দলের জন্য আরও বেশি করতে চেয়েছিলেন সাদমান

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৮ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

পরিসংখ্যান বলছে টেস্ট ক্রিকেটে ১২ ইনিংস পর হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন বাংলাদেশের কোনো ওপেনার। জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিম ইকবালের ৫২ রানের ইনিংসের পর আর কেউই পারেননি ন্যুনতম পঞ্চাশ ছাড়াতে।

সে তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষিক্ত ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকের ৭৬ রানের ম্যারাথন ইনিংস চোখ বুজে লেটার মার্কস পাওয়ার যোগ্য। কেননা দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে হিসেবের বাইরে রাখলে ওপেনারদের হাফসেঞ্চুরি খুঁজে পেতে ফিরে যেতে হবে ২১ মাস আগে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের ইতিহাসের শততম টেস্টে ৬১ রান করেছিলেন সৌম্য।

তামিম ব্যতীত সেটিই ছিলো বাংলাদেশের ওপেনারদের হাফসেঞ্চুরি করার নজির। প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশের অন্য ওপেনারদের ব্যাটে যে রানখরা সেটি কাটালেন ২৩ বছর বয়সী সাদমান। পাক্কা টেস্ট ক্রিকেটারের মেজাজেই ব্যাট করেছেন নিজের অভিষেক ইনিংসে। গড়েছেন অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ডও।

১৯৯ বলে ৭৬ রামের ইনিংসের অর্ধেক ৩৮ রান করেছেন সিঙ্গেলস দিয়ে, ছয় বাউন্ডারিতে এসেছে ২৪ আর সাত ডাবলস থেকে ১৪, ৫১ টি স্কোরিং শটস। বাকি ১৪৮ বলে কোনো রান করেননি। অফস্টাম্পের বাইরে ও আশপাশে কিছু বল ছেড়ে দিয়েছেন। আর ৬০ ভাগ ডেলিভারি ডিফেন্স করেছেন।

তার ব্যাটিংয়ের পুরোটা সময়জুড়েই বোঝা যাচ্ছিলো উইকেটে টিকে থাকার তীব্র ইচ্ছা ও তাড়না। কিন্তু ক্যারিবীয় লেগস্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর সাদামাটা এক ডেলিভারির লাইন বুঝতে না পারায় ৭৬ রানেই থেমে যায় সাদমানের অসাধারণ এ ইনিংস। আর মাত্র ২৪ রান করতে পারলেই দেশের ইতিহাসের প্রথম ওপেনার হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়তেন সাদমান।

কিন্তু তা হয়নি। তবু সেঞ্চুরি মিসের হতাশা নেই রাজধানী শহরের এ ক্রিকেটারের। নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরুর দিক থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা সাদমানের কণ্ঠে শোনা গিয়েছে দলকে আরও বেশি কিছু দিতে না পারার আক্ষেপের কথাই।

দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাদমান বলেন, ‘সেঞ্চুরি মিস করেছি বলে তেমন কোনো হতাশা নেই। তবে একটু তো সবারই হয় আসলে। ডেব্যু ম্যাচে সেঞ্চুরির চাওয়া তো সবারই থাকে। তবে ওরকম কোনো হতাশা নেই। চেষ্টা করেছি দলের জন্য। যতটুকু দেওয়ার দরকার ছিল আমি সেরকম ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছি। হয়তো পুরোটা করতে পারিনি। দলের যেরকম দরকার ছিল শেষ করতে পারিনি। আমার মনে হয় আরেকটু দিতে পারতাম দলকে।’

এসময়ের নিজের আউটের বলে লাইন মিস করার কথা নিজেই স্বীকার করেন সাদমান। তিনি বলেন, ‘আমি একটু লাইন মিস করেছি। যেরকম টার্ন করার কথা ছিল ওরকম টার্ন করেনি। হয়তো এ কারণে মিস করে ফেলেছি।’

ক্রিকেটীয় কথা অনেক হলো। প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নেমে প্রথম দিনেই সংবাদ সম্মেলনে আসা- অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অন্য সব কিছুর চেয়ে আলাদা? সাদমান ব্যখ্যা করলেন নিজের মতো। খানিক নার্ভাস থাকলেও সামলে নেয়ার কথাই জানান তিনি। সাদমানের ভাষ্যে, ‘প্রথম দিন একটু তো নার্ভাস তো থাকবোই। তবে না ঠিক আছে। কথা তো বলতেই হবে।’

আসলেই! কথা তো বলতেই হবে। যতদিন ভালো ব্যাটিং করবেন, ততোদিনই হয়তো সংবাদ সম্মেলনে নয়তো পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে কথা বলতেই হবে সাদমান ইসলাম অনিকের। আর এই কথার বলার সুযোগটা যাতে খুব ঘন ঘন আসে এমনটাই চাইবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

এসএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।