‘ক্রিকেটারদের টেকনিকে নয়, মেধা-সামর্থ্যের প্রয়োগে সমস্যা’

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৫ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৮

এমন নয় টাইগারদের আগে কখনো দুই টেস্টে পর পর হার বা হোয়াইটওয়াশ হবার নজির ছিল না। ছিল। বাংলাদেশ আগেও টেস্টে অনেকবার চরম নাস্তানাবুদ হয়েছে। এই তো সাত-আট মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজে চরম ভাবে পর্যুদস্ত হয়েছে টাইগাররা।

কিন্তু এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে কেমার রোচ, শেনন গ্যাব্রিয়েল আর জেসন হোল্ডারের ফাস্টবোলিং তোপের মুখে ব্যাটিংয়ের অবস্থা যেন একটু বেশি খারাপ। দুই টেস্টে টানা চার ইনিংসে একবারের জন্য ২০০ রান করা সম্ভব হয়নি।

কেন এমন খারাপ অবস্থা? ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদির মত বিশ্বমানের ফাস্টবোলারের বিপক্ষেও পারফরম্যান্স এত খারাপ ছিল না। প্রেটিয়া ফাস্টবোলিংয়ের মুখেও টাইগারদের এমন দুর্বল ও অসহায় মনে হয়নি। যতটা মনে হয়েছে এন্টিগা ও জ্যামাইকায়। কেন এ হতশ্রী অবস্থা? ফুটবল নিয়ে সবাই মেতে থাকলেও এ প্রশ্ন কিন্তু উঠেছে।

পারফরম্যান্স ও ফল নিয়ে ভক্ত-সমর্থক মহলে রাজ্যের হতাশা। কেন কি কারনে এমন অবস্থা? তবে কি ক্রিকেটে সত্যিকার অবনমন ঘটেছে? নাকি কন্ডিশনের সাথে এপ্রোচ-এপ্লিকেশনটা যথাযথ হয়নি বলেই এতটা খারাপ অবস্থা? যে যার মতো করে করে এ ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

কারো কারো মত, ঘরোয়া ক্রিকেটের মান কমে গেছে। জাতীয় লিগ, এনসিএল আর প্রিমিয়ার লিগের অবনমন ঘটেছে। ঐ সব লিগে নির্জীব, মরা, প্রানহীন শতভাগ ব্যাটিং সহায় উইকেটে বেশি খেলাই এমন করুণ ব্যাটিং বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। ঘরের মাটিতে মন্থর গতি, নিচু বাউন্স ও মুভমেন্টে মরা পিচে খেলতে খেলতে অভ্যাস হয়ে গেছে। ঐ সব নির্জীব ও মরা পিচে টেকনিক কম হলেও চলে। ফুটওয়ার্কও তেমন দরকার পড়ে না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও খেলা যায়।

সেরকম পিচে দুর্বল আর কম গতির এবং মুভমেন্টবিহীন বোলারদের অবলীলায় খেলে এসে এন্টিগা ও জ্যামাইকার দ্রুত গতি, বাড়তি বাউন্স ও সুইংয়ের উইকেটে খেলতে নেমেই যত বিপত্তি ঘটেছে। এন্টিগার সবুজ ঘাসের পিচ আর জ্যামাইকার সজীব-সতেজ পিচে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে আসা বল মুখ, বুক ও মাথা সমান উচ্চতায় উঠে আসায় বাড়তি ও বিব্রতকর বাউন্স এবং ন্যাচারাল মুভমেন্টে দিশেহারা টাইগাররা।

আবার কেউ কেউ দুর্বল টেকনিক, ফুটওয়ার্ক আর সাহস ও মানসিক দৃঢ়তার অভাবের কথাও বলছেন। অনেকের মত, ফাস্ট বাউন্সি ও সুইংযুক্ত উইকেটে প্রতিপক্ষের গতি বোলিং সামলাতে এবং সাফল্যের সাথে মোকাবেলায় যতটা সাহস ও মানসিক দৃঢ়তা দরকার, সেটার ঘাটতি আছে টাইগারদের। এছাড়া টেকনিক, বিশেষ করে ফুটওয়ার্কেও ঘাটতি আছে। তাই এমন করুণ পরিণতি।

তবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল ঐ মতালম্বীদের সাথে একমত নন। বাংলাদেশকে প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেয়া এবং টেস্ট অভিষেকের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল কিছুতেই মানতে রাজি নন যে- তামিম, লিটন, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের টেকনিক খারাপ।

বুলবুলের উপলব্ধি অন্যরকম। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটারদের মেধা কম, টেকনিক খারাপ তথা স্কিলে ঘাটতি আছে, আমি তা মনে করি না। টেকনিক ঠিকই আছে। বড় মঞ্চে খেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্যও আছে। সামর্থ্য নিয়ে আমার কোন প্রশ্ন নেই। ওগুলো ঠিকই আছে। আমার মনে হয় আসল সমস্যার জায়গা হলো এপ্লিকেশন। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে এপ্লিকেশনটাই ঠিক হয়নি। আমার ধারণা, আমাদের ক্রিকেটাররা নিজের শক্তি, সামর্থ্য ও মেধার সত্যিকার প্রয়োগ ঘটাতে পারেননি। ক্যারিবীয় ফাস্টবোলারদের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটসম্যানরা জায়গামত নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি।’

এআরবি/এমএমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।