কোচকে ‘দিওয়ালি’র উপহার দিয়েছে জিম্বাবুইয়ানরা
গত মে মাসে পেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব। আগস্টের মধ্যেই তাকে পাকাপোক্ত করে নেয় জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট বোর্ড। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার লালচাঁদ রাজপুতকে কোচ হিসেবে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্তটা যে সঠিক ছিলো তার প্রমাণ মিলল বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেই।
ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতেছে ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে। সফরকারীদের বোলিং তোপে দুই ইনিংসের কোনোটিতেই সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিক বোলাররা। সিলেট টেস্টে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে জিম্বাবুয়ে।
ওয়ানডের মতো টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেও ফেবারিটের তকমা ছিলো বাংলাদেশের গায়েই। কাগজে-কলমের সব হিসেব-নিকেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিরিজে লিড নিয়েছে জিম্বাবুয়েই। ম্যাচ শেষে জিম্বাবুয়ের কোচ জানিয়েছেন এটি মূলত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পাওয়া তার ‘দিওয়ালি’র উপহার।
ভারতীয় নাগরিক রাজপুতের জন্য ‘দিওয়ালি’ বা কালীপূজা খুব বড় একটি উৎসব। ম্যাচটি পাঁচ দিনে গড়ালে সিলেট টেস্টের পঞ্চম দিনেই পালিত হতো চলতি বছরের দিওয়ালি। তাই ম্যাচ শুরুর আগেই রাজপুত তার খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চেয়ে রেখেছিলেন দিওয়ালির উপহার। মাত্র সাড়ে তিনদিনেই ম্যাচ জিতে কোচকে যথাযথ উপহারই দিয়েছে মাসাকাদজা বাহিনী।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রাজপুত বলেন, ‘সবাই হয়তো জানেন যে আমাদের দেশে (ভারত) দিওয়ালি অনেক বড় একটি উৎসব। তাই আমি ছেলেদের বলেছিলাম যে ম্যাচের শেষ দিন এবং দিওয়ালি একই দিনে পড়েছে। তাই তাদেরকে বলেছিলাম ম্যাচটা জেতার মাধ্যমে সবচেয়ে বড় উপহারটাই যেনো দেয় আমাকে। এখন আমার বলতেই হয় যে ছেলেরা অসাধারণভাবেই সে কাজটি করেছে।’
এসময় তিনি জিম্বাবুয়ের সাম্প্রতিক খারাপ সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘লম্বা সময় ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে ভালো খেলতে পারছিল না। দলে অনেক সমস্যা ছিলো বা আছে। কিন্তু যখন আপনি জিতেন তখন সব সমস্যা একপাশে সরে যায়। এই জয়টা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ আপনি যখন জিতবেন ড্রেসিংরুমের পরিবেশও বদলে যায়। এই জয়ের রেশটা দীর্ঘদিন থাকবে এবং এই জয়ের আত্মবিশ্বাস আমরা পরের ম্যাচগুলোতেও নিয়ে যেতে পারবো।’
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে টেস্টে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। সেই দলের বিপক্ষেই তাদের ঘরের মাটিতে পাওয়া জয়টিকে বিশেষ কিছুই ভাবছেন জিম্বাবুয়ের কোচ। এছাড়াও এ জয়ের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে ১৭ বছরের জয় খরাও কাটিয়েছে রোডেশিয়ানরা।
রাজপুত বলেন, ‘অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে হারানো বিশেষ প্রাপ্তি। কারণ বড় বড় টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোও বাংলাদেশে এসে হোঁচট খেয়েছে। এই জয়টা আমাদের জন্য অনেক বড়। এই জয়ের ফলে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটও নতুনভাবে জাগরিত হবে। আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছি আমরা ঘরের বাইরেও জিততে পারি। এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। এখান থেকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
এসএএস/জেআইএম