নতুনদের সময় দিতে বললেন মাশরাফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০১৮

আনুষ্ঠানিকতা বা প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মানপ্রদর্শনপূর্বক যতোই বলা হোক না কেন যে, জিম্বাবুয়েকে সহজ দল হিসেবে ভাবছে না বাংলাদেশ দল। বাস্তব সত্য হলো, সাম্প্রতিক সময়ে যে কোনো দিনে জিম্বাবুয়ের চেয়ে ঢের এগিয়ে টাইগাররা। আফ্রিকার দেশটি যখন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে, তখন একের পর এক সাফল্যের সোপান পাড়ি দিচ্ছেন মাশরাফিরা।

তবে একই সাথে এটিও সত্য যে, যতোই পিছিয়ে থাকুক না কেন জিম্বাবুয়ে, টাইগারদের হারানোর সামর্থ্য বেশ ভালোভাবেই রয়েছে তাদের। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তারা কোনো ম্যাচই জিতবে না, এমনটা বলার কোনো অবকাশই নেই। তার উপরে আবার ইনজুরির কারণে দলের সাথে নেই টাইগারদের দুই প্রাণভোমরা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

এ দুই ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি ও প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিবেচনায় স্কোয়াড ঘোষণার পূর্বে দাবী উঠেছিল এই সুযোগে নতুন খেলোয়াড়দের পরখ করে নিতে। কেননা বিশ্বকাপের আগে এমন সুযোগ আর না-ও পাওয়া যেতে পারে। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও মানেন এটি। জানেন, বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে দলের সিনিয়রদের পাশাপাশি পারফর্ম করতে হবে জুনিয়রদেরও।

তবু জিম্বাবুয়ে সিরিজের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে একটিমাত্র নতুন মুখ, ত্রিশ বছর বয়সী ফজলে রাব্বি মাহমুদ। যার সাথে রয়েছে দীর্ঘ ১৪ বছরের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা। ফজলে রাব্বি ছাড়া আরও বেশ কিছু ক্রিকেটারের ওপর টিম ম্যানেজম্যান্টের নজর থাকলেও নতুন কাউকে ডাকা হয়নি স্কোয়াডে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা নতুন খেলোয়াড়দের পরখ করে নেয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন নেয়া হয়নি, সে ব্যাখ্যা দিয়েছেন অধিনায়ক।

শনিবার ম্যাচের আগেরদিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি জানান, বাংলাদেশের ক্রিকেট কালচারে হার মেনে নেয়ার মানসিকতা রয়েছে খুব কম মানুষেরই। যার ফলে নতুন ক্রিকেটারদের পরখ করে দেয়ার সুযোগটা নেয়ার পরে যদি দল হেরে যায়, তখন চারদিক শুরু হবে নানান কথা, সমালোচনায় ভাসানো হবে দলকে। এ কারণে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ইচ্ছা থাকলেও নিজেদের সেরা দল গোছানোর দিকেই নজর দিতে হয় আগে।

এছাড়াও যখন নতুন কোনো খেলোয়াড়কে সুযোগ দেয়া হয় তখন শুরুর ম্যাচে বা প্রথম কয়েক ম্যাচে সে খেলোয়াড় খারাপ করলে প্রশ্নের মুখে তোলা হয় দল নির্বাচন প্রক্রিয়াকেই, শুরুর আগেই সমালোচনা সইতে হয় নতুন সে খেলোয়াড়কে। এ কালচার বা অভ্যাস থেকে বেরিয়ে এসে নতুন খেলোয়াড়দের প্রতি আন্তরিক থাকার আহ্বান জানান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

নতুন খেলোয়াড়দের খেলিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘ব্যাপারটা হলো যে, আপনি বিষয়টা কিভাবে নিচ্ছেন। ইতিবাচকভাবে হয়তো আমি নতুন চারটা প্লেয়ার আছে, তাদের খেলিয়ে দিলাম। ভাবলাম যে আচ্ছা, ঠিক আছে। আমরা হারি জিতি সেটা দেখতে চাই। কিন্তু আমাদের কালচারে এটা সবাই কিভাবে নেবে সেটাও বড় ব্যাপার। কারণ হারটা আমরা খুব সহজে নিতে পারি না। এটা দল গোছানোর সময় চিন্তায় থাকে। সামনা সামনি আলোচনা না হলেও মনের মধ্যে এটা কাজ করতে থাকে। হয়তো বা অন্য জায়গায় (অন্যান্য দেশে) যেটা হয়, ওরা যাকে নেয়, তাকে সবসময় সমর্থন করে যাচ্ছে। তাকে দেখে নেয়, এবার ফলাফল যাই হোক না কেন।’

‘আমাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে কিছুটা দোলাচাল থাকে। থাকে না, অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে আমার মনে হয় কালচার একটু একটু করে বদলাচ্ছে। তাই আমি আশা করি, যাকে সুযোগ দিয়ে কেমন করে দেখতে চাই তাকে আপনারাও সুযোগ দেবেন। আমরাও সুযোগ দেব এবং সাধারণ মানুষ যেন তাদের সুযোগ দেয়, সে ঘরোয়া ক্রিকেটে যেটা করেছে সেটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে করতে পারে কি না। এ বিষয়টা এত সহজে হয় না। দেখেন ঘরোয়াতে ফজলে রাব্বি কতগুলো রান করেছে, অথচ গতকাল কিছুটা হলেও নার্ভাসনেস ছিল। তো ওকে সেট করতে হলে কিছুটা সময় দিতে হবে। সবাইকে এক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে।’

এসএএস/এমএমআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।