‘আনপ্রেডিক্টেবল’ উইকেটে হিসাব কষে খেলতে চান মাহমুদউল্লাহরা
দেশের ‘হোম অব ক্রিকেট’ বলা হয়ে মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামকে। কিন্তু এই হোম অব ক্রিকেটের ‘হোম এডভান্টেজ’ কখনোই পাওয়া হয় না স্বাগতিকদের।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম বা খুলনার শেখ আবু নাসের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট সম্পর্ক কাছাকাছি একটা ধারণা পাওয়া গেলেও, দেশের ক্রিকেটের তীর্থস্থান তথা মিরপুরের শেরে বাংলার উইকেট সম্পর্কে ম্যাচে নামার আগপর্যন্ত থাকতে হয় অন্ধকারেই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানিয়েছিলেন, মিরপুরের উইকেট নিয়ে কখনোই আগে থেকে কিছু আন্দাজ করা যায় না, সবসময়ই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ থেকে যায়। সিলেটে প্রথম টেস্টে হারের পরে ঢাকাই ফিরে মিরপুর টেস্টের আগে সেই একই কথা জানালেন টেস্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়ে জিম্বাবুয়েকে কাবু করা যাবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদউল্লাহ সরাসরি বলেন, মিরপুরের উইকেট থাকে আনপ্রেডিক্টেবল। যে কারণে হোম এডভান্টেজ নেওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও শেষপর্যন্ত সেটা পাওয়া যায় না।
উইকেটের এমন অপ্রত্যাশিত আচরণের কারণে সেভাবে মানিয়ে নেয়ার চ্যালেঞ্জটাও নিতে হয় দলের। ঘরের মাঠের সুবিধা না পাওয়ার হতাশা কণ্ঠে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ জানান, এই উইকেটে খেলতে হবে নিজেদের অতীত অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে। তাই আপাতত মিরপুরে শূন্য মস্তিষ্কে নামবে বাংলাদেশ দল।
তিনি বলেন, ‘আমার সাথে সবাই একমত হবেন, মিরপুরের উইকেট সবসময়ই আনপ্রেডিক্টেবল থাকে। আপনি যেটা প্রত্যাশা করবেন, সেটা না হলে আপনাকে মানিয়ে নিতে হবে। আমরা এই ম্যাচে যাচ্ছি মাথা শুন্য করে। পিচ কন্ডিশন যেমন হবে সেই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব। আগেই বলেছি কিছু কিছু জিনিস আমরা আগেই ঠিক করেছি, আমরা সেগুলো করব না। একই সাথে আমাদের শটস গুলোও, যার যার যেই স্ট্রং জোনে শট থাকে, সেগুলো মাথায় রেখে যদি আমরা খেলতে পারি, তাহলে পারফরম্যান্স দেখাতে পারব। এই জিনিস গুলোই আমাদের মাথায় কাজ করছে।’
টাইগার দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমি শেষ সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এভাবে টেস্ট খেলার কোন মানে হয় না। আসলে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। কারণ প্রত্যাশা থাকে ঘরের মাঠের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে আপনি ম্যাচ জিতবেন। সবারই এমন প্রত্যাশা থাকে, ব্যক্তিগত প্রত্যাশাও থাকে। যদি সেটা পূর্ণ না হয় তখন একটা হতাশা কাজ করেই। প্রতিটা ছেলেই কষ্ট করছে, স্ট্রেন্থ ও স্কিল নিয়ে। অনুশীলনে অনেক সময় দিচ্ছে বোলাররা, ব্যাটসম্যানরা। যে যার মত ব্যক্তিগত কাজ করছে। একে অপরকে সাহায্য করছে।’
মিরপুরের মাঠের আনপ্রেডিক্টেবল উইকেটের কারণে শুধু হতাশাই কাজ করে না, উইকেটের এমন আচরণের কারণে নিজেদের সেরাটা খেলে রান করাও কঠিন হয় বলে জানান মাহমুদউল্লাহ। এসব বিষয় মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুতও করছেন দলের খেলোয়াড়রা। এখন কেবল মাঠে নেমে নিজেদের ঢেলে দেয়ার অপেক্ষা।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘এ উইকেটে খেলা সবসময়ই কঠিন, উইকেট একটু স্লো। এসব উইকেটে রান করা একটু কঠিন হয়। কষ্ট করে রান করতে হবে। এখানকার উইকেট এমন না যে বল ব্যাটে আসবে আর আপনি শট খেলতে পারবেন। খুব দেখেশুনে খেলতে হবে। একেক বোলারের জন্য একেক শট খেলতে হবে, আপনার শক্তির জায়গা অনুযায়ী। এখন দেখার অপেক্ষা, আমরা নিজেরা কিভাবে নিজেদের প্রয়োগ করি।’
এসএএস/পিআর