক?

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বিদেশিদের সাথে তাল মিলিয়ে কতটা ভাল খেলতে পারছেন? দলে অবদান রাখতে পারছেন? তাদের গড়পড়তা পারফরমেন্স কতটা সন্তোষজনক? রবিন লিগের শেষে এসে এসব প্রশ্নই উঠছে ঘুরেফিরে।

পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে- সিনিয়রদের মধ্যে মুশফিকুর রহীম, মাশরাফি বিন মর্তুজা আর সাকিব আল হাসান ছাড়া সে অর্থে সিনিয়র ও প্রতিষ্ঠিত পারফরমারদের আর কারোই তেমন পারফরমেন্স নেই। জাতীয় দলের অন্যান্য সদস্য লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল হক, ইমরুল কায়েস, নুরুল হাসান সোহানরা সে অর্থে জ্বলে উঠতে পারেননি।

বরং তাদের পারফরমেন্স রীতিমত হতাশাজনক। শুধু তাদের কথা বলা কেন, তরুণরাও সে অর্থে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। সব দলই প্রায় বিদেশি নির্ভর হয়েই খেলছে। প্রায় ম্যাচে দল জেতাচ্ছেন বিদেশিরাই। ব্যাটিংয়ে মুশফিক ছাড়া সেরা পাঁচে একজন দেশি ব্যাটসম্যন নেই। বোলিংয়ে তাসকিন, মাশরাফি, সাকিব, ফরহাদ রেজা আর শফিউল আলো ছড়ালেও কোন তরুণ প্রতিভার স্ফুরন ঘটেনি। পুরোনোরাই ভাল করেছেন।

কেন জাতীয় দলের তরুণ সদস্য আর তরুণ প্রজন্মরা সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছেন না, নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না? তবে কি বিদেশিদের সাথে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মর অনেক বড় ফারাক? বিদেশিদের মেধা ও সামর্থ্যর কাছেই তাহলে ম্লান বাংলাদেশের তরুণরা?

এ প্রশ্নর জবাব দিতে গিয়ে রংপুর তথা জাতীয় দলের ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা অবশ্য তরুণদের বিপক্ষে কিছু বলেননি। বরং তার কথা বার্তা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ তরুণদের পক্ষেই গেছে।

আজ কুমিল্লাকে উড়িয়ে রংপুর কোয়ালিফয়ার পর্বে এক নম্বর হওয়ার পরে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে এসেছিলেন মাশরাফি। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে তরুণরা কেন অনুজ্জ্বল? মাশরাফি বোঝানোর চেষ্টা করেন, ভীনদেশির কোটায় যারা খেলছেন, তারা সবাই টি-টোয়েন্টি খেলতে খেলতে হাত পাকিয়ে ফেলেছেন। আর বাংলাদেশের তরুণরা সে অর্থে টি-টোয়েন্টি খেলেই না। সেই যে আগের বার বিপিএল খেলেছে, তার পর আবার এই প্রথম ২০ ওভারে ফরম্যাটে খেলতে নামা।

মাশরাফি কিছুতেই মানতে চান না যে, বাংলাদেশের তরুণরা সামর্থ্যে পিছিয়ে। তার মনে হয় সামর্থ্য আছে। তবে আত্মবিশ্বাসটা কম। আর সামর্থ্যর প্রয়োগ ঘটাতে যে ঐ আত্মবিশ্বাসটাই খুব বেশি দরকার।

তাইতো মাশরাফির কন্ঠে এমন সংলাপ, ‘অবশ্যই তাদের ওপর চাপ দিয়েও লাভ নেই। এক বছর পর পর বিপিএল আসে, এই টুর্নামেন্টটা সহজও না। আমার এত দিনের অভিজ্ঞতা বলে, এই টুর্নামেন্ট সহজ না। বিশেষ করে ঢাকায় যেহেতু সবচেয়ে বেশি খেলা হয়, সেহেতু ঢাকার উইকেটে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে ব্যাটসম্যানদের। আমি কখনই দেখি না কাজটা সহজ বা ভালোভাবে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে করা সম্ভব। ওরা (তরুণরা) যদি আরও বেশি সুযোগ পায়, আমাদের দেশে যদি আরও একটা টুর্নামেন্ট হয়, যেটা নিয়ে কথা হচ্ছে কিছু দিন ধরেই, সেটা যদি করা যায়। তাহলে যারা তরুণ আছে, অনেকেই আছে, আফিফ আছে, যারা ভালো প্রমিসিং আর কি, তাদের এই সুযোগটা থাকবে। এমন টুর্নামেন্ট হলে ওরা আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হবে।’

মাশরাফির অনুভব, বিদেশিদের সঙ্গে পার্থক্যর আসল জায়গা হলো আত্মবিশ্বাস। তার ভাষায়, ‘আমাদের লোকালদের সাথে ফরেনারের পার্থক্য যদি দেখেন, তাহলে দেখবেন বিদেশিরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। তারা যখন একটা জিনিস করে, নিজের প্রতি অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে করে। পার্থক্য কিন্তু এতটুকুই। সামর্থ্য কিন্তু একই। হয়তো তাদের ছয় দেখলে হয় আমাদের ছয় থেকে অনেক দূরে বল যাচ্ছে। কিন্তু ছয় তো ছয়ই। ছয় মারা, গ্যাপে ছয় মারার সামর্থ্য কিন্তু আমাদের আছেই। কিন্তু ওই যে এক্সিকিউট করার মেন্টাল স্ট্রেন্থে কাজ করার জায়গা আছে। ওরা যদি আরেকটু খেলার সুযোগ পায়, তাহলে বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি প্লেয়ার বের হওয়ার সুযোগ আছে। আমি তুলনায় যাবো না। তবে আমাদের প্রমিসিং প্লেয়ার আছে।’

এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।