আত্মবিশ্বাসী আরিফুলের চোখ বড় ইনিংসে
অনেকটা দিন ধরেই জাতীয় দলের সঙ্গে আছেন। কিন্তু কোনো ফরমেটেই এখনও থিতু হতে পারেননি আরিফুল হক। টুকটাক সুযোগ পাচ্ছেন, সেগুলোই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে সাদা পোশাকে অভিষেকের স্বপ্নটাও পূরণ হয়েছে এই অলরাউন্ডারের। দলের নিদারুণ ব্যর্থতার মাঝেও তার দায়িত্বশীল ব্যাটিং আলাদা করে চোখে পড়েছে সবার।
সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অভিষেকটা অবশ্য সুখকর হয়নি আরিফুলের। এমন এক টেস্টে অভিষেক, যেখানে দল দুই ইনিংসে করেছে ১৪৩ আর ১৬৯। ঘরের মাঠে তারা ম্যাচটি হেরেছেও ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে।
কিন্তু দল হারলেও আরিফুল কিন্তু অভিষেকেই আগমনী বার্তা জানিয়ে দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে দলের বিপদে অপরাজিত ৪১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩৮ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। বলও করেছেন প্রথম ইনিংসে। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে অবশ্য ৭ রান নিয়ে উইকেটের দেখা পাননি। তারপরও ওই টেস্টে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরমার ছিলেন তিনিই।
প্রথম টেস্টে নিজের এমন পারফরম্যান্স নিয়ে কি ভাবছেন আরিফুল? ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান নিজের উপর মোটামুটি সন্তুষ্টই। বললেন, ‘প্রথম টেস্ট যেহেতু, ভালোই গিয়েছে। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলাররা সহজে বাজে বল দিবে না। আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। আসলে শেষ টেস্টটা খেলে আমার চিন্তা ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।’
টেস্টের ভাবনায় সেভাবে ছিলেন না। সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতিই মূলতঃ দরজাটা প্রশস্ত করে দেয় আরিফুলের। যে ফরমেটটা দিয়ে আসলে একজন ক্রিকেটারের সামর্থ্য প্রমাণ হয়, সেই ফরমেটে খেলতে কতটা মুখিয়ে ছিলেন? আরিফুল জানালেন, আর দশজনের মতো টেস্ট খেলার স্বপ্নটা মনের মধ্যে ছিল তারও, ‘আমার আসলে স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলার। আমি চাই দীর্ঘ সময় টেস্ট দলে বা জাতীয় দলে থাকতে। আমার সব ফরম্যাটে খেলার ইচ্ছা। আমার ইচ্ছা থাকে যেই ফরম্যাটে যেভাবে খেলা দরকার সেভাবেই খেলার।’
জাতীয় দলের সাথে দীর্ঘদিন ছিলেন, দীর্ঘদিন থাকা কি চাপ সামলানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে? আরিফুল এই প্রভাবটা মানছেন। তার ভাষায়, ‘হ্যাঁ, এটা সত্যি। আসলে জাতীয় দলে না খেললেও আপনি সাথে থাকলে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। বড় দলের সাথে খেলা বা বড় বড় প্লেয়ারদের সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করা, বড় ভাইরা যখন কিছু বলে, তখন এইসব অনেক কাজে দেয়। তখন ধারণা পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা কি রকম হতে পারে। দলের সাথে থাকলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়।’
ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই হাফসেঞ্চুরি পেয়ে যেতে পারতেন। ৪১ রানে থাকার সময় অপরপ্রান্তে আবু জায়েদ রাহি রানআউট হয়ে না গেলে সেটা খুবই সম্ভব ছিল। তবে আরিফুল শুধু ওই ফিফটির লক্ষ্য নিয়েই পড়ে থাকতে চান না। তার চোখ আরও উপরে, ‘আমার লক্ষ্য আরও বড়। বাকিটা দেখা যাক। আমার ভেতরের লক্ষ্য যেন আমি পূরণ করতে পারি।’
এমএমআর/পিআর