ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন টিম পারফরম্যান্স

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৮

মাশরাফির যোগ্য ও গতিশীল নেতৃত্বে ওয়ানডেতে ছকবাঁধা কৌশল এঁটে তার সফল ও স্বার্থক বাস্তব প্রয়োগ ঘটানোর নজির আছে প্রচুর। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে জিততে কি কি করতে হবে? কার বিপক্ষে, কখন কোন কৌশল অবলম্বন করলে সাফল্য ধরা দেবে? তা বেশ ভালই জানা টিম বাংলাদেশের।

এজন্যই ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও মাশরাফিরা অনেক বেশি উজ্জ্বল; কিন্তু ২০ ওভারের ফরম্যাটে সেই তারাই তুলনামূলক অনেক নিষ্পৃহ। আড়ষ্ঠ। অনুজ্জ্বল এবং করনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় কাজ করতে তুলনামূলক অদক্ষ।

কিন্তু রোববার কাকডাকা ভোরে সেই আড়ষ্টতা, নিষ্পৃহতা কাটিয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল তামিম-সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধের সম্ভাব্য করণীয় কাজগুলোও বেশ ভালভাবেই হয়েছে সম্পাদিত।

এক তামিম-সাকিব জুটিতেই গড়ে উঠেছে সাফল্যের ভিত। দু’জনার আক্রমণাত্মক উইলোবাজিতে এলোমেলো ক্যারিবীয় বোলিং। ওই দুই বাঁ-হাতির ব্যাট থেকে দলের মোট রানের (১৭১) প্রায় ৭০ ভাগ (১৩৪) আসায় একটা লড়াকু স্কোর হয়েছে তৈরি। বোলাররা সেটাকেই যথেষ্ঠ বলে প্রমাণ দিয়েছেন।

ব্যাট হাতে তামিমের সাথে বড় ভূমিকা রাখা অধিনায়ক সাকিব বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন (৪ ওভারে ২/১৯)। ফলে বাকি বোলাররা ভাল করতে ও কার্যকর অবদান রাখতে অনেক বেশি সাহস আর অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ (৪ ওভারে ৩/৫০) আর বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুও (৪ ওভারে ৩/২৮) দারুণ বল করেছেন। অন্য দুই পেসার রুবেল হোসেন (৪ ওভারে ১/৩৫) এবং অফ স্পিনার মিরাজের বদলে জায়গা পাওয়া আবু হায়দার রনিও (৪ ওভারে উইকেট না পেলেও মাত্র ২৬ রান দিয়েছেন) সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। তাদের সবার চেষ্টা ও কার্যকর অবদানে বোলিং ইউনিটটা দারুণভাবে জ্বলে উঠেছে।

team-bd

সে তুলনায় ব্যাটিংটা অনেক বেশি তামিম ও সাকিবময়। লিটন দাস, সৌম্য সরকার আর মুশফিকুর রহীম কিছু করতে পারেননি। তামিম আর আর সাকিব একটু বেশি হাত খুলে বেশি স্ট্রাইকরেটে ‘বিগ ফিফটি’ হাঁকিয়ে বাকিদের অনুজ্জ্বলতা ও ঘাটতি পুষিয়ে দেন। আর তাতেই ফ্লোরিডায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ১২ রানের স্মরণীয় জয়।

তবে ভুলে গেলে চলবে না, প্রতিদিন তো আর তামিম-সাকিব ভাল খেলবেন না। সবদিন তাদের ব্যাট কথা বলবে না। দলের মোট রানের বড় অংশ তাদের ব্যাট থেকে আসবে না। সবদিন সাকিব ব্যাট ও বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্বও দিবেন না।

বাকিদেরও অনেক করণীয় আছে। সোমবার বাকিদের জ্বলে ওঠার ওপরই আসলে নির্ভর করছে বাংলাদেশের সাফল্য-ব্যর্থতা। রোববার লিটন দাস (১), মুশফিকুর রহীম (৪) ও সৌম্য (১৪) তিনজনে মিলে করেছে মাত্র ১৯ রান। কাল সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে এত অনুজ্জ্বল ও কম রান করলে চলবে না। তামিমের সাথে লিটন-সৌম্যর একজনকে জ্বলে উঠে অন্তত ১৩০-১৪০ কিংবা তার বেশি স্ট্রাইকরেটে ৩০-৪০ রানের একটি ভাল ইনিংস চাই’ই চাই।

আর মিডল অর্ডারে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর যে কারও বড় ইনিংস খেলাও জরুরি। তাহলে ঠিক লড়াকু স্কোর গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে বোলিং ইউনিটটা যদি রোববারের ম্যাচের মত থাকে- তাহলে ব্র্যাথওয়েটের দলকে হারানো মোটেই অসম্ভব ও কঠিন নয়। আর সোমবার জেতা মানেই যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের অবিস্মরণীয় কৃতিত্ব হবে অর্জিত। বলার অপেক্ষা রাখে না, যা নেই এখনো পর্যন্ত।

২০০৯ সালে টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও এই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ক্যারিবীয়দের সাথে পারেনি টাইগাররা। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেবার বোর্ডের সাথে দ্বন্দ্ব ও বিবাদের কারণে তারকারা কেউ ছিলেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের মোড়কে আসলে খেলেছিল ক্যারিবীয় ‘এ’ দল। এই আগস্ট মাসের ২ তারিখে সেন্ট কিটসের বেসেতেরেতে সেই ভাঙ্গাচোরা ওয়েষ্ট ইন্ডিজের কাছেও ৫ উইকেটে হেরে ফিরে এসেছিল সাকিবের দল। এবার ব্র্যাথওয়েটের ক্যারিবীয় বাহিনীকে হারিয়ে কি সে দায় পূরণ করতে পারবে সাকিব বাহিনী?

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।