সিলেটকে বিদায় করে আশা বাঁচিয়ে রাখল মিরাজের রাজশাহী

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৬ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

এবারের বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের শুরুটা হয়েছিল রাজশাহী কিংস ও সিলেট সিক্সার্সের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে। চট্টগ্রাম পর্বের শেষটাও হলো দুই দলের লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই। প্রথম ম্যাচে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে রাজশাহীকে উড়িয়ে দিলেও, পরের দেখায় তা সুদে-আসলে বুঝিয়ে দিল মেহেদি হাসান মিরাজের রাজশাহী।

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে দুই দলের জন্যই ছিলো একটিই পথ, সেটি হলো বাকি থাকা সব ম্যাচে জয় লাভ। সিলেটের হাতে এর পরে একটি ম্যাচ বাকি থাকলেও, নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল রাজশাহী। সিলেট সিক্সার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের কাজটি শেষ করে রাখলো তারা।

এখন রাজশাহীর প্লে-অফ খেলার ভাগ্য ঝুলে রয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটসের দিকে। সাকিব আল হাসানের ঢাকা শেষ দুই ম্যাচে হেরে গেলে সরাসরি শেষ চারে চলে যাবে রাজশাহী। আর দুইটি ম্যাচেই ঢাকা জিতে গেলে বাদ পড়ে যাবে রাজশাহী। অন্যথায় সামনে চলে আসবে নেট রানরেটের হিসেব। অন্যদিকে খুলনা টাইটানসের পর টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দল হিসেবে বাদ পড়ে গিয়েছে সিলেট সিক্সার্স।

ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে সিলেট ১৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করানোর পর মনে হচ্ছিলো হয়তো সহজ জয়ই পাবে তারা। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রাজশাহীরও। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সবকিছু বদলে দেন লরি ইভানস এবং রায়ান টেন ডেসকাট।

হাত থেকে ছিটকে যেতে থাকা ম্যাচে দুজন মিলে মাত্র ৪৫ বলে গড়েন ১০৯ রানের জুটি। ইভানস ৩৬ বলে ৭৬ এবং ডেসকাট ১৮ বলে ৪২ রানের ঝড় তুললে পাক্কা ২ ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রাজশাহী কিংস।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন ওপেনার জাকির হাসান। তবে অন্য প্রান্তে সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন ক্যারিবিয়ান জনসন চার্লস। যে কারণে তিনে নামা শাহরিয়ার নাফিস ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক করতে না পারলেও রানরেটটা কখনোই কমেনি রাজশাহীর।

সপ্তম ওভারের শেষ বলে অলক কাপালির প্রথম শিকার হয়ে আউট হওয়ার আগে নাফিস ১৩ বল থেকে করেন ৯ রান। নিজের পরের ওভারেই চার্লসকেও ফেরান সিলেট অধিনায়ক কাপালি। আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৭ চারের মারে ৩৯ রান করেন চার্লস।

তার উইকেটটি যেন শাপেবর হয়ে আসে রাজশাহীর জন্য। কেননা তখন জুটি বাঁধেন লরি ইভানস এবং রায়ান টেন ডেসকাট। দুজন মিলে শুরু থেকেই কচুকাটা করতে থাকেন সিলেটের বোলারদের। একের পর এক বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারিতে সমীকরণ চলে আসে রাজশাহীর হাতের মুঠোয়।

শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য যখন প্রয়োজন ৪১ রান, তখন মোহাম্মদ নওয়াজের করা ওভার থেকেই একাই ২৪ রান নেন লরি ইভানস। সে ওভার শেষেই মূলত নিশ্চিত হয়ে যায় রাজশাহীর জয়। তবে ডেসকাট এবং ইভানসের কেউই ম্যাচ শেষ করে ফিরতে পারেননি।

১৭তম ওভারে আউট হন দুজনই। ১০ চার ও ২ ছক্কার মারে ৩৬ বল থেকে ৭৬ রান করেন ইভানস, ১৮ বলে ৪২ রান করার পথে ৩টি চারের সঙ্গে হাঁকান ২টি বিশাল ছক্কা। শেষদিকে ক্রিশ্চিয়ান জঙ্কার ৮ এবং সৌম্য সরকার ২ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই একটি করে চার-ছক্কা মেরে নিজেদের বড় সংগ্রহ গড়ার উদ্দেশ্য পরিস্কার করে দেন লিটন কুমার দাস। তবে সে ওভারের শেষ বলেই তাকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন আরাফাত সানি।

দ্বিতীয় উইকেটে জেসন রয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন আফিফ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৮ বলে ১৩ রান করেন রয়। তৃতীয় উইকেটে বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন আফিফ এবং সাব্বির। তবে খুব বেশি বাউন্ডারি নির্ভর হয়ে পড়ায় ৪৬ রানের জুটি গড়তে তাদের প্রয়োজন হয় ৪০ রান।

একই কারণে ২টি করে চার-ছক্কা হাঁকালেও ২৯ রান করতে ২৫ বল খরচ করেন আফিফ। চতুর্থ উইকেটে নিকলাস পুরানের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। ১৬তম ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে ৪ চার ও ২ ছক্কার মারে ৩৯ বলে ৪৫ রান করেন সাব্বির।

শেষদিকে একাই ঝড় তোলেন নিকলাস পুরান। শেষ চার ওভারে তার ঝড়ো ব্যাটেই ৪৮ রান পায় সিলেট। মাত্র ২১ বলে পূরণ করেন নিজের ফিফটি। শেষপর্যন্ত ৬টি করে চার-ছক্কার মারে ৩১ বলে ৭৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন পুরান।

এসএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।