বাংলাদেশের নতুন কোচ স্টিভ রোডসের পারিশ্রমিক কত?

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ০৪ জুলাই ২০১৮

তিনি কোনো হাই প্রোফাইল কোচ নন। বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগে কোনো সু-প্রতিষ্ঠিত টেস্ট খেলুড়ে দেশের মূল দলের তো নয়ই, ‘এ’ কিংবা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচও ছিলেন না। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১টি টেস্ট আর ৯টি ওয়ানডে খেলা স্টিভ রোডস বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগে ছিলেন ইংলিশ কাউন্টি দল ওস্টারশায়ারের কোচ।

স্বল্প পরিচিতি। নাম-ডাক কম। এক কথায় লো প্রোফাইল। এই কোচকে মাসিক কত টাকা পারিশ্রমিকে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? তার বেতন বা পারিশ্রমিক যাই বলা হোক না কেন, তা কি আগের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চেয়ে কম, নাকি বেশি? বেতন ছাড়া আর কি কি আনুসাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন তিনি? তার পিছনে সব মিলিয়ে মাসে বিসিবির কত অর্থ খরচ হবে?

বিশ্বকাপ ফুটবলের ডামাঢোল না থাকলে এতদিনের এসব তথ্য জানতে রাজ্যের কৌতূহলী প্রশ্নের উদ্রেক ঘটতো। ক্রিকেট পাড়ায় রীতিমতো গুঞ্জনে মুখর হয়ে যেত। তারপরও আসুন জেনে নেয়া যাক, আসলে কত টাকায় চুক্তিভুক্ত হয়েছেন স্টিভ রোডস?

এই ইংলিশ কোচের মূল পারিশ্রমিক ১৭ থেকে ১৮ হাজার মার্কিন ডলার। ১৭ থেকে ১৮ হাজার মার্কিন ডলার বলা হবার কারণ হলো, বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের অতি নির্ভরযোগ্যসূত্র ঠিক নিশ্চিত করতে পারেনি আসলে তার বেতন কত? একটি সূত্রর দাবি, রোডসের মাসিক বেতন ১৭ হাজার মার্কিন ডলার। আবার আরেকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, নতুন কোচ মাসে ১৮ হাজার ডলার বেতনে চুক্তিভুক্ত হয়েছেন। সেটাই তার মূল বেতন।

তবে আগের কোচরা যেমন আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন, তাকেও তা দেয়া হবে। তিনিও সে সব আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা পাবেন। যেন মূল বেতনের বাইরে তার জন্য আকর্ষণীয় বোনাস আছে। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ বা ম্যাচ জেতার একটা বোনাস আছে। পাশাপাশি বছর না ঘুরতেই ইনক্রিমেন্টও জুটবে। তা যোগ হয়ে বেতন বাড়বে অন্তত ১৫ থেকে ২০ ভাগ। এছাড়া মূল বেতনের সাথে বাড়ি-গাড়ি পাবেন স্টিভ রোডস।

বনানী, গুলশান কিংবা ডিওএইচএসের মতো রাজধানী ঢাকার অভিজাততম এলাকায় অন্তত ২০০০ স্কয়ার ফিটের সুসজ্জিত ও অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট দেয়া হবে তাকে। সাথে সার্বক্ষণিকভাবে গাড়ি পাবেন এ ইংলিশ। একজন ড্রাইভারও ঠিক করে দেয়া হবে। এছাড়া বছরে অন্তত দুটি রিটার্ন টিকিট থাকবে তার জন্য। টিকিট তিনটিও হতে পারে।

মোটকথা সব মিলে, তার পিছনে বছরে সর্বোচ্চ ২২ থেকে ২৩ হাজার ডলার গুণতে হবে বিসিবিকে। প্রাথমিক অবস্থায় তা কমে ২১/২২ হাজার ডলারও হতে পারে। তা যাই হোক, এটা সত্য যে, স্টিভ রোডসের বেতন ভাতা ও আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে গিয়ে বিসিবির আগের চেয়ে, হাথুরুসিংহের চেয়ে কম টাকা খরচ হবে এবং তার পরিমাণ কম নয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় অন্তত পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা কম লাগবে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, ১৭ হাজার মার্কিন ডলারে কাজ শুরু করলেও হাথুরুসিংহে চার বছরের মাথায় গিয়ে অন্তত ২৫ হাজার ডলার মাসিক বেতন পেতেন। এর বাইরে ফ্ল্যাট, গাড়ি ছাড়াও বছরে অস্ট্রেলিয়া-ঢাকার তিন থেকে চারটি রিটার্ন টিকিটও নিতেন।

এর বাইরে বাড়ি-গাড়িসহ সব মিলে হাথুরুর পিছনে শেষ এক বছর বিসিবিকে গড়পড়তা ২৫ থেকে ২৭/২৮ হাজার মার্কিন ডলার গুণতে হতো। সেখানে স্টিভ রোডসের পিছনে আপাতত ২১/২২ হাজার ডলার খরচ করতে হবে।

তবে একটা কথা আছে। নতুন কোচের বেতন ভাতা ও আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা বাড়া, না বাড়া নির্ভর করছে জাতীয় দলের পারফরমেন্স ও সাফল্যের ওপর। ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি সাফল্য ধরা দিলে শুধু বোনাসই নয়, বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বেড়ে যায়। এখন বা আপাতত যে অর্থে কাজ শুরু করেছেন স্টিভ রোডস, এক বছর পর তার চার ভাগের এক বেড়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।