এবারের বিপিএল আমার জীবনের অনেক বড় টুর্নামেন্ট : সাব্বির

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:২৭ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০১৯

সবার জানা ‘পঞ্চ পান্ডব’ তথা মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর দলে থাকা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত। এর বাইরে আরও ক’জন পারফরমারেরই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা নিশ্চিত। তাই বলে বিশ্বকাপ স্কোয়াড মোটামুটি চূড়ান্ত, তাও বলা যাবে না। বলার কোন সুযোগও নেই।

কারণ, একটা বড় অংশের আগামী বিশ্বকাপ খেলা মোটামুটি নিশ্চিত। ওপেনিং ব্যাটসম্যান থেকে শুরু করে টপ, মিডল ও লেট অর্ডার ব্যাটসম্যান, পেস বোলার এবং স্পিনার কোটায় কে বা কারা বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে থাকতে পারেন? তা অনেকটা স্থির হয়ে গেছে।

ওপেনিং এবং টপ অর্ডারে তামিম ইকবাল, লিটন দাস এবং সৌম্য সরকার ইতিমধ্যেই ভাল খেলে দলে থাকা নিশ্চিত করে ফেলেছেন। এর বাইরে পেসার মোস্তাফিজ এবং অফ-স্পিনার মিরাজের বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও অবস্থান প্রায় পাকা। এর বাইরে আরও তিন-চারজন পারফরমার আছেন, যারা শতভাগ না হলেও অনেকটাই নিশ্চিত।

তবে হাতে গোনা দু’একটি পজিসনের পারফরমার নিয়ে সংশয় আছে। লেট মিডল অর্ডার, বিশেষ করে সাত নম্বরে একজন পরিণত ও দক্ষ ফিনিশারের অভাব আছে সু-স্পষ্ট। মোহাম্মদ মিঠুন আর আরিফুলকে দিয়ে মাঝে চেষ্টা করা হয়েছে। তারা হঠাৎ বা মাঝে মধ্যে একটু আধটু জ্বলে উঠলেও পর মুহূর্তে দপ করে নিভে গেছেন।

মোটকথা নিজেদের অপরিহার্য্যতার প্রমাণ দিতে পারেননি। সহজ করে বললে, সাত নম্বরে ফিনিশার হিসেবে মিঠুন ও আরিফুলের বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, মিঠুন ও আরিফুলের বিকল্প হিসেবে কাকে ভাবা হচ্ছে?

সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে টিম ম্যানেজমেন্টের তালিকায় সবার আগে আছে সাব্বির রহমান রুম্মনের নাম। কঠিন সত্য হলো, সাব্বির এখন জাতীয় দলের বাইরে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। শাস্তির খড়গ ঝুলছে এখনো মাথায়। তাই পাঁচ মাস ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলা হচ্ছে না সাব্বির রহমান রুম্মনের। ভিতরের খবর, মাস খানেক পর সে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে।

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কথা শুনে আবার ভাববেন না তার বিপিএল খেলা নিষেধ। এখানে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বলতে সাব্বিরের জাতীয় দলের হয়ে খেলা নিষেধ। তাই এ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ঠিকই বিপিএলের হয়ে খেলবেন। আগের বারের মত এবারো তার দল সিলেট সিক্সার্স।

ভাবা হচ্ছে এবারের বিপিএলই ভাগ্যর চাকা ঘুরে যেতে পারে সাব্বির রহমান রুম্মনের। কথা-বার্তায় মনে হলো সাব্বিরও ভিতরে ভিতরে তাই ভাবছেন। তিনিও জানেন, বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে বিপিএল রীতিমত সেতুর কাজ করতে পারে। তাই তার চিন্তা-ভাবনায় বিপিএল পাচ্ছে অন্যরকম গুরুত্ব।

আজ ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন সিলেট সিক্সার্সের এবারের বিপিএল প্রস্তুতি পবের্র শুরুতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সাথে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উত্তর দিকে একাডেমি মাঠে নিবিড় অনুশীলনের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে অনেক কথার ভীড়ে সাব্বির রহমান রুম্মন পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘এবারের বিপিএল আমার জন্য বড় প্লাটফর্ম।’

জাতীয় দলের দরজা সবার জন্যই খোলা- এ উপলব্ধি ও অনুভব ভিতরে ঠিকই আছে। তারপরও সাব্বিরের অনুভব, বিপিএলে ভাল খেলতে পারলে আবার জাতীয় দলে ঢোকার পথ সহজ হয়ে যাবে। আর সে কারণেই তার মুখে এমন কথা, বিপিএলের এবারের আসর আমার জন্য অনেক বড় মঞ্চ। আমার জীবনেরই অনেক বড় টুর্নামেন্ট।’

যদিও শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ব হওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটেও ভাল সময় কাটেনি। জাতীয় লিগ ও বিসিএল- কোনটাতেই সুবিধা করতে পারেননি। সে অর্থে রান পাননি। তারপরও ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ভেবে এবারের বিপিএলে ভাল খেলতে মুখিয়ে সাব্বির। সে কারণেই মুখে এ দৃঢ় সংকল্প, ‘ইনশাআল্লাহ আমি চেষ্টা করব আমার ন্যাচারাল ক্রিকেটটা খেলার জন্য।’

তার সমসাময়িক, সম-বয়সী ও সহযোগীদের অনেকেই জাতীয় দলে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন; কিন্তু নিষেধাজ্ঞার খাড়ায় ঝুলে সাব্বির ছিলেন বাইরে। এ নিষেধাজ্ঞায় পড়ে থাকা সময়টা অনেক কঠিন। বিশেষ করে মানসিকভাবে। তা অকপটে স্বীকার করে সাব্বির বলেন, ‘একা থাকা খুবই কঠিন। বিশেষ করে মানসিকভাবে। এই সময়টায় এনসিএল খেলেছি, বিসিএল খেলেছি। অনুশীলন করেছি নিজে নিজে। বাসায় ছিলাম ফ্যামিলির সাথে। তো অলমোস্ট পাঁচ মাস হয়ে গেছে, আর এক মাস বাকি আছে। দেখি এবার বিপিএলটা কি হয়। হ্যাঁ আমি যদি বিপিএলে ভালো পারফর্ম করি চান্স থাকবে আমার। আমি চেষ্টা করব বিপিএলে ভালো কিছু করার। তারপর বিশ্বকাপে সুযোগের কথা।’

সাব্বির তার সহজাত ও স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে সফল হবেন অনিবার্যভাবে। আর তার ব্যাট কথা বললে রান আসবে, প্রতিপক্ষ বোলিং অগোছালো হবে। তার দল সিলেট সিক্সার্সও উপকৃত হবে। দেখা যাক এবারের বিপিএলে কি করেন সাব্বির?

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।