বাবা থাকলে সবচেয়ে খুশি হতেন : আশরাফুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৯ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৮

১৩ আগস্ট ২০১৮, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম দিককার সুপারস্টার মোহাম্মদ আশরাফুলের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের নতুন শুরুর দিন। বিপিএলে ফিক্সিং কেলেঙ্কারির কারণে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ থাকার পর চলতি মাসের ১৩ তারিখেই পুনরায় সব ধরনের ক্রিকেট খেলার অনুমতি পাচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

অর্থাৎ আর মাত্র ঘণ্টাখানেক পরই জাতীয় দলসহ যে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলতে পারবেন আশরাফুল। দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটায় যারপরনাই খুশি মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে ফেরার উপলক্ষে তার চেয়েও বেশি খুশি হতেন তার বাবা আব্দুল মতিন, এমনটাই মনে করেন আশরাফুল।

তবে নিজের ছেলের প্রত্যাবর্তন দেখার ভাগ্য হচ্ছে না আশরাফুলের বাবার। বছর দুয়েক আগে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। নিজের ফেরার উপলক্ষে বাবার কথাই স্মরণ করছেন আশরাফুল।

নিজের প্রস্তুতি ঠিক রাখতে বর্তমানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইংল্যান্ডে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন আশরাফুল। সেখান থেকেই এক ভিডিও বার্তায় নিজের ফেরা সম্পর্কে নানান কথা বলেন তিনি।

আশরাফুল বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে আজকের এই দিনটার জন্য। পাঁচটা বছর ধরে অপেক্ষা করছি কবে আসবে ১৩ই আগস্ট ২০১৮, আমি তাহলে আবার জাতীয় দলের জন্য বিবেচিত হবো, বিপিএল খেলব। এই দিনটায় আসলে আব্বা থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। আব্বা আজকে নাই, দুই বছর হচ্ছে।’

দীর্ঘ পাঁচ বছর খেলার বাইরে থাকলেও সবসময়ই নিজের ফেরা সম্পর্কে সবসময়ই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বলে জানান আশরাফুল, ‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি যেনো ভালোভাবে কামব্যাক করতে পারি। আমার ভক্তদের জন্য হলেও যেন আমি আবার ফিরে আসতে পারি সেটাই আমার লক্ষ্য। পাঁচ বছরে আমার কখনোই মনে হয়নি যে আমি ফিরতে পারব না। এই আত্মবিশ্বাসটা আমার মধ্যে ছিল। সবসময় মনে হয়েছে যে আমি আবার ফিরব।’

গত ডিপিএলে এক মৌসুমেই হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরিসহ মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েছেন আশরাফুল। আসন্ন ঘরোয়া মৌসুমেও ভালো ক্রিকেট খেলে নিজের জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে চার ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

‘গতবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমটা ভালো খেলেছি। পাঁচটা সেঞ্চুরি ছিল। তো এবার প্রথম শ্রেণির মৌসুম শুরু করব। সেখানে যদি আমি ভালো খেলতে পারি তাহলে আমার জীবনের যে স্বপ্ন, আমার যে লক্ষ্য বাংলাদেশ দলের জার্সি আবার গায়ে দেয়ার সেই স্বপ্ন ইনশাআল্লাহ পূরণ হবে।’

নিষেধাজ্ঞার পাঁচ বছর সময়টা তার জন্য বেশ কঠিন ছিল বলেই জানান আশরাফুল। তবে সেসময় পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে যে সাহস ও সমর্থন পেয়েছেন অকপটে তিনি সেটি জানিয়ে দেন, ‘অবশ্যই এই পাঁচটা বছর আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। বিশেষ করে প্রথম দিক দিয়ে, যখন আমি খেলতে পারছিলাম না। সেই সময়টা অনেক বেশি কঠিন ছিল আমার জন্য। এখন আল্লাহ্‌র রহমতে ভালো লাগছে যে সব বাঁধা উঠে গিয়েছে। তবে এই সময়টায় আমার পরিবারের সদস্যরা, আমার বন্ধুবান্ধব আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে।’

আশরাফুলের জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন পূরণ হলেও প্রশ্ন থেকে যায় জাতীয় দলের বর্তমান পরিবেশের সাথে কতটা খাপ খাওয়াতে পারবেন তিনি। দীর্ঘ পাঁচ বছরে জাতীয় দলের অবস্থা পাল্টেছে অনেক, বদল হয়েছে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও। তবু নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই দলের বাকি খেলোয়াড়দের সাথে আবারো সুসম্পর্ক স্থাপনের স্বপ্ন দেখছেন আশরাফুল।

‘এছাড়া জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছে, ভরসা দিয়েছে। যখনই দেখা হয়েছে সবাই স্বাভাবিকভাবেই কথা বলেছে। দলের সাথে যে দূরত্বটা গত দুই বছরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে অনেকটাই মিটিয়ে নিয়েছি। সামনের মৌসুমগুলোয় ভালো খেললে বাকি থাকা দূরত্বটাও শেষ হয়ে যাবে আশা করি। আমার নিষেধাজ্ঞার সময়টায় বিসিবি সভাপতি থেকে শুরু করে সবাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তবে আবার যদি বাংলাদেশ দলে ডাক পান তবে দলকে সার্ভিস দেয়ার মতো অনেক জায়গা বলেই মনে করেন আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা অবশ্যই অনেক কঠিন হবে। তবে আমি যদি পারফর্ম করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ দলে অনেক জায়গা আছে যেখানে আমি সার্ভিস দিতে পারবো আমার বিশ্বাস।’

এসএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।