আবারও ৮ উইকেট শিকার নাঈমের
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে তরুণ কোনো ক্রীড়াবিদ অবিস্মরণীয় কিছু করলেই তাকে আখ্যায়িত করা হয় ‘বিস্ময় বালক’ হিসেবে। সে হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ১৮ বছর বয়সী অফস্পিনার নাঈম হাসানকেও বিস্ময় বালক বলা যায় না?
এ প্রশ্নের উত্তরে তর্ক বিতর্ক করা যাবে অনেক। সেসব বাইরে রেখে গুণকীর্ত্তন করা যাক চট্টগ্রামের ছেলে নাঈমের। গুণ বর্ণনা হবেই না কেন নাঈমের? টেস্ট অভিষেকে বিশ্বরেকর্ড গড়ার পর মাত্র দুই মাসের মধ্যেই দ্বিতীয়বারের মতো যে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিলেন ৮ উইকেট।
গত অক্টোবরে ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) চতুর্থ রাউন্ডে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট, খরচা করেছিলেন ১০৬ রান। সেটি ছিলো তার ক্যারিয়ারের কেবল ১৫তম প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ।
আর এবার ক্যারিয়ারের ১৮তম প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেন্ট্রাল জোনের বিপক্ষে মাত্র ৪৭ রান খরচায় নিয়েছেন ৮ উইকেট। তার স্পিন ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে মাত্র তিন দিনেই ৩২১ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে গিয়েছে সেন্ট্রাল জোন।
ম্যাচের তৃতীয় দিন মারমুখী ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করেন ইস্ট জোনের দুই ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক এবং ইয়াসির আলি রাব্বি। মুমিনুল ১০০ রানে আউট হলেও রাব্বি অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে। ইস্ট জোন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রানের মাথায়।
প্রথম ইনিংসে ২০১ রানে পিছিয়ে থাকায় সেন্ট্রাল জোনের সামনে প্রায় ১৫০ ওভারে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫৬ রানের। এ বিশাল লক্ষ্য তাড়া করার চেয়ে ম্যাচ ড্রয়ের দিকে আগানোর পথটাই বেঁছে নেয় সেন্ট্রাল জোন।
কিন্তু তাদের পরিকল্পনায় বাঁধ সাধেন চট্টগ্রামের ১৮ বছরের তরুণ অফস্পিনার নাঈম হাসান। বাঁহাতি তাইজুল ইসলামের সাথে বোলিং শুরু করে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই আঘাত হানেন নাঈম। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন প্রথম ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করা পিনাক ঘোষকে।
এরপর একে একে সাঈফ হাসান, আব্দুল মজিদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মার্শাল আইয়্যুব ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে ফিরিয়ে একাই সেন্ট্রাল জোনের ৬ উইকেট তুলে নেন নাঈম।
তখনই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলিকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নাঈমের দশ উইকেট প্রাপ্তি সম্ভাবনা শেষ করে দেন আবু জায়েদ রাহী। তবে দমে যাননি নাঈম। পরে আবার সাজঘরে ফেরান মোশাররফ হোসেন রুবেল ও আবু হায়দার রনিকে। দ্বিতীয়বারের মতো পূরণ করেন প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে ৮ উইকেট।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এক ইনিংসে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটা সানজামুল ইসলামের দখলে, ৮২ রান খরচায় ৯ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। নাঈমের সামনে ছিলো এ রেকর্ড নিজের করে নেয়ার। আবারও বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আবু জায়েদ রাহী।
সেন্ট্রাল জোনের শেষ ব্যাটসম্যান শাহাদাৎ হোসেন রাজীবকে আউট করে দলের জয় নিশ্চিত করেন সিলেটের এ ডানহাতি পেসার। মাত্র তিন দিনেই ম্যাচ জিতে স্বস্তিতেই এবারের বিসিএল শেষ করে ইস্ট জোন। যেখানে তাদের জয়ের নায়ক মাত্র ৪৭ রানে ৮ উইকেট নেয়া নাঈম হাসান।
এসএএস/পিআর